X

আমলাতান্ত্রিক সংস্কৃতির পরিবর্তন না হলে দুর্নীতি প্রতিরোধ হবে না

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, যতদিন পর্যন্ত বাংলাদেশে রাজনৈতিক সংস্কৃতি ও আমলাতান্ত্রিক সংস্কৃতির ইতিবাচক পরিবর্তন না আসবে, ততদিন দুদক বা অন্য দুর্নীতি বিরোধী প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম কাজে আসবে না।

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম উদ্দেশ্য দুর্নীতি বিরোধী চেতনাকে ধারণ করতে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ও আমলাতন্ত্রের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ইফতেখারুজ্জামান।

রোববার (৮ ডিসেম্বর) জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে আন্তর্জাতিক দুর্নীতি বিরোধী দিবস-২০২৪ উপলক্ষ্যে আয়োজিত মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন।

দলীয়করণ, আমলাতন্ত্র, অভ্যন্তরীণ দুর্নীতি, অনিয়ম, অনাচারারের কারণে দুদক দুর্বল প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে জানিয়ে ইফতেখারুজ্জামান সাড়াশি বা শুদ্ধি অভিযানের মাধ্যমে দুদককে ঢেলে সাজানোর পরামর্শ দেন।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়ন রাষ্ট্র সংস্কার ও নতুন রাজনৈতিক সমঝোতা নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, সংস্কার কার্যক্রমের মধ্যে অন্যতম দুর্নীতি বিরোধী কার্যক্রম ও দুদক সংস্কার। প্রশাসন সংস্কার কাজও চলছে। এবার বিশেষ পরিপ্রেক্ষিতে দুর্নীতি বিরোধী দিবস পালিত হচ্ছে। সেটি হচ্ছে অনেক রক্তের বিনিময়ে অর্জিত নতুন সম্ভাবনার বাংলাদেশ। নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন নিয়ে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।

বর্তমান সরকারের রাজনৈতিক কোনো উচ্চাকাঙ্ক্ষা নাই জানিয়ে তিনি বলেন, দুদকের পাশাপাশি রাষ্ট্র কাঠামো এমনভাবে সংস্কার করতে হবে যাতে ভবিষ্যতে যারা ক্ষমতায় আসবে নির্বাচনের মাধ্যমে; তাদের কাছে যেনো একটা অবকাঠামো তৈরি হয়, দুর্নীতি বিরোধী অবস্থান অব্যাহত রাখার জন্য।

মূল প্রবন্ধে টিআইবির উপ সমন্বয়ক জাফর সাদিক বলেন, বাংলাদেশ থেকে বছরে গড়ে ১০-১২ বিলিয়ন ডলার পাচার হয়। বিগত কর্তৃত্ববাদী সরকারের আমলে বিভিন্ন প্রকল্প থেকে অর্থ লুটপাটের জন্য প্রকল্প পাসের আগে কৃত্রিমভাবে খরচ বৃদ্ধি, বাড়তি অর্থ নানাভাবে সরিয়ে নেওয়া, কেনাকাটার ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতাহীন দরপত্র ও পছন্দের লোককে কাজ দেওয়ার ঘটনা অহরহ ঘটেছে।

এমনকি বিভিন্ন প্রকল্পে নিয়োগের ক্ষেত্রেও ব্যাপকভাবে স্বজনপ্রীতি, বিশেষ করে প্রকল্প পরিচালক নিয়োগের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা বেশি প্রাধান্য দেওয়া, ঠিকাদার নিয়োগের ক্ষেত্রেও রাজনৈতিক বিবেচনাকে প্রাধান্য দিয়ে অতিমূল্যায়িত চুক্তি, ঘুষ গ্রহণ একটি নিয়মিত চর্চায় পরিণত হয়েছিল পতিত সরকারের শাসনামলে। মূলত সে সময়ে দুর্নীতির মহোৎসবের পাশাপাশি বিচারহীনতাকে স্বাভাবিকতায় পরিণত করা হয়েছিল।

এসময় দুর্নীতি প্রতিরোধে ১৪ দফা দাবি জানায় টিআইবি যার মধ্যে রয়েছে- বিচার বিভাগের নিয়োগ, পদায়ন, বদলিসহ বিচারিক প্রক্রিয়ায় রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বন্ধ করতে অবিলম্বে বিচার বিভাগের জন্য পৃথক সচিবালয় গঠন করা, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির দ্রুত উন্নয়নের পাশাপাশি একটি জনবান্ধব পুলিশ বাহিনী তৈরিতে এর ব্যবস্থাপনা কর্মকাঠামো পুরোপুরি ঢেলে সাজানোর ব্যবস্থা করা, দুর্নীতির বিরুদ্ধে শুন্য সহনশীলতার ফাঁকাবুলির সংস্কৃতি পরিহার করে সব ধরনের—বিশেষ করে উচ্চ পর্যায়ের দুর্নীতির বিচারহীনতা বন্ধে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ ইত্যাদি।

Categories: জাতীয়
Main Admin:
X

Headline

You can control the ways in which we improve and personalize your experience. Please choose whether you wish to allow the following:

Privacy Settings