সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলা সদরে অবস্থিত একমাত্র সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষক সংকট চলছে। ফলে বছরের পর বছর বিদ্যালয়ের পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকের ২৮টি পদ থাকলেও শিক্ষক রয়েছেন মাত্র ৭ জন। ২১টি পদ শুন্য থাকায় বিদ্যালয়ে অধ্যায়নরত ৩৯৬ জন শিক্ষার্থীর পড়াশোনা ব্যাহত হচ্ছে। ফলে আশানুরূপ ফলাফল থেকে দিন দিন পিছিয়ে পড়ছে বিদ্যালয়টি। শিক্ষক সংকট নিরসনে স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন এবং শিক্ষা বিভাগ বার বার চেষ্টা করলেও তেমন কোন কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহন করেনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ।
পাঠদান সচল রাখতে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বাধ্য হয়ে শিক্ষার্থীদের বেতনে ৪ জন খন্ডকালীন শিক্ষক নিয়োগ দিয়েছেন। খন্ডকালীন শিক্ষকের বেতন ভাতা পরিশোধ করতে অনেক শিক্ষার্থীদের অভিভাবকেরা হিমশিম খাচ্ছেন। বিদ্যালয় ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, শিক্ষক ছাড়াও বিদ্যালয়ে উচ্চমান সহকারী, অফিস সহকারী, নিরাপত্তা প্রহরী, আয়া ও পরিচ্ছন্ন কর্মীর পদ শুন্য রয়েছে। উপজেলার মধ্যে নারী শিক্ষার একমাত্র সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়টি ১৯৭৯ সালে তৎকালীন এরশাদ সরকারের আমলে প্রতিষ্ঠা লাভ করে এবং ১৯৮৬ সালে জাতীয়করণ হয়।
জাতীয় করণকালীন সময় ৯ শিক্ষক দিয়ে বিদ্যালয়টি যাত্রা শুরু করে।
১৯৮৬ সালে দেশের অন্যান্য জাতীয়করণকৃত বিদ্যালয়গুলো ২৮ জন শিক্ষকের পদ পূরণ করে জাতীয়করণ করা হয়। জগন্নাথপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক সংকট নিরসনে ২৮ শিক্ষকের পদ সৃষ্টি করার জন্য স্থানীয় লোকজন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট জোর দাবী জানান। বিদ্যালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ইকবাল মাসুদ জানান, শিক্ষক সংকটের কারণে বাধ্য হয়ে খন্ডকালীন শিক্ষকদের সাহায্য নিয়ে বিদ্যালয়ের পাঠদান চালাতে হচ্ছে। আমরা শিক্ষার মান ধরে রাখতে এবং ছাত্রীদের পরীক্ষার ফলাফল ভাল রাখতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ জাহাঙ্গীর আলম জানান, শিক্ষক সংকটের বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে। সুনামগঞ্জ জেলার বাসিন্দা নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকদের অত্র বিদ্যালয়ে নিয়োগ দিলে শিক্ষক সংকট নিরসন হবে। একমাত্র সরকারি বিদ্যালয়ের এমন সংকটময় পরিস্থিতিতে হতাশ প্রকাশ করে বিদ্যালয়ের স্বাভাবিক কার্যক্রম ফিরিয়ে আনতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবী জানিয়েছেন শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা।