X

ডেটিং অ্যাপে নারী সেজে প্রতারণা, ৫৩ কোটি টাকা হাতিয়ে নিল চক্রটি

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে অনুমতি ছাড়া নারীদের ছবি ডাউনলোড করে ডিপফেক প্রযুক্তি ব্যবহার করে পরিবর্তন আনত একটি চক্র। সেগুলো দিয়ে ছবি ও ভিডিও তৈরি করে ডেটিং অ্যাপর ভুয়া অ্যাকাউন্টে ব্যবহার করত। ভিডিও কলে পরিচয় গোপন করতেও ডিপফেক ব্যবহার করত। তারপর ছেলেদের প্রেমের ফাঁদে ফেলে ভুয়া অ্যাসেট প্ল্যাটফর্মে বিনিয়োগের প্ররোচিত করে অর্থ হাতিয়ে নিত প্রতারকেরা।

এভাবে প্রায় ৩ কোটি ৪০ লাখ হংকং ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৫৩ কোটি ২ লাখ টাকা) হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে ৩১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে হংকং পুলিশ। রবিবার সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।

এক সংবাদ সম্মেলনে হংকং পুলিশের সুপারিনটেনডেন্ট ফাং পুই-কেই বলেন, তরুণদের বিশেষ করে ছাত্রদের দ্রুত অর্থ আয়ের প্রলোভন দেখিয়ে এই কার্যক্রমে যুক্ত করা হতো। নতুন নিয়োগপ্রাপ্তদের বিভিন্ন ডেটিং অ্যাপ ব্যবহার করে টার্গেট খোঁজার প্রশিক্ষণ দিত। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো, বিশেষ করে তাইওয়ান, সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়া এই চক্রের প্রধান লক্ষ্য ছিল। অনলাইনে ভুয়া নারী অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে আগে প্রেমের সম্পর্কে জড়াতে আকৃষ্ট করা হতো। তারপর তাদের একটি ভুয়া ভার্চুয়াল অ্যাসেট প্ল্যাটফর্মে বিনিয়োগ করার জন্য প্ররোচিত করত।

ভুয়া অ্যাকাউন্টকে বিশ্বাসযোগ্য করে তুলতে এই চক্রটি ধনী ও আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্বের অধিকারী ব্যক্তির অ্যাকাউন্ট হিসেবে সাজাত। গাড়ি-বাড়ি এমনকি ক্রিপ্টোকারেন্সি বিনিয়োগকারীদের আয়োজনের ছবিও ওই অ্যাকাউন্টে দেখানো হতো।

হংকং পুলিশের বাণিজ্যিক অপরাধ বিভাগের বরাতে জানানো হয়, স্থানীয় একটি চক্রের এই সদস্যদের মূল লক্ষ্য ছিল তাইওয়ান, সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়ার নাগরিকেরা। চক্রটি কোউলুন বে এলাকায় পাশাপাশি দুটি বাণিজ্যিক ভবন ভাড়া নিয়ে তাঁদের কার্যক্রম চালাত।

গ্রেপ্তারকৃতদের বয়স ২০ থেকে ৩৪ বছরের মধ্যে, যাদের বেশিরভাগই বেকার। এদের মধ্যে কিছু ছাত্রও ছিলেন। দুই শিফটে কাজ করত এই চক্র।

বাণিজ্যিক অপরাধ বিভাগের সিনিয়র ইন্সপেক্টর ফং সি-উইং সাংবাদিকদের জানান, অভিযুক্তরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে অনুমতি ছাড়া নারীদের ছবি ডাউনলোড করে ডিপফেক প্রযুক্তি ব্যবহার করে পরিবর্তন আনত। সেগুলো দিয়ে ছবি ও ভিডিও তৈরি করে ভুয়া ডেটিং অ্যাপ চরিত্রগুলোতে ব্যবহার করত। প্রতারকেরা ভিডিও কলে পরিচয় গোপন করতেও ডিপফেক ব্যবহার করেছে।

তিনি আরও বলেন, ‘প্রতারকেরা সম্ভবত মডেলদের ভাড়া করে ভিডিওর জন্য অভিনয় করায়। পরে সেগুলো থেকে ডিপফেক কনটেন্ট তৈরি করে।’

অভিযানে দুই কার্যালয় এবং চক্রের দুই হোতার বাসভবন থেকে কম্পিউটার, মোবাইল ফোন এবং বিলাসসামগ্রীসহ ১০ মিলিয়ন হংকং ডলারের বেশি সম্পদ জব্দ করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে ভারপ্রাপ্ত চিফ সুপারিনটেনডেন্ট ফ্যানি কং হিং-ফান বলেন, ‘অভিযানে জব্দ আসবাব ও নথিপত্র থেকে ধারণা করা যাচ্ছে, এই দুই কার্যালয়ে দুই থেকে তিন মাস ধরে কাজ করছে তাঁরা। তবে অন্যান্য জায়গায় মিলিয়ে এ চক্রটি এক বছরেরও বেশি সময় ধরে এই প্রতারণা কার্যক্রম চালিয়ে আসছে।’

পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেপ্তারদের মধ্যে পাঁচজনকে আগামীকাল সোমবার আদালতে নেওয়া হবে। বাকি ২৬ জনকে জামিনে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। তবে তদন্ত চলতে থাকবে।

 

Main Admin:
X

Headline

You can control the ways in which we improve and personalize your experience. Please choose whether you wish to allow the following:

Privacy Settings