নড়াইলের কালিয়া উপজেলার বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ জুড়ে বাতাসে দোল খাচ্ছে হলুদ সরিষা ফুল। হলুদের আভায় ছড়িয়ে থাকা সরিষার ক্ষেতগুলো দেখতে প্রকৃতি প্রেমীরা সকাল-বিকেল ভিড় করছেন। কৃষি প্রণোদনা পাওয়ায় এবং এ বছর বীজ বপনের সময় আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় সরিষার আবাদ ভালো হয়েছে। তাই কৃষি কর্মকর্তা ও কৃষকরা বাম্পার ফলনের আশা করছেন।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, তেলের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় চলতি মৌসুমে সরিষার চাষ বেড়েছে।
কালিয়া উপজেলায় ৩ হাজার ৫৬০ হেক্টর জমির মধ্যে ১৭ হাজার ৯৯৩ মেট্রিক টন সরিষা উৎপাদনের সম্ভবনা রয়েছে বলে জানাযায়।
এদিকে, সরিষা ফুলের হলুদ রাজ্যে মৌমাছির গুঞ্জনে মুখরিত হয়ে উঠেছে মাঠ। হলুদ আবরণে ঢাকা সরিষার ক্ষেত প্রকৃতির মাঝে অপরূপ সৌন্দর্যের শোভা ছড়াচ্ছে।
সরিষা চাষী জানান, গত বছর আশানুরূপ দাম পাওয়ায় এবং কৃষি বিভাগ সরিষা চাষে প্রণোদনা দেওয়ায় চলতি মৌসুমে কৃষকেরা সরিষা চাষে আগ্রহী হয়েছেন।
এ বছরে গত বছরের তুলনায় বেশি জমিতে সরিষার চাষ করেছেন তারা। উপজেলার মূলশ্রী গ্রামের কৃষক করির সদরদার ও হাফিজুর বিশ্বাস বলেন, সরিষা চাষে বিঘা প্রতি খরচ হয় ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা। ফলন হয়ে থাকে ৬-৭ মণ। প্রতি মণ সরিষার বাজার দর ৩ হাজার ২শ টাকা থেকে ৩ হাজার ৫শ টাকা।
তারা আরও বলেন, গত বছর সরিষা চাষে আশানুরূপ লাভ হওয়ায় এবার দু’জনে প্রায় ৮ বিঘা জমিতে সরিষার চাষ করেছেন। আশা করছে এবারও ভালো ফলন ও ভালো দাম পাবো।
উপজেলা সহকারী কৃষি কর্মকর্তা ইভা মল্লিক বলেন, মাঠ পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তারা সরিষা চাষীদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন। উন্নত জাতের সরিষার চাষে কৃষকদের পরামর্শ দেয়া হয়েছে। সরিষা ৩ থেকে সাড়ে ৩ মাস মেয়াদি ফসল। কম খরচ ও কম পরিশ্রমে সরিষা চাষ করতে পারেন কৃষকেরা। বর্তমানে সরিষা চাষ কৃষকের কাছে লাভজনক ফসলে পরিণত হয়েছে। গত বছর সরিষার আশানুরূপ ফলন ও দাম পাওয়ায় এ বছর কৃষকেরা বেশি জমিতে সরিষা চাষে উৎসাহী হয়েছেন। সরিষা চাষ একদিকে যেমন মাটির উর্বরতা বাড়ায়, অন্যদিকে পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
আশা করছি, কৃষকরা সরিষার ভালো ফলনে লাভবান হবেন। এখানকার উৎপাদিত সরিষার তেল দেশের ভোজ্য তেলের চাহিদা পূরণেও বড় ভূমিকা রাখবে বলে তিনি জানান।