চুয়াডাঙ্গায় আগাম শীতকালীন সবজি ফুলকপি চাষ করে ফলন না পেয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে কৃষকরা। ফসল ওঠার সময় পেরিয়ে গেলেও গাছে ফুল আসেনি। মাঠেই পঁচে নষ্ট হচ্ছে পাতা ও কান্ড। কৃষি বিভাগের কয়েকটি দল ক্ষতিগ্রস্থ ক্ষেত পরিদর্শন করেছেন। গঠন করা হয়েছে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি। ফলন বিপর্যয়ে কৃষকদের পাশে কেউ এগিয়ে না আসায় ফুঁসে উঠেছে তারা। এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ কৃষকরা ক্ষতিপূরনের দাবিতে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি পেশ করেছে।
কৃষি নির্ভরশীল জেলা চুয়াডাঙ্গা। মাঠে মাঠে আগাম শীতকালীন আবাদ নিয়ে ব্যস্ত কৃষকরা। তবে শীতকালীন ফুলকপি নিয়ে বিপাকে পড়েছেন বেলগাছি, গাড়াবাড়িয়াসহ কয়েকটি গ্রামের শতাধিক কৃষক। একটি মাঠেই অন্তত এক’শ বিঘা ফুলকপির ফলন নষ্ট হয়েছে। ফসল ওঠার সময় হলেও ফুলকপির গাছ কুকরিয়ে ঝরে পড়ছে পাতা। একটি গাছেও কপি আসছে না। সিনজেনটা কোম্পানির হোয়াইট গোল্ড কপির বীজ লাগিয়েছিলেন তারা। বীজ কেনার সময় ৫৫-৬০ দিনের মধ্যে কপি বিক্রির কথা বললেও ৭০ দিন পেরিয়ে গেলেও কপিই ধরেনি। উপরন্ত পাতা দুর্বল হয়ে ঝরে পড়ছে। ফুলকপি তুলতে পারছে না আবার ওই জমিতে নতুন আবাদ করতে পারছি না । বিঘা প্রতি ৫ থেকে ৬ প্যাকেট অর্থাৎ ৫০/৬০ গ্রাম বীজ লাগে। প্রতি প্যাকেটের মুল্য ৮ শ টাকা। জমি প্রস্তুত, সেচ, সার দিয়ে বিঘায় খরচ হয়েছে ৩৫-৪০ হাজার টাকা। এখন গাছ কেটে ফেলা ছাড়া কোন উপায় নেই। কৃষকরা ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন। একই মাঠে অন্য কোম্পানির ফুলকপি গাছ তরতাজা ও সুন্দর হয়েছে।
এদিকে বেলগাছি ও গাড়াবাড়িয়া গ্রামের ক্ষতিগ্রস্থ ফুলকপি চাষিরা চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেছে। মানববন্ধনে বক্তব্যদেন চাষী আলাউদ্দিন, শফিকুল ও তারেক। তারা প্রতারক সিনজেনটা কোম্পানির বীজের মানযাচাইসহ বিচার ও ক্ষতিপূরণ দাবি করে। পরে তারা জেলা প্রশাসকের নিকট স্মারকলিপি পেশ করেন ।
সিনজেনটা ডিলার বাচ্চু মিয়া বলেন,আবহাওয়া ও প্রাকৃতিক দূর্যোগের কারনে হোয়াইট গোল্ড জাতের বীজের ফুলকপির গাছ নষ্ট হয়ে গেছে। আসলে বীজতলা থেকে গাছ মূল জমিতে লাগাতে দেরি করায় এমনটি হতে পারে।
চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর উপ পরিচালক, মাসুদুর রহমান সরকার বলেন,আগাম সবজির মধ্যে সাড়ে ৩ হাজার হেক্টর জমিতে ফুলকপি চাষ হয়েছে। এর মধ্যে বেশ কিছু কৃষক সিনজেনটা কোম্পানির বীজ ব্যবহার করে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ঘটনায় ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে । তবে কৃষকরা যাতে সহায়তা পাই সেই বিষয়টি দেখছি।