X

আইপিএলের মেগা নিলাম কবে-কোথায়? জানুন সব খুঁটিনাটি

প্রায় প্রতি বছরই ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) শুরুর আগে নিলাম অনুষ্ঠিত হয়। তিন বছর পরপর হয় মেগা নিলাম (IPL Mega Auction 2025)। যা নিয়ে আকর্ষণ ও আগ্রহের বিন্দুমাত্র কমতি নেই। ২০২৫ আইপিএল শুরুর আগে আগামী ২৪–২৫ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে মেগা নিলাম। ১০ ফ্র্যাঞ্চাইজির এই টুর্নামেন্টে সবমিলিয়ে মোট ৫৭৪ জন ক্রিকেটার বিক্রি হওয়ার অপেক্ষায় আছেন। এর মধ্যে দল পাবেন সর্বোচ্চ ২০৪ ক্রিকেটার।

মেগা নিলামে বড় পরিসরে খেলোয়াড় বিকিকিনি চলে বলে অনুষ্ঠানটি হবে দুই দিন ব্যাপী। আসন্ন আইপিএলের মেগা নিলাম হবে সৌদি আরবের জেদ্দায়। এই নিলাম নিয়ে ক্রিকেট সংশ্লিষ্টদের আগ্রহ কতটা বেশি সেটি ড্যানিয়েল ভেট্টরির ঘটনাতেই টের পাওয়া যায়। নিলাম চলাকালে ভারতের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়ার বর্ডার-গাভাস্কার ট্রফি চললেও, এই অজি বোলিং কোচ থাকবেন জেদ্দায়। একইভাবে রিকি পন্টিং ও জাস্টিন ল্যাঙ্গাররাও সেখানেই উপস্থিত থাকবেন।

নিলামে উঠবেন যারা
এবারের মেগা নিলামের আগে দলগুলোকে সর্বোচ্চ ছয়জন পুরোনো খেলোয়াড় ধরে রাখার নিয়ম করা হয়। সবমিলিয়ে দলগুলো সর্বোচ্চ ২৫ ও সর্বনিম্ন ১৮ জনের স্কোয়াড তৈরি করতে পারবে। যার জন্য প্রথমে নিবন্ধন করেছিলেন ১৫৭৪ জন খেলোয়াড়। তবে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর আগ্রহের ভিত্তিতে শেষ পর্যন্ত ৫৭৪ জন খেলোয়াড় নিলামে জায়গা পেয়েছেন। এর মধ্যে ৩৬৬ জন ভারতীয়, ২০৯ জন বিদেশি। ভারতীয়দের মধ্যে ৪৮ জন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলেছেন (ক্যাপড) এবং এখনও অভিষেক হয়নি ৩১৮ জনের।

অন্যদিকে, ২০৯ জন বিদেশি ক্রিকেটারের মধ্যে অভিষেক হয়নি ১২ জনের। নিলামে ভারতের বাইরে সবচেয়ে বেশি খেলোয়াড় ইংল্যান্ডের ৩৮ জন। এ ছাড়া অস্ট্রেলিয়ার ৩৭, দক্ষিণ আফ্রিকার ৩১, নিউজিল্যান্ডের ২৪, ওয়েস্ট ইন্ডিজের ২২, শ্রীলঙ্কার ১৯, আফগানিস্তানের ১৮, বাংলাদেশের ১২, জিম্বাবুয়ের ৩, আয়ারল্যান্ড ও যুক্তরাষ্ট্রের ২ জন করে এবং স্কটল্যান্ডের ১ জন আছেন।

নিলাম ডাকা হবে যেভাবে
নিলামের ‍শুরুতে ডাকা হবে মার্কি খেলোয়াড়দের। দলগুলোর আগ্রহের ভিত্তিতে সবচেয়ে কাঙ্ক্ষিত খেলোয়াড়দের এই শ্রেণিতে অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। নিলামে দুই সেটে থাকবেন মার্কি খেলোয়াড়রা, প্রতি সেটে ৬ জন করে। এরপর পর্যায়ক্রমে ডাকা হবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হওয়া ব্যাটসম্যান, অলরাউন্ডার, উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান, ফাস্ট বোলার, স্পিনার– এসব ক্যাটাগরিতে।

নিলামের তালিকায় থাকা আনক্যাপড (অনভিষিক্ত) খেলোয়াড়দেরও একইভাবে ক্যাটাগরির ভিত্তিতে ডাকা হবে। পরে ৫৭৪ জনের নিলাম শেষ হলে দলগুলো অবিক্রীত খেলোয়াড়দের মধ্য থেকে কাঙ্ক্ষিত খেলোয়াড়দের একটা তালিকা দেবে। সেই তালিকায় থাকা খেলোয়াড়দের আবার নিলামে তোলা হবে।

কোন দলের হাতে কত টাকা আছে
প্রতিটি দল সর্বোচ্চ ১২০ কোটি ভারতীয় রুপি খরচ করতে পারবে। তবে মেগা নিলামে তাদের হাতে সেই পুরো অর্থ থাকছে না। কারণ ইতোমধ্যে রিটেনশনের মাধ্যমে ১০টি দল ৪৬ জন ক্রিকেটারকে দলে নিয়েছে। ফলে বাকি থাকা অর্থই কেবল তারা নিলামে খরচ করার সুযোগ পাচ্ছে। রিটেনশনে সর্বনিম্ন দুজন ক্রিকেটারকে ধরে রাখা পাঞ্জাব কিংসের হাতেই স্বাভাবিকভাবে বেশি (১১০.৫ কোটি রুপি) টাকা রয়েছে।

এ ছাড়া রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর হাতে ৮৩ কোটি রুপি, দিল্লি ক্যাপিটালসের ৭৩ কোটি, গুজরাট টাইটান্সের ৬৯ কোটি, লখনৌ সুপার জায়ান্টসের ৬৯ কোটি, চেন্নাই সুপার কিংসের ৫৫ কোটি, কলকাতা নাইট রাইডার্স ৫১ কোটি, মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের ৪৫ কোটি, সানরাইজার্স হায়দরাবাদের ৪৫ এবং সবচেয়ে কম ৪১ কোটি রুপি রয়েছে রাজস্থান রয়্যালসের হাতে।

নিলামের আগেই দল পেলেন যেসব ক্রিকেটার
কলকাতা নাইট রাইডার্স : রিংকু সিং (১৩ কোটি), বরুণ চক্রবর্তী (১২ কোটি), সুনীল নারিন (১২ কোটি), আন্দ্রে রাসেল (১২ কোটি), হার্ষিত রানা (৪ কোটি), রমনদীপ সিং (৪ কোটি)।

রাজস্থান রয়্যালস : সঞ্জু স্যামসন (১৮ কোটি), যশস্বী জয়সওয়াল (১৮ কোটি), রিয়ান পরাগ (১৪ কোটি), ধ্রুব জুরেল (১৪ কোটি), শিমরন হেটমায়ার (১১ কোটি), সন্দীপ শর্মা (৪ কোটি)।

সানরাইজার্স হায়দরাবাদ : প্যাট কামিন্স (১৮ কোটি), অভিষেক শর্মা (১৪ কোটি), নীতিশ কুমার রেড্ডি (৬ কোটি), হেইনরিখ ক্লাসেন (২৩ কোটি), ট্রাভিস হেড (১৪ কোটি)।

মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স : জাসপ্রীত বুমরাহ (১৮ কোটি), সূর্যকুমার যাদব (১৬.৩৫), হার্দিক পান্ডিয়া (১৬.৩৫), রোহিত শর্মা (১৬.৩০), তিলক ভার্মা (৮ কোটি)।

চেন্নাই সুপার কিংস : রুতুরাজ গায়কোয়াড় (১৮ কোটি), মাথিশা পাথিরানা (১৩ কোটি), শিবাম দুবে (১২ কোটি), রবীন্দ্র জাদেজা (১৮ কোটি), মহেন্দ্র সিং ধোনি (৪ কোটি)।

গুজরাট টাইটান্স : রশিদ খান (১৮ কোটি), শুভমান গিল (১৬.৫ কোটি), সাই সুদর্শন (৮.৫ কোটি), রাহুল তেওয়াতিয়া (৪ কোটি), শাহরুখ খান (৪ কোটি)।

লখনৌ সুপার জায়ান্টস : নিকোলাস পুরান (২১ কোটি), রবি বিষ্ণয় (১১ কোটি), মায়াঙ্ক যাদব (১১ কোটি), মহসিন খান (৪ কোটি), আয়ুশ বাদোনি (৪ কোটি)।

রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু : বিরাট কোহলি (২১ কোটি), রজত পাতিদার (১১ কোটি), যশ দয়াল (৫ কোটি)।

দিল্লি ক্যাপিটালস : অক্ষর প্যাটেল (১৬.৫ কোটি), কুলদীপ যাদব (১৩.২৫ কোটি), ট্রিস্টান স্টাবস (১০ কোটি), অভিষেক পোরেল (৪ কোটি)।

পাঞ্জাব কিংস : শশাঙ্ক সিং (৫.৫ কোটি), প্রভসিমরান সিং (৪ কোটি)।

রাইট টু ম্যাচ কার্ড বা আরটিএম কী এবং এর ব্যবহার
রিটেনশনে পুরোনো স্কোয়াড থেকে সর্বোচ্চ ৬ জনকে রাখতে পেরেছে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো। এই ৬ জনের মধ্যে সর্বোচ্চ ৫ জন এরই মধ্যে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলা (ক্যাপড), সর্বোচ্চ ২ জন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেকের অপেক্ষায় থাকা (আনক্যাপড) খেলোয়াড়। এই ছয়জন খেলোয়াড়কে ধরে রাখার পদ্ধতি দুটি। একটি হচ্ছে নিলামের আগে সরাসরি চুক্তি করা। আরেকটি রাইট টু ম্যাচ (আরটিএম) কার্ড ব্যবহার করা।

আরটিএম কার্ড ব্যবহার করা যাবে নিলামে। পুরোনো ফ্র্যাঞ্চাইজি ছেড়ে দেওয়ার পর কোনো খেলোয়াড় নিলামে গেলে তাকে বিভিন্ন দল বিড করে। বিডিং শেষ হওয়ার পর পুরোনো ফ্র্যাঞ্চাইজিকে জিজ্ঞাসা করা হবে যে তারা এই খেলোয়াড়ের জন্য আরটিএম কার্ড ব্যবহার করতে চায় কি না। সেই দল চাইলে তখন নিলামে যত সর্বোচ্চ দাম উঠেছিল, একই দামে ওই খেলোয়াড়কে কিনে নিতে পারবে।

Main Admin:
X

Headline

You can control the ways in which we improve and personalize your experience. Please choose whether you wish to allow the following:

Privacy Settings