ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গোর (ডিআরসি) পূর্বাঞ্চলে চলমান রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে গত জানুয়ারি থেকে প্রায় ৭ হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন। দেশটির প্রধানমন্ত্রী জুডিথ সুমিনওয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। আল-জাজিরা সূত্রে জানা গেছে, গত জানুয়ারিতে সংঘর্ষ শুরু হওয়ার পর থেকে প্রায় দুই মাসে এই বিপুল সংখ্যক মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে।
সুইজারল্যান্ডের জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদে বক্তব্য দেয়ার সময় সুমিনওয়া সতর্ক করে বলেন, পূর্ব ডিআরসির নিরাপত্তা পরিস্থিতি ভয়াবহ পর্যায়ে পৌঁছেছে। গত মাস থেকে এই সংঘর্ষে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর মতে, শুধু উত্তর কিভু প্রদেশের রাজধানী গোমায় প্রায় ৩ হাজার মানুষ নিহত হয়েছে।
তিনি আরও জানান, আড়াই হাজারের বেশি মরদেহ শনাক্ত না করে দাফন করা হয়েছে এবং ১ হাজার ৫০০ মরদেহ মর্গে রয়েছে। জানুয়ারি থেকে প্রতিবেশী রুয়ান্ডা সমর্থিত এম-২৩ বিদ্রোহীগোষ্ঠী পূর্ব ডিআরসির বিস্তীর্ণ এলাকা দখল করেছে, যার মধ্যে গোমা এবং বুকাভু শহরের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থান রয়েছে। এই বিদ্রোহী গোষ্ঠীর দ্রুত অগ্রযাত্রা বিশ্বনেতাদের উদ্বেগ বাড়িয়েছে।
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এই সংঘাতকে “ভয়ংকর ঘূর্ণিঝড়” বলে অভিহিত করেছেন এবং সতর্ক করেছেন যে, এটি পুরো অঞ্চলের ধ্বংসের কারণ হতে পারে।
এদিকে, ডিআরসি, জাতিসংঘ এবং পশ্চিমা দেশগুলো রুয়ান্ডার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে যে, তারা বিদ্রোহীদের অস্ত্র ও সৈন্য সহায়তা দিচ্ছে, তবে কিগালি এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। সুমিনওয়া আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে রুয়ান্ডার বিরুদ্ধে ‘প্রতিরোধমূলক নিষেধাজ্ঞা’ আরোপ করার আহ্বান জানান। তিনি আরও বলেন, সংঘর্ষের ফলে লক্ষাধিক মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে এবং সশস্ত্র গোষ্ঠীটি নির্বিচারে হত্যাকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে।
গুতেরেস কঙ্গোর সার্বভৌমত্ব ও ভৌগোলিক অখণ্ডতা সম্মান করার আহ্বান জানিয়ে এই পরিস্থিতি থেকে বের হয়ে আসার জন্য আন্তর্জাতিক পদক্ষেপের গুরুত্ব তুলে ধরেছেন।