X

আবাসন খাতে বড় দুঃসময় অস্থিরতায় ফ্ল্যাটের বাজার, রডের দাম নিম্নমুখী

রাজনৈতিক পট পরিবর্তন, চলমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অস্থিরতায় দেশের আবাসন খাত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে গভীর মন্দার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। নতুন প্রকল্প ও রেডি ফ্ল্যাটের বিক্রি স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। বিশেষ করে রাজধানী ঢাকায় এই মন্দা সবচেয়ে বেশি স্পষ্ট।

দেশের শীর্ষস্থানীয় একাধিক আবাসন প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, গত এক বছরে ঢাকার অভিজাত এলাকার বিলাসবহুল ফ্ল্যাটের বিক্রি ৮০ শতাংশ কমে গেছে। মাঝারি দামের ফ্ল্যাটের বিক্রি কমেছে ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ। তুলনামূলক কম দামের ফ্ল্যাটের বিক্রি কমেছে ২০ থেকে ৩০ শতাংশ। আগে বুকিং দেওয়া ফ্ল্যাট বা বাণিজ্যিক স্পেসের কিস্তি নিয়মিত পরিশোধ করছেন না অনেক ক্রেতা। এতে ছোট ও মাঝারি প্রতিষ্ঠানগুলো মারাত্মক আর্থিক সংকটে পড়েছে। অনেকেই ফ্ল্যাটের দাম কমিয়েও বিক্রি করতে পারছেন না। জানা গেছে, গত এক দশকে সরকারি কর্মকর্তা, চিকিৎসক, আইনজীবী, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও করপোরেট পেশাজীবীরাই ছিলেন আবাসনের মূল ক্রেতা। কিন্তু গত বছরের আগস্টে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর ক্রেতার প্রোফাইলেও এসেছে পরিবর্তন। অনিশ্চয়তা ও বিনিয়োগে আস্থার সংকটে মানুষ ফ্ল্যাট কেনার মতো দীর্ঘমেয়াদি সিদ্ধান্ত নিতে পিছিয়ে যাচ্ছেন। আবাসন খাতের মন্দার সঙ্গে সঙ্গে এর ওপর নির্ভরশীল শিল্পেও নেমেছে ধস। বাংলাদেশ ট্রেডিং করপোরেশনের (টিসিবি) তথ্য অনুযায়ী, সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত ৬০-গ্রেড এমএস রডের দাম গত এক বছরে ১২ শতাংশ কমে টনপ্রতি ৮৫ হাজার থেকে ৮৯ হাজার টাকায় নেমেছে। ২০২৪ সালের মাঝামাঝিতে রডের দাম যেখানে ছিল প্রায় ১ লাখ টাকা, তা এখন ২০২২ সালের মার্চের তুলনায়ও কম। বাংলাদেশ স্টিল ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএসএমএ) তথ্য মতে, রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের আগে দেশে মাসে সাড়ে ৬ লাখ টন রড ব্যবহার হতো, যা এখন কমে দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ টনে। চাহিদা কমেছে প্রায় ৩৫ শতাংশ। এ বিষয়ে বিএসএমএর মহাসচিব সুমন চৌধুরী বলেন, ‘গত ২৭ জুলাই কয়েক মিনিটের ব্যবধানে রডের দাম নয় শতাংশ পড়ে গেছে। এতটা অস্থির বাজারে ব্যবসা করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। ব্যাংক ঋণের চাপ ও উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধির কারণে অনেক ছোট মিল উৎপাদন স্থগিত রেখেছে।’ রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, ঋণপ্রাপ্তিতে সহজ শর্ত এবং ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত না হলে আবাসন খাতের এ সংকট আরও দীর্ঘায়িত হবে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। ফলে এক সময় মধ্যবিত্তের স্বপ্নের ঠিকানা হয়ে ওঠা অ্যাপার্টমেন্ট এখন অনেকের কাছে অধরাই থেকে যাচ্ছে।

Md Abu Bakar Siddique:
X

Headline

You can control the ways in which we improve and personalize your experience. Please choose whether you wish to allow the following:

Privacy Settings