X

কোভিডে ঘরে চাদর সেলাই থেকে শুরু, এখন ‘শতরঙ’ এ স্বপ্ন দেখছেন সায়েদা

সায়েদা হক নারী উদ্যোক্তা ফোরামের একজন এক্সিকিউটিভ সদস্য। তিনি পাইওনিয়ার সরকারি মহিলা কলেজ থেকে বিএ পাস করেছেন।ছোটবেলায় স্বপ্ন দেখতেন নিজে কিছু করবেন, তাই হাতের কাজ, ব্লক, সেলাই শিখেছিলেন। পাশাপাশি অন্যদের শেখানোর কাজও করেছেন। বাচ্চাদের বাসায় পড়ানো এমন হরহামেশাই করতেন। বাবার ঘর থেকেই এসব কাজ করেছেন তিনি।বিয়ের পর ঘর সংসারেই মনোযোগ দেন। কিন্তু হঠাৎ সায়েদার হাজবেন্ডের ক্যান্সার ধরা পড়ে। আর্থিক সমস্যা তাই প্রকট হয়ে উঠে, কারণ প্রতিমাসে ক্যান্সার চিকিৎসায় প্রচুর অর্থ ব্যয় হয়। অসুস্থতার কারণে স্বামীও কিছু করতে পারছেন না দশ বছর।করোনার সময় সবাই যখন গৃহবন্দী, তখন তিনিও একেবারেই ঘরে বসে যান। কিন্তু কিছ শুরু করবেন ভাবনা থেকে ঘরে বসেই চাদর সেলাই শুরু করেন।উদ্যোক্তা সায়েদার উদ্যোগের গল্পটা শুরু হয় নারী উদ্যোক্তা ফোরামের সভাপতি রাফিয়া আক্তারের মাধ্যমে। তার সাথে কথা হওয়ার পর তিনি আশ্বস্ত করেন, একদিন সব কষ্ট দূর হয়ে যাবে। সায়েদাও স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন। নারী উদ্যোক্তা ফোরামের সাথে নিজেকে যুক্ত করেন ২০২০ সালের নভেম্বর মাসে।সবার অনুপ্রেরণায় তিনি তার হাতের কাজ নিয়েই উদ্যোগ শুরু করেন। উদ্যোগের নাম দিলেন শতরঙ। রঙ নিয়ে কাজ করা উদ্যোক্তার শখ, তাই তিনি এ নামটি বেছে নিয়েছেন।উদ্যোক্তার সিগনেচার পণ্য ব্লকের চাদর, কুশন কাভার, ফ্রিজের কাভার। এক কথায় ব্লক করা হয় সব রকম প্রডাক্টই আছে। কাটিং ও সেলাই থেকে শুরু থেকে সব তিনি নিজেই করেন।

 

কাজ করতে গেলে অনেক বাধা আসে। সায়েদার ক্ষেত্রেও ব্যতিক্রম ছিল না। উদ্যোক্তার দুই ছেলে। বড় ছেলে এস এস সি পরীক্ষার্থী এবং ছোটটা ৭ বছরের। ওদের দেখাশোনা করে উদ্যোগের পেছনে সময় বের করাটাও একটা চ্যালেঞ্জ ছিল। কিন্তু তিনি হাল ছাড়েননি।তার এখন পর্যন্ত কোন কর্মী নাই। নিজের হাতেই সব করেন। দেশের ভেতরে ময়মনসিংহ, গাজীপুর, সাভার, মানিকগঞ্জসহ বিভিন্ন জেলায় তার পণ্য গিয়েছে। সবচেয়ে বেশী যাচ্ছে ঢাকার ভেতরেই। দেশের বাইরে নিজের পরিচিত যারা থাকেন তাদের মাধ্যমে আমেরিকা এবং লন্ডনে গিয়েছে তার পণ্য। যেহেতু নিজের হাতেই সবকিছু সামলাতে হয় সায়েদাকে, তাই উপার্জন হয়ে থাকে সীমিত পরিসরে। মাসে প্রায় ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকার মতো আয় হয় তার শতরঙ থেকে।উদ্যোক্তা জীবনে অনেকের সহযোগিতাই পেয়েছেন সায়েদা। তবে সবচেয়ে বেশি পেয়েছেন নারী উদ্যোক্তা ফোরাম সভাপতি রাফিয়া আক্তারের কাছ থেকে। ভাই-বোনসহ অন্যরাও সহযোগিতা করেছেন। তাদের সহযোগিতা ছাড়া তিনি চলতে পারতেন না, এমনটাই বলেছেন উদ্যোক্তা সায়েদা।নারী উদ্যোক্তা ফোরাম থেকে নানা ধরনের ট্রেনিং এর মাধ্যমেও তিনি নিজেকে তৈরি করছেন।

ভবিষ্যতের পরিকল্পনায় তিনি জানান: স্বপ্ন যখন দেখেছি এর শেষও দেখবো। নিজের স্বপ্নকে বড় করে দেখতে চাই, চাই নিজের একটি ঠিকানা যেখানে শুধুই শোভা পাবে শতরঙ এর ছোঁয়া। এক নামে চিনবে সবাই, সেখানে আমি আর আমার কর্মীরা থাকবো।তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্য তার পরামর্শ হলো: জীবনে অনেক সমস্যা থাকবেই। তারপরও জীবন তো থেমে থাকবে না। আপনার লক্ষ্য অর্জনে সবসময় মনোবলকে অটুট রাখুন। সবসময় পজিটিভ থাকুন।

 

Md Abu Bakar Siddique:
X

Headline

You can control the ways in which we improve and personalize your experience. Please choose whether you wish to allow the following:

Privacy Settings