X

কুমিল্লায় আমনের মাঠ মাতাবে নতুন ধান

কুমিল্লায় আমনের মাঠ মাতাবে নতুন ধান

কুমিল্লার মাঠে রোপা আমন মৌসুমে বেড়েছে নতুন ধান ব্রি ধান-১০৩ এর চাহিদা। বেশি ফলন, ঝরঝরে ভাত আর লম্বা খড়ের কারণে এই আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে। গত বছর যেখানে পুরো জেলায় চাষ হয়ে একশ’ হেক্টরের কিছু বেশি জমি, সেখানে ২য় বছরে তা হাজার হেক্টর ছাড়িয়ে যাবে। তার মধ্যে ৬০০ হেক্টর চাষ হচ্ছে দেবিদ্বার উপজেলায়।

কৃষক ও কৃষি কর্মকর্তাদের সূত্র জানায়, অন্য ধান হেক্টরে ৬টন ফলন হতো,তা ব্রি ধান ১০৩ ৮টনের বেশি ফলন হচ্ছে। চাল সরু, এই ধানের ভাত দীর্ঘ সময় ঝরঝরে থাকে। স্বাদও ভালো। বিশেষ করে কৃষকরা গরুর খাদ্য হিসেবে খড়কে প্রাধান্য দিচ্ছেন। এই ধানে বেশি খড় পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়া চাষের সময় কম হওয়ায় কৃষকরা সেই সময় অন্য ফসলও চাষ করতে পারেন।
সরেজমিন দেবিদ্বার উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, বাগমারা গ্রামের কৃষক আবদুল কাদেরের বাড়িতে স্থানীয় কৃষকদের ভিড়। তারা বীজের জন্য এসেছেন। পর্যাপ্ত বীজ না থাকায় তিনি ১০ কেজি চাহিদার স্থলে ৫কেজি দিচ্ছেন। কাবিলপুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায় কৃষকরা বীজতলা তৈরি করছেন।
দেবিদ্বার উপজেলার বাগমারা গ্রামের কৃষক আবদুল কাদের বলেন, ৬০ শতক জমিতে নতুন ধান ব্রি ধান ১০৩ চাষ করেছেন। ভালো ফলন পেয়েছেন। তা দেখে নিজের গ্রাম ও পাশের ব্রাহ্মণখাড়া গ্রামের কৃষকরা বীজের জন্য বাড়িতে লাইন ধরেছেন। এই ধানের চাল চিকন ও ভাত ঝরঝরে। তিনি মূলত খড়ের জন্য এই ধানকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন।
একই গ্রামের বীজের ক্রেতা মো. শামীম বলেন, আবদুল কাদের তার ভাতিজা। ভালো ফলন দেখে তারও ইচ্ছে হলো এই ধান চাষ করার। তার থেকে  ৫কেজি বীজ নিয়েছেন। এই ধান চাষে সময় কম লাগে, এতে তার আলু চাষ করতে সুবিধা হবে।
কাবিলপুর গ্রামের রফিক আহমেদ বলেন, এই ধান এক একর জমিতে চাষ করেছেন। দুই টনের বেশি ধান পেয়েছেন। ১২৫-১৩০দিনের মধ্যে ধান কাটা যায়। এক টন ধানের বীজ গবেষণা ইনস্টিটিউটে,আধা টন কৃষি সম্পসারণ অধিদপ্তরকে, বাকিটা স্থানীয় কৃষকদের মাঝে বিক্রি করেছেন।
দেবিদ্বার উপজেলা কৃষি অফিসার বানিন রায় বলেন, ব্রি ধান ১০৩নিয়ে ২বছর আগে কাজ শুরু করেন। ১০ কেজি বীজ দিয়ে শুরু করেন। সেখান থেকে একটন বীজ সংরক্ষণ করেন। তার থেকে কুমিল্লার আঞ্চলিক ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটে ৭০০ কেজি বীজ নেয়। ২০০ কেজি বীজ সিলেটে পাঠান। পার্টনার প্রকল্পের আওতায় গত বছর ৭হেক্টর জমিতে ধান চাষ করেন। এবার ব্যাপকভাবে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করেন। এতে বেশ সাড়াও পড়ে। আশা করছেন ৬শ হেক্টরের বেশি জমিতে ব্রি ধান ১০৩ চাষ হবে।

ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট কুমিল্লা আঞ্চলিক কার্যালয়ের প্রধান ড. মোহাম্মদ এখলাছুর রহমান বলেন, কৃষক বড় অর্থনীতিবিদ। তিনি ধানের পরিমাণ, ভাতের স্বাদ, খড়ের আকার ও চাষের সময়সহ বিভিন্ন সুবিধা দেখে একটি জাতের প্রতি আগ্রহী হন। সেনিরিখে তারা ব্রি ধান ১০৩ কে বেছে নিয়েছেন।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কুমিল্লার উপ-পরিচালক আইউব মাহমুদ বলেন, কৃষকদের কাছে ধানের ভালো ফলনের যেমন চাহিদা আছে, তেমনি বেশি খড়েরও চাহিদা আছে। বিভিন্ন দিক দিয়ে লাভ দেখে তারা ব্রি ধান ১০৩ চাষে আগ্রহী হয়েছেন। গত বছর পুরো জেলায় ১১১ হেক্টর জমিতে ব্রি ধান ১০৩ জাতের চাষ হয়। এবার তা হাজার হেক্টর ছাড়িয়ে যাবে।

Md Abu Bakar Siddique:
X

Headline

You can control the ways in which we improve and personalize your experience. Please choose whether you wish to allow the following:

Privacy Settings