মৃদু শৈত্য প্রবাহের প্রভাবে দক্ষিণের সীমান্তবতী জেলা চুয়াডাঙ্গায় বেড়েছে শীতের প্রকোপ। আজ শুক্রবার সকাল ৯টায় চলতি মৌসুমে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৮৮ ভাগ। এর আগে সকাল ৬টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসের আর্দ্রতা ৯৭ ভাগ । যা চলতি মৌসুমের সব চেয়ে কম তাপমাত্রা। তবে সকালে ঝলমলে রোদের দেখা মেলায় কিছুটা স্বস্তি মেলে জনজীবনে। কিন্তু দিনভর দক্ষিণের হিমেল হাওয়ায় বইতে থাকায় শীতের মাত্রা আরও বাড়িয়েছে। চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিস জানায়, এধরণের তাপমাত্রা আরও ২দিন থাকতে পারে। ১৫ তারিখে পর তাপমাত্রা আরও হ্রাস পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এদিকে তাপমাত্রা কমে যাওয়ার কারণে বিপাকে পড়েছে খেটে খাওয়া নিন্ম আয়ের মানুষ। রিকশা চালকরা ঠিক মত প্যাসেন্জার পাচ্ছেনা। দিনমজুররা কাজ পাচ্ছে না। শীতের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় তাপমাত্রার নিচের দিকে নামছে। গত তিনদিন মধ্যরাত থেকে দিনের বেশিরভাগ সময় কুয়াশায় ঢেকে থাকছে গোটা জেলা। সেই সাথে আছে দক্ষিণ থেকে নেমে আসা হিম শীতল ঠান্ডা বাতাস। সড়ক-মহাসড়কে যানবাহন চলচল তুলনামূলক কম। ঘণ কুয়াশার কারণে হেড লাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে যানবাহন। দিনমজুর জব্বার আলী বলেন, অগ্রহায়ণেই যদি এত শীত পড়ে, তাহলে পৌষ আর মাঘ মাসে যে কি হবে তা আল্লাহ জানেন। আমরা তো কোনো কাজ করতে পারব না। সংসার চালার কীভাবে, সেই চিন্তা হচ্ছে। রিকশাচালক মধু বলেন, কুয়াশা আর ঠান্ডার কারণে রাস্তায় যাত্রী কম। খুব চিন্তায় আছি। শুনছি শীত আরও বেশি পড়বে তখন কি যে হবে।
১২ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার সকাল ৬ টায় ও ৯ টায় চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণীর আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে ১০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সে সময় বাতাসের আদ্রতা ছিলো ৯৭ শতাংশ। আবহাওয়া অফিস বলছে, চলতি বছর একটু আগেই শীত পড়া শুরু করে এ জেলায়। এখন থেকে প্রতিনিয়ত তাপমাত্রা আরও কমবে।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে চুয়াডাঙ্গায় সর্বনিম্ন ৬ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। ২০১৩ সালের জানুয়ারি মাসে ৩ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় চুয়াডাঙ্গায়। যা ছিল গত ৩৫ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন।
চুয়াডাঙ্গা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলেন, এ বছর কুয়াশার ঘনত্ব এবং স্থায়িত্ব বেশি হওয়ায় কৃষকের নতুন ধানের বীজতলা নিয়ে সংঙ্কা রয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. রকিব সাদী জানিয়েছেন, ১ সপ্তাহে প্রায় তিন হাজার রোগী সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে। যাদের মধ্যে শিশু আর বৃদ্ধদের সংখ্যা বেশি। প্রতিদিনই প্রায় ৫০ জন রোগী ভতি হচ্ছে তার মধ্যে ডাইরিয়ার রোগীর সংখ্যাই বেশী। এছাড়ার সদরহাসপাতালের বহিঃ বিভাগে প্রতিদিন প্রায় ২শতাধিক রোগী চিকিৎসা গ্রহন করছেন।