তৃতীয় অধ্যায়: কোষবিভাজন
প্রশ্ন: কোন কোষবিভাজনকে সমীকরণিক বিভাজন বলা হয়? ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: মাইটোসিস কোষবিভাজনকে সমীকরণিক বিভাজন বলা হয়। মাইটোসিসে নিউক্লিয়াস ও ক্রোমোজোম উভয়ই একবার করে বিভাজিত হয়। মাইটোসিস বিভাজনে কোষের মাতৃকোষ এবং অপত্য কোষে ক্রোমোজোম সংখ্যা সমান থাকে। একে সমীকরণিক বিভাজন বলা হয়।
প্রশ্ন: ক্যারিওকাইনেসিস ও সাইটোকাইনেসিসের মধ্যে পার্থক্য লেখ।
উত্তর: ক্যারিওকাইনেসিস ও সাইটোকাইনেসিসের মধ্যে পার্থক্য নিচে দেওয়া হলো-
(১) নিউক্লিয়াসের বিভাজনকে ক্যারিওকাইনেসিস বলে। সাইটোপ্লাজমের বিভাজনকে সাইটোকাইনেসিস বলে।
(২) মাইটোসিস কোষবিভাজনে ক্যারিওকাইনেসিস প্রক্রিয়াটি আগে ঘটে। সাইটোকাইনেসিস প্রক্রিয়াটি পরে ঘটে।
প্রশ্ন: সব ট্রাকশন তন্তুই স্পিন্ডল তন্তু কিন্তু সব স্পিন্ডল তন্তুই ট্রাকশন তন্তু নয় ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: মাইটোসিস কোষবিভাজনের প্রো-মেটাফেজ পর্যায়ের একেবারে প্রথম দিকে উদ্ভিদকোষে কতগুলো তন্তুময় প্রোটিনের সমন্বয়ে দুই মেরু বিশিষ্ট স্পিন্ডলযন্ত্র সৃষ্টি হয়।
স্পিন্ডলযন্ত্রের তন্তুগুলো এক মেরু থেকে অপর মেরু পর্যন্ত বিস্তৃত, এদের স্পিন্ডল তন্তু বলা হয়। ক্রোমোজোমের সেন্ট্রোমিয়ার স্পিন্ডলযন্ত্রের কিছু নির্দিষ্ট তন্তুর সঙ্গে সংযুক্ত হয়। এই তন্তুগুলোকে ট্রাকশন তন্তু বলা হয়। এ কারণেই বলা যায় যে, সব ট্রাকশন তন্তুই স্পিন্ডল তন্তু কিন্তু সব স্পিন্ডল তন্তুই ট্রাকশন তন্তু নয়।
প্রশ্ন: অস্বাভাবিক কোষবিভাজন বলতে কী বোঝ?
উত্তর: মাইটোসিস কোষবিভাজন প্রক্রিয়ায় একটি থেকে দুটি, দুটি থেকে চারটি এভাবে কোষের সংখ্যা বাড়তে থাকে। কোনো কারণে এই কোষ বিভাজনের নিয়ন্ত্রণ নষ্ট হয়ে গেলে যে কোষবিভাজন চলতে থাকে তাকে অস্বাভাবিক কোষবিভাজন বলে।
প্রশ্ন: ক্যানসার কেন সৃষ্টি হয়? ব্যাখ্যা করো / জরায়ু মুখের টিউমার সৃষ্টির কারণ ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: মাইটোসিস কোষবিভাজন প্রক্রিয়ায় একটি থেকে দুটি, দুটি থেকে চারটি এভাবে কোষের সংখ্যা বাড়তে থাকে। কোনো কারণে এই নিয়ন্ত্রণ নষ্ট হয়ে গেলে যে কোষবিভাজন চলতে থাকে তাকে অস্বাভাবিক কোষবিভাজন বলে। ক্যানসার, টিউমার এগুলো অস্বাভাবিক কোষবিভাজনের ফল।
গবেষণায় দেখা গেছে, বিভিন্ন ধরনের রোগজীবাণু, রাসায়নিক পদার্থ কিংবা তেজস্ক্রিয়তা ক্যানসার কোষ সৃষ্টিতে সহায়তা করে। হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাসের E6 এবং E7 নামের দুটি জিন এমন কিছু প্রোটিন সৃষ্টি করে, যা কোষ বিভাজন নিয়ন্ত্রক প্রোটিন অণুগুলোকে স্থানচ্যুত করে। এর ফলে কোষ বিভাজনের নিয়ন্ত্রণ নষ্ট হয়ে যায় এবং জরায়ুমুখের টিউমার সৃষ্টি হয়। অনেক সময় এ দুটি জিন পোষক কোষের জিনের সঙ্গে একীভূত হয়ে যায় এবং কোষের বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণকারী প্রোটিন অণুগুলোর কাজ বন্ধ করে দেয়। সৃষ্টি হয় ক্যানসার।
লেখক : সহকারী অধ্যাপক, জীববিজ্ঞান বিভাগ
সরকারি মুজিব কলেজ, সখিপুর, টাঙ্গাইল