X

উধাও খাদ্যবান্ধবের ডিলাররা: চাল না পেয়ে কষ্টে ৫০ হাজার পরিবার

৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর লাপাত্তা ভোলার খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ১০৭ ডিলার। ফলে সেপ্টেম্বর মাসে চাল পায়নি প্রায় ৫০ হাজার দরিদ্র পরিবার। চাল না পেয়ে কষ্টে জীবন কাটছে এসব পরিবারের। সেপ্টেম্বর মাসে নতুন ডিলার নিয়োগে কাজ শেষ না হওয়ায় ১৫ টাকা কেজি দরে চাল কিনতে পারেনি কার্ডধারী দরিদ্র পরিবারগুলো।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ভোলার সরকারি গুদামগুলোতে হাজার হাজার টন খাদ্যবান্ধবের চাল পরে আছে। ডিলার না থাকায় বিতরণ হচ্ছে না এসব চাল। ১৫ টাকা কেজি করে ৩০ কেজি করে এসব চাল সেপ্টেম্বর মাসে বিতরণের কথা ছিল খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির কার্ডধারী দরিদ্র পরিবারের মাঝে।

কিন্তু ৫ আগস্টের পর লাপাত্তা ভোলা সদর উপজেলার ৩৪ ডিলারের মধ্যে ২৩ জন, চরফ্যাশনের ৫০ জনই, লালমোহনের ২৬ জন ও মনপুরা উপজেলার ৮ জনই।

সদর উপজেলার চর ভেদুরিয়া গ্রামের খাদ্যবান্ধবের কার্ডধারী মো. নাহিদ (৩৫) জানান, স্ত্রী ও চার সন্তান নিয়ে তার সংসার। দিন মজুরের কাজ করে কষ্টে সংসার চালাতে হয় তাকে। ১৫ টাকা দামে ৩০ কেজি চাল কিনে বছরের পাঁচ মাস মোটামোটি কেটে যেতো তার। কিন্তু খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ডিলার লাপাত্তা হওয়ায় সেপ্টেম্বর মাসে চাল কিনতে পারেনি। বর্তমানে কষ্ট দিন কাটছে তার।

একই গ্রামের হতদরিদ্র মো. আব্দুল কাদের (৮০) জানান, তিনি সরকারি ঘরে স্ত্রী ও দুই নাতী নিয়ে বসবাস করছেন। তার রোজগার নেই। তার ছেলেরা জেলে কাজ করেন। মাঝে মধ্যে কিছু টাকা দেন, তা দিয়ে কোনো রকমে চলে সংসার। তার একটি খাদ্যবান্ধবের কার্ড রয়েছে। সে কার্ডে বছরে পাঁচবার ১৫ টাকা কেজি দরে চাল কেনেন। কিন্তু গত সেপ্টেম্বর মাসে তিনি ডিলারের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হন। ডিলারের বাড়ি গিয়ে তাকে পাননি। পরে লোকমুখে জানতে পেরেছেন এখন আগের ডিলার নেই। নতুন করেও কাউকে নেওয়া হয়নি। ফলে সেপ্টেম্বর মাসে চাল পাননি তারা।

একই এলাকার ইয়ানুর বেগম ও সুরভী বেগম জানান, তাদের স্বামীরা দিনমজুরের কাজ করে সংসার পরিচালনা করেন। কম আয়ে সংসারে ১৫ টাকা কেজিতে চাল পেলে তাদের কষ্ট কিছুটা কম হতো। কিন্তু গত মাসে চাল কেনার কথা থাকলেও কিনতে পারেনি। এতে করে তাদের সংসারে অভাব চলছে।

ভোলা জেলা খাদ্য অধিদপ্তরের খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. এহসানুল হক জানান, নতুন করে ১০৭ জন ডিলার নিয়োগের কাজ চলছে। যত দ্রুত সম্ভব ডিলার নিয়োগের কাজ শেষ হবে। নতুন ডিলাররা সেপ্টেম্বর মাসের চাল অক্টোবরে তুলে বিক্রি করবে দরিদ্র পরিবারের কাছে। এতে করে সমস্যা সমাধান হবে কার্ডধারীদের।

তিনি আরও জানান, ভোলার সাত উপজেলায় ১৭২ জন খাদ্যবান্ধবের ডিলারের মাধ্যমে ১৫ টাকা কেজি দরে ৩০ কেজি করে চাল পেতেন ৮২ হাজার ৫৪৭ জন দরিদ্র পরিবার।

Categories: জাতীয়
Main Admin:
X

Headline

You can control the ways in which we improve and personalize your experience. Please choose whether you wish to allow the following:

Privacy Settings