চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বোটানিক্যাল গার্ডেন ও ইকো পার্কের ভেতরে থাকা সহস্রধারা ঝরনা-১ দেখতে এসে পথ হারিয়ে পাহাড়ের গহিনে আটকা পড়েছিলেন এক চিকিৎসকসহ দুই পর্যটক। খবর পেয়ে সীতাকুণ্ড ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের উদ্ধারকারী দল হারিয়ে যাওয়ার ছয় ঘণ্টা পর তাঁদের উদ্ধার করে পাহাড় থেকে নামিয়ে আনেন। গতকাল মঙ্গলবার বেলা দুইটার দিকে তাঁরা পথ হারান। এরপর রাত আটটার দিকে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা তাঁদের উদ্ধার করে।
উদ্ধার হওয়া পর্যটকেরা হলেন ঢাকার বিআরপি হাসপাতালের চিকিৎসক আরেফিন ও চট্টগ্রামের এক শিক্ষার্থী মো. মনির উদ্দিন। চিকিৎসক আরেফিন থাকেন ঢাকার ধানমন্ডি এলাকায়। মনির উদ্দিনের বাড়ি চট্টগ্রামের আনোয়ারায়। সীতাকুণ্ড ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের জ্যেষ্ঠ স্টেশন কর্মকর্তা নুরুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল মঙ্গলবার সকালে ১২ জনের এক দল পর্যটক ভূমি থেকে প্রায় ৯০০ ফুট ওপরে থাকা সহস্রধারা ঝরনায় যান। দুপুরে তাঁরা ঝরনায় গোসল করে ফিরছিলেন। এ সময় তাঁরা পাহাড়ি ছড়া দিয়ে ঢল নামতে দেখেন। এতে তাঁরা ভীত হয়ে পড়েন। তাঁরা ছড়া পার না হয়ে বিকল্প পথে ফেরার চেষ্টা করেন।
এতেই বিপত্তি ঘটে। বিকল্প পথ খুঁজতে গিয়ে তাঁরা পাহাড়ের গহিনে চলে যান। দীর্ঘ সময় পথ না পেয়ে তাঁরা পুলিশের জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯ এ ফোন করেন। এরপর তাঁরা র্যাবকেও ফোন করেন। সর্বশেষ ফায়ার সার্ভিসকে ফোন করেন।
নুরুল আলম বলেন, খবর পেয়ে তাঁর নেতৃত্বে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা দ্রুত রওনা দেন। বেলা আড়াইটার দিকে তাঁরা সহস্রধারা ঝরনায় যান। ঝরনায় পৌঁছাতে হলে পাহাড়ের টিলায় উঠে আবার নিচের দিকে নামতে হয়। তাঁরা পাহাড়ের ওই টিলা থেকে ঝরনায় নেমে হারিয়ে যাওয়া পর্যটকদের খুঁজতে থাকেন। কিন্তু ঝরনা এলাকায় কোনো মোবাইল নেটওয়ার্ক না থাকায় পর্যটকদের সঙ্গে কোনোভাবে যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছিল না। পরে তাঁরা আবার সহস্রধারার ওপরে টিলায় তাঁদের গাড়ি রাখার স্থানে চলে আসেন। এরপর তাঁদের গাড়ির সাইরেন বাজাতে থাকেন। পাশাপাশি পর্যটকদের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা বলেন। লোকেশন নিশ্চিত হওয়ার পর রাত আটটার দিকে দুই পর্যটককে উদ্ধার করেন। পরে দুজনকে সীতাকুণ্ড পৌর সদরে নামিয়ে দেন।
নুরুল আলম দুলাল বলেন, বর্ষাকালে ঝরনা এলাকায় জোঁকের উৎপাত বৃদ্ধি পায়। দুই পর্যটকের শরীরে প্রচুর জোঁক আটকে ছিল। সেগুলো তাঁদের তুলে ফেলতে হয়েছে। এ ঘটনায় পর্যটকেরা তাঁদের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।