পত্রিকার পাতা
ঢাকাবৃহস্পতিবার , ২রা অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
  1. অর্থনীতি
  2. আইন-আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. উদ্যোক্তা
  5. কর্পোরেট
  6. কৃষি ও প্রকৃতি
  7. ক্যাম্পাস-ক্যারিয়ার
  8. খেলাধুলা
  9. চাকরির খবর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. তারুণ্য
  13. ধর্ম
  14. পর্যটন
  15. প্রবাস
আজকের সর্বশেষ সব খবর

দ্বিতীয় মেয়াদে আইজিপি হওয়ার আগ্রহ ছিল না: আইজিপি মামুন

Md Abu Bakar Siddique
সেপ্টেম্বর ৬, ২০২৫ ১১:১২ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

গত বছরের ৫ জুলাই এক প্রজ্ঞাপনে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) হিসেবে চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের মেয়াদ দ্বিতীয়বারের মতো বাড়ানো হয়েছিল, এতে তার আগ্রহ ছিল না। তিনি এই অনাগ্রহের কথা তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবকে জানিয়েছিলেন।বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টম্বের) বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ মামলার পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী (স্টেট ডিফেন্স) আমির হোসেনের জেরায় সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন ওইসব কথা জানান। চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন ইতোমধ্যে অপরাধের দায় স্বীকার করে রাজসাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দিয়েছেন। তিনি রাজসাক্ষীর মর্যাদায় কারাগারে আছেন। গতকাল সকালে তাকে কারাগার থেকে এনে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে জেরা শুরু করেন আইনজীবী মো. আমির হোসেন। মাঝে নামাজের জন্য এক ঘণ্টা বিরতি দেওয়া হয়। জেরা কার্যক্রম চলে প্রায় ৫টা পর্যন্ত। পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য আগামী ৮ ও ৯ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য রেখেছেন ট্রাইব্যুনাল। গতকালের জেরায় চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, ‘পুলিশে গোপালগঞ্জকেন্দ্রিক দ্বন্দ্বের কারণে দ্বিতীয়বারও আমাকে আইজিপি পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল।’

জেরায় বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে মামুন বলেন, ‘২০১৮ সালের নির্বাচনের সময় আমি ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হিসেবে কর্মরত ছিলাম। তৎকালীন আইজিপি জাবেদ পাটোয়ারী রাতের বেলায় ব্যালট বাক্সে প্রায় ৫০%-এর মতো ভোট রাখার পরামর্শ সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দিয়েছেন বলে শুনেছি। মাঠপর্যায়ে সরকারের পক্ষ থেকে রাতে ব্যালট বাক্সে ভোট দেওয়ার ব্যাপারে নির্দেশনা পাঠানো হয়। রাজনৈতিক নেতাদের সহযোগিতা ও উদ্যোগে জেলা প্রশাসন, ডিসি, ইউএনও, এসিল্যান্ড, এসপি ও থানার ওসিরা মুখ্য ভূমিকা পালন করেন। পরবর্তী সময়ে পুলিশের বিপিএম ও পিপিএম পদক নির্বাচনের ক্ষেত্রে নির্বাচনসহ রাজনৈতিক ক্ষেত্রে সক্রিয় পুলিশ অফিসারদের বিবেচনা করা হতো। এক্ষেত্রে সঠিকভাবে পেশাদারত্ব দেখানো হয়নি। তবে আমিও ওই নির্বাচনের আগে-পরে ৩টি বিপিএম ও পিপিএম পদক পেয়েছিলাম। কিন্তু আমাকে এই পদকগুলো কেন দেওয়া হয়েছিল, তা আমি এই মুহূর্তে নিশ্চিত করে বলতে পারব না। ২০১৮ সালের পর পুলিশ বাহিনীতে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ ও প্রভাব বেশি বৃদ্ধি পায়। কতিপয় পুলিশ অফিসার প্রভাবশালী পুলিশ অফিসার হিসেবে স্বীকৃতি পান। তারা বাহিনীর চেইন অব কমান্ড ভঙ্গ করে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাসায় প্রতি রাতে মিটিং করতেন। আমি সেসব মিটিংয়ে উপস্থিত থাকতাম না। আমি মিটিংয়ে অংশ নেওয়া অফিসারদের নিষেধ করতাম, যেন পরবর্তী সময়ে এসব মিটিংয়ে তারা আর না যান। কিন্তু তারা আমার কথা শুনতেন না। সততা ও দক্ষতার কারণে আইজিপি হিসেবে আমাকে নিয়োগ প্রদান করেন। পুলিশ বাহিনীর সুনাম ও অফিসারদের মধ্যে প্রকাশ্যে দ্বন্দ্ব আড়ালে রাখার স্বার্থে আমাকে পরবর্তী সময়ে দুইবার চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হয়। প্রথম দফায় আমি রাজি থাকলেও দ্বিতীয়বার আমি বলেছিলাম, আমার পরের ব্যাচ থেকে আইজিপি নিয়োগ দিতে। আমি রাজি ছিলাম না। আমি প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবের কাছে মৌখিকভাবে এই অনাগ্রহের কথা জানাই। কিন্তু গ্রুপিং আড়ালে রাখতে আমাকে দ্বিতীয় বারেও এক্সটেনশন (বর্ধিত) দেওয়া হয়।’

জেরায় আমির হোসেন প্রশ্ন করেন, ‘গোপালগঞ্জকেন্দ্রিক গ্রুপিংয়ের কারণে আপনাকে (চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন) আইজিপি হিসেবে এক্সটেনশন (মেয়াদ বৃদ্ধি) দেওয়ার কথা আপনি জবানবন্দিতে উল্লেখ করেছেন, যা অসত্য।’ উত্তরে চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, ‘জবানবন্দিতে আমার সব বক্তব্য সত্য।’ তখন আমির হোসেন প্রশ্ন করেন, ‘গোপালগঞ্জকেন্দ্রিক গ্রুপিংয়ের জন্য নয়, আপনি তদবির করে নিজের স্বার্থে এক্সটেনশন নিয়েছেন।’ উত্তরে চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, ‘এ কথা সত্য নয়।’ আমির হোসেন বলেন, ‘এক্সটেনশন নেওয়ার সময় ‘না’ করেছেন?’ উত্তরে চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, ‘প্রথম এক্সটেনশনে রাজি হয়েছিলাম। তবে দ্বিতীয়বার এক্সটেনশনের সময় আগ্রহী ছিলাম না।’ আমির হোসেন প্রশ্ন করেন, ‘আপনি যে আগ্রহী ছিলেন না, এ কথা কাকে বলেছেন?’ উত্তরে চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, ‘আমি প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবকে আমার অনাগ্রহের কথা মৌখিকভাবে জানিয়েছিলাম।’

আমির হোসেন বলেন, ‘এ কথা (মুখ্য সচিবকে জানানো) আপনি মিথ্যা বললেন।’ চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, ‘সত্য বলছি।’

আমির হোসেন প্রশ্ন করেন, ‘যখন র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) টিএফআই সেলে ব্যারিস্টার আরমানকে আটক রাখা হয়েছিল, তখন কি কোনো ব্যবস্থা নিয়েছিলেন।’ মামুন বলেন, ‘আমি র‌্যাবের মহাপরিচালক থাকার সময় টাস্কফোর্স ইন্টারোগেশন বা টিএফআই সেলে বন্দি থাকা ব্যারিস্টার আরমানকে মুক্ত করার চেষ্টা করেছিলাম। তবে কোনো ব্যবস্থা করতে পারিনি।’

বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত জেরা কার্যক্রম চলে। রাজসাক্ষী মামুনের ক্ষমা বিষয়ে সিদ্ধান্ত ট্রাইব্যুনালের: একপর্যায়ে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন প্রসিকিউশনকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘দোষ স্বীকার করলেই অপরাধ থেকে রেহাই পাওয়া যায় না।’ এ বিষয়ে প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম বলেন, ‘রাজসাক্ষী চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন তার অপরাধ থেকে ক্ষমা পাবেন কিনা, সে সিদ্ধান্ত নেবেন ট্রাইব্যুনাল।’

জেরা কার্যক্রমের বিরতির সময় ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের প্রশ্নে উত্তরে আমির হোসেন বলেন, ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল কোনো অপরাধ করেছেন বা তারা কোনো হত্যার সঙ্গে জড়িত ছিলেন, এমন কথা তো আমি বলিনি। আমার কথা হলো উনি (মামুন) দোষ স্বীকার করেছেন যে, তিনি হত্যার সঙ্গে জড়িত। তিনি সব অপরাধের সঙ্গে জড়িত সেটা স্বীকার করেছেন। যেহেতু তিনি স্বীকার করেছেন, সেহেতু তিনি অপরাধের দায় থেকে নিষ্কৃতি পেতে পারেন না। আমার বক্তব্য হলো, আমার আসামিদ্বয় (শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামাল) কোনো অপরাধ করেননি, তারা কোনো হত্যার সঙ্গে জড়িতও ছিলেন না এবং তারা কোনো অপরাধের নির্দেশও দেননি। মিজানুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘তিনি (মামুন) তার জবানবন্দিতে বলেছেন, ওই সময় তিনি কোনো ব্যবস্থা নেননি। তার কারণে তার অধীনস্তরা অপরাধ সংঘটিত করেছেন, এসবের দায় তার। দায় যখন তিনি স্বীকার করেছেন, এই প্রশ্নটা অবান্তর। দায় স্বীকার করলে তাকে শাস্তি দেওয়া যাবে কিনা, সেই ক্ষেত্রে আগে বলা হয়েছে, এখনো বলছি, তাকে শাস্তি দেবেন কি দেবেন না, সেটা ট্রাইব্যুনাল ঠিক করবেন।’

উল্লেখ্য, চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন ২০২২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর আইজিপির দায়িত্ব নেন। চাকরির স্বাভাবিক মেয়াদ অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ১১ জানুয়ারি তার অবসরে যাওয়ার কথা ছিল। ২০২৩ সালের ১২ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ১১ জুলাই পর্যন্ত তাকে চুক্তিভিত্তিক আইজিপি নিয়োগ দেয় তৎকালীন সরকার। গত বছরের জুলাই মাসে তার মেয়াদ এক বছর বাড়ানো হয়েছিল।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।