X

‘আমার বউ, বাচ্চা, বাবা, মা…সবাই খাবার অভাবে মারা যাইতেছে’ – স্বজনদের উদ্বেগ

বাংলাদেশে বন্যা উপদ্রুত বিভিন্ন জেলা থেকে স্থানীয় বাসিন্দাদের যেসব বর্ণনা পাওয়া যাচ্ছে তাতে বোঝা যাচ্ছে মানুষজন মানবেতর জীবনযাপন করছেন। বন্যার পানির তোড়ে বহু মানুষের সহায় সম্বল ভেসে গেছে। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত জেলা ফেনীর পরিস্থিতি নিয়ে এখনো ধারণা পাওয়া যাচ্ছে না, কারণ ফেনীর সাথে গত তিনদিন ধরে যোগাযোগ কার্যত বিচ্ছিন্ন রয়েছে।

সরকারি হিসেবে বাংলাদেশে এখন মোট এগারোটি জেলা বন্যায় আক্রান্ত। ভারতের সীমান্ত ঘেষা ফেনী জেলার বহু মানুষ উদ্বেগ আর উৎকন্ঠায় দিন কাটাচ্ছেন।

এই জেলার যেসব মানুষ দেশের অন্যান্য জায়গায় এবং বিদেশে অবস্থান করছেন। তারা জানেন না যে গ্রামে বসবাসরত তাদের পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়দের কী অবস্থা। যোগাযোগ না থাকায় উৎকণ্ঠা আরো বাড়ছে। ফেনীর বাসিন্দা ও স্থানীয় সাংবাদিকদের সাথে বিবিসি বাংলার তরফ থেকে বহুবার চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্ক না থাকায় এ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। তাদের সবার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।

পড়াশোনার জন্য বছর দু’য়েক হল ইউরোপের দেশ বেলজিয়ামে থাকছেন ফেনী জেলার আইনুল ইসলাম। পরিবার-প্রিয়জনের তার যোগাযোগ হয় মোবাইল টেলিফোন কিংবা ইন্টারনেট-ভিত্তিক বিভিন্ন অ্যাপের মাধ্যমে।।

কিন্তু দু’দিন ধরে বন্যা কবলিত ফেনীতে আত্মীয়দের সাথে কথা বলতে না পেরে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মাঝে দিন কাটছে তার।

শুক্রবার দুপুরে মি. ইসলাম বিবিসি বাংলাকে বলেন, বাবা-মায়ের সাথে যোগাযোগ তো বন্ধ হয়েছেই, মামা বাড়ির সাথেও তারা যোগাযোগ করতে পারছেন না।

একই ধরনের উদ্বেগের সাথে দিন কাটাচ্ছেন ফেনীর সিলোনিয়া এলাকার দুবাই প্রবাসী সাইফুল হাসানও। তিনি শুক্রবার সকালের দিকে ফেসবুকে একটি ভিডিও বার্তার মাধ্যমে তার পরিবারকে উদ্ধার করার আকুতি জানান।

কাঁদতে কাঁদতে তিনি বলেন, “আমার বউ, বাচ্চা, বাবা, মা…সবাই খাবার অভাবে মারা যাইতেছে।”

শেষে কথা হয়েছে হাননান মুহাম্মদ চৌধুরীর সাথে, তিনি একজন স্বেচ্ছাসেবক। ফেনীর বন্যাদুর্গতদের সাহায্য করার জন্য গতকাল রাতে তিনি চট্টগ্রাম থেকে ছুটে গিয়েছেন।

কিন্তু অনেক চেষ্টা করেও তিনি ফেনীতে পৌঁছাতে পারেননি। কোনোমতে ফেনীর লালপুর পর্যন্ত গিয়েছিলেন।

পরে বাধ্য হয়ে রাত ১১টার দিকে তিনি ফিরে এসেছেন। রাতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের নিকটবর্তী একটি আশ্রয়কেন্দ্রে তিনি আশ্রয় নিয়েছিলেন।

ফেনীর লালপুরে তিনি কী অবস্থা দেখেছেন? জানতে চাইলে তিনি বিবিসি বাংলাকে বলেন, “ম্যাসাকার অবস্থা ওখানে। কাল যখন গেছি, অনেক পানির স্রোত ছিল। পরে ফিরে আসতে বাধ্য হয়েছি।

বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) প্রতিবেদন অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত ওই জেলায় তিন লাখ মানুষ বন্যা আক্রান্ত এবং এপর্যন্ত ২০ হাজার মানুষকে উদ্ধার করে বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে রাখা হয়েছে।

Categories: জাতীয়
Main Admin:
X

Headline

You can control the ways in which we improve and personalize your experience. Please choose whether you wish to allow the following:

Privacy Settings