X

জান্নাত ও জাহান্নাম দেখার পর মানুষের যে অনুভূতি হবে

আনাস ইবন মালেক রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন—

কিয়ামতের দিন পৃথিবীর সবচেয়ে ধনবান সুখী ব্যক্তিকে উপস্থিত করা হবে। তাকে জাহান্নামে একটি চোবানি দিয়ে উঠানো হবে। তারপর তাকে প্রশ্ন করা হবে, তুমি কি কখনো কল্যাণ দেখেছো? তুমি কি কখনো সুখ-শান্তি পেয়েছো? সে উত্তরে বলবে, না আল্লাহর শপথ! হে রব।

এরপর পৃথিবীর সবচেয়ে হতভ্যাগ্য ও দরিদ্র লোকটিকে উপস্থিত করা হবে। যে জান্নাত লাভ করেছে। তাকে জান্নাতে একটি চুবানি দেওয়া হবে। তারপর তাকে প্রশ্ন করা হবে, তুমি কি কখনো অভাব দেখেছো? তুমি কি কখনো কষ্টে পতিত হয়েছিলে? সে উত্তরে বলবে, না, আল্লাহর শপথ হে রব! আমি পৃথিবীতে কখনো কষ্ট দেখিনি। কখনো বিপদে পড়িনি। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ২৮০৭)

এ হাদিসে দু’ব্যক্তির দৃষ্টান্ত তুলে ধরা হয়েছে। প্রথম ব্যক্তি জাহান্নামের আজাবের একটু ছোঁয়া পেয়ে পৃথিবীর সব সুখের কথা একেবারে ভুলে যাবে। আর দ্বিতীয় ব্যক্তি জান্নাতের একটু ছোঁয়া পেয়ে পৃথিবীর সব দুঃখ কষ্টের কথা ভুলে যাবে।

অপর এক হাদিসে আনাস ইবন মালেক রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন—

কিয়ামতের দিন জান্নাত লাভকারী এক ব্যক্তিকে উপস্থিত করা হবে। তাকে বলা হবে, হে মানব সন্তান! তুমি তোমার ঘর কেমন পেয়েছো? সে উত্তরে বলবে, হে প্রভূ! সর্বোৎকৃষ্ট ঘর পেয়েছি। আল্লাহ তায়ালা তাকে বলবেন, কিছু চাও, কিছু আকাঙ্খা করো। সে উত্তরে বলবে আমি কিছু চাই না, কিছুই আকাঙ্খা করি না। শুধু আকাঙ্খা করি যদি আমাকে পৃথিবীতে ফেরৎ পাঠিয়ে দিতেন আর আমি আপনার পথে দশবার নিহত (শহীদ) হতে পারতাম। সে এ কথা বলবে যখন জান্নাতে শহীদের মর্যাদা দেখতে পাবে।

এরপর জাহান্নামীদের থেকে এক ব্যক্তিকে উপস্থিত করা হবে। তাকে বলা হবে হে মানব সন্তান! তোমার ঠিকানা কেমন পেয়েছো? সে বলবে, সবচেয়ে নিকৃষ্ট স্থান পেয়েছি। তাকে প্রশ্ন করা হবে পৃথিবী পরিমাণ স্বর্ণ খরচ করে হলোও তুমি কি এ অবস্থান মুক্তি কামনা করবে?

সে বলবে, হ্যাঁ, হে প্রভূ! আল্লাহ বলবেন, তুমি মিথ্যা বলেছো। জাহান্নাম থেকে মুক্তির বিনিময়ে তোমার কাছে এর চেয়ে অনেক কম ও অনেক সহজ বিষয় চাওয়া হয়েছিলো তা-ই তুমি পারোনি। এরপর তাকে আবার জাহান্নামে ফেরত পাঠানো হবে। (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ১৩১৬২)

এ হাদিস থেকে বোঝা যায়, একজন জান্নাতি ব্যক্তি পৃথিবীর কোনো কিছু আকাঙ্খা করবে না। শুধু আল্লাহর পথে যুদ্ধ করে নিহত হওয়া কামনা করবে। কারণ, সে যখন কিয়ামতের দিন শহীদদের অভাবনীয় মর্যাদা দেখবে তখন এটা ছাড়া আর কিছু কামনা করবে না। এ হাদিসের মাধ্যমে আমরা আল্লাহর পথে যুদ্ধ করে শহীদ হওয়ার ফজিলত ও মর্যাদা জানতে পারলাম।

জাহান্নাম থেকে মুক্তি ও জান্নাত লাভ করার জন্য চেষ্টা-প্রচেষ্টা করা খুব কঠিন কাজ নয়।

Categories: ধর্ম
Main Admin:
X

Headline

You can control the ways in which we improve and personalize your experience. Please choose whether you wish to allow the following:

Privacy Settings