X

একটি গাছে ঝুলছে ১১৮ থোকা আঙুর

মাসুদ রানা। বাড়ি পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায়। ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি থেকে আইন নিয়ে করেছেন স্নাতক ও স্নাতকোত্তর। ছোটবেলা থেকে তার বাগানের শখ। আর সেই শখ থেকেই মাত্র ১০ কাঠা জমিতে গড়ে তোলেন ফলের বাগান। সম্প্রতি সেখানে করেন পরীক্ষামূলক আঙুর চাষ। পরীক্ষামূলক লাগানো একটি গাছে ঝুলছে ১১৮ থোকা আঙুর।

তার পরীক্ষামূলক এ চাষের মাধ্যমে পঞ্চগড়ে প্রথমবারের মতো যাত্রা শুরু হয়েছে আঙুর চাষের। গত দুই বছর আগে জার্মানি থেকে সংগ্রহ করা ভেরা কারনামি জাতের আঙুর চারা লাগান মাসুদ। এখন সেই গাছের সবুজ পাতার ফাঁকে ফাঁকে থোকায় থোকায় ঝুলছে হালকা কালো রঙের ১১৮টি আঙুরের ছড়া। তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার পর তা দেখতে বাগানে ছুটে যাচ্ছেন দর্শনার্থীরা।

মাসুদ রানা বলেন, আমার বাগানে নতুন ফল আবাদ হিসেবে আঙুর যুক্ত করেছি। বাগানে ছোট বড় মিলে শতাধিক আঙ্গুরের চারা লাগিয়েছি। তার মধ্যে জার্মানি থেকে আমদানি করা ভেরা কারনারমি জাতের একটি আঙুর গাছ আমাকে একজন উপহার দিয়েছিলেন। পরে সেটি লাগিয়ে অবাক হয়েছি পঞ্চগড়ের মাটিতেও আঙুর চাষের জন্য উপযোগী। মাত্র একটি গাছে ১১৮টি থোকা ধরেছে।

তিনি বলেন, বিভিন্ন দেশ থেকে ফলের চারা সংগ্রহ করে রোপণ করি। পরে সেখান থেকে চারা উৎপাদন করি। প্রথমবারের মতো আঙুর আবাদ শুরু করেছি। সামনে চারাও বিক্রি করব। বিশেষ করে আঙুর ফলের আবাদ ছড়িয়ে পড়লে দেশের আমদানি নির্ভরতা কমে আসবে।

কৃষি বিভাগ থেকে কোনো সহযোগিতা পাচ্ছেন কি না জানতে চাইলে মাসুদ রানা বলেন, না এ ধরনের কোনো সহযোগিতা পাইনি। আর সহযোগিতার জন্য তাদের কাছে যাওয়াও হয়নি।

জানা যায়, মাসুদ রানা ২০১৮ সালে ১০ কাঠা জমিতে গড়ে তোলেন বাগান। পরে জমি বাড়িয়ে তা ১৮ বিঘাতে গড়ে তোলেন। এ বাগানে বিশ্বের নামিদামি জাতের আমের পাশাপাশি চাষ করছেন মাল্টা, কমলা, ত্বিন ফল, লেবুসহ কয়েকজাতের আপেল। তুরস্ক ও জার্মানি থেকে ত্বিন ফল, কমলা, আঙুর ও মালটার জাত সংগ্রহ করে নার্সারি ও ফল আবাদ করে হয়ে উঠেছেন সফল উদ্যোক্তা। এসব বাগান থেকে তার বার্ষিক আয় কোটি টাকার ওপরে। তিনি তার ফল আবাদের মধ্য দিয়ে স্বপ্ন দেখছেন অ্যাগ্রো ট্যুরিজম গড়ার।

এদিকে মাসুদ রানার বাগান ঘিরে অনেকের হয়েছে কর্মসংস্থান। বর্তমানে ১০-১৫ জন যুবকের কর্মসংস্থান হয়েছে। তারা বাগানের বিভিন্ন ক্যাটাগরির কাজ করছেন। কেউ গাছের কলম তৈরি করেন, কেউ পরিচর্যার কাজ ও কেউ বাগানের ফল তুলে তা প্যাকেজিংয়ের কাজ করেন। এসব শ্রমিকদের কয়েকজন চারা তৈরির কাজ করেন। দিনশেষে ভালো আয় করেন তারা।

জেলা কৃষিসম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণ মো. নইমুল হুদা সরকার বলেন, পঞ্চগড়ে বাণিজ্যিকভাবে এখনো আঙুর চাষ শুরু হয়নি। যদি কেউ ব্যক্তিগতভাবে করে থাকেন, করতে পারেন তা জানা নেই। তবে এ ধরনের চাষাবাদে কৃষকদের উৎসাহ ও কারিগরি সহযোগিতা করা হবে।

Main Admin:
X

Headline

You can control the ways in which we improve and personalize your experience. Please choose whether you wish to allow the following:

Privacy Settings