সিনেমার মতো দক্ষিণ ভারতের রাজনীতিও উত্তরের চেয়ে অনেক পৃথক ধাঁচের। তারকানির্ভরতা তামিল, তেলেগু, মালয়ালম ছবির চিরচেনা বৈশিষ্ট্য। ঠিক তার মতোই তামিল রাজনীতিরও একটি ঐতিহাসিক বৈশিষ্ট্য—সিনেমার তারকারা এখানে একপর্যায়ে রাজনীতিতে নামেন এবং ভোটের রাজনীতিতে প্রতিপক্ষকে মাত করেন। ‘প্রতিপক্ষ’রাও হয়ে থাকেন অনেক সময় সিনেমাজগতের মানুষ। ফলে বহুকাল ধরে তামিলভাষীদের রাজনীতি অনেকটা সিনেমার হিরো-ভিলেন সমীকরণের মতো চলছে। এ রকম এক ঐতিহ্যের মধে৵ই নতুন তারকা হিসেবে নিজেকে তামিল সমাজে ‘ভাইরাল’ করেছেন থালাপতি বিজয়। তাঁর কথাবার্তা মনোযোগ কাড়ছে বাংলাদেশেও।তবে অনেকে এ-ও বলছেন, বিজয় হলেন বিজেপির স্থানীয় ‘প্রক্সি’। প্রচলিত কৌশলে দক্ষিণের রাজনীতিতে সুবিধা করতে না পেরে বিজেপি কংগ্রেসবিরোধী ধারাকে শক্তি জোগাতে বিজয়কে মাঠে নামিয়ে নিজস্ব মিডিয়া সাম্রাজ্য দিয়ে প্রচার-উত্তেজনা তৈরি করছে।
বাস্তবে নাম যোশেফ বিজয় হলেও ভক্তরা তাঁকে যে ‘থালাপতি’ বলেন, সেটি তামিল চলচ্চিত্রে তাঁর পেশাগত সফলতার কারণে। তামিল ভাষায় থালাপতি অর্থ কমান্ডার, বস বা নেতা। বলাবাহুল্য, ভক্তদের দেওয়া ওই নামের জোরেই রাজনীতির পথে হাঁটছেন বিজয়।বিজয়ের দলের নাম ‘টিভিকে’ বা ‘তামিলাগা ভেট্টরি কাজাগাম’। বাংলায় ‘তামিলনাড়ুর বিজয়ী মোর্চা’। সময়ের হিসাবে এক বছর হলো দলের বয়স। বড়সড় মাত্র দুটি সমাবেশ করেছে তারা। সমাবেশগুলোয় তরুণদের ব্যাপক জমায়েত ঘটছে। সর্বশেষ সমাবেশ থেকে যোশেফ বিজয় আগামী বছর বিধানসভা নির্বাচনে অংশ নেবেন বলে জানান। এই এক ঘোষণাতেই দক্ষিণের রাজনীতি সরগরম হয়ে উঠেছে।অন্যদিকে বিজয়কে নিয়ে তামিল তরুণদের মাতামাতি দেখে ভারতজুড়ে জাতীয়ভাবে নতুন করে কিছু রাজনৈতিক হিসাব-নিকাশও শুরু হয়েছে। বিজয়ের জনসভার আকার দেখে তামিলনাড়ুর পুরোনো দল ডিএমকে ও এআইএডিএমকের পাশাপাশি রাজনৈতিক হুমকিতে আছে আরেক সিনেমা তারকা সিমানের দল ‘নাম তামিলার কাচ্চি’ বা এনটিকে।কৌতূককর দিক হলো, সিমান ও বিজয় উভয়ে রামস্বামী পেরিয়ারের আদর্শের কথা বলছেন। পেরিয়ার হলেন দক্ষিণের আম্বেদকর বা বাংলার যোগেন মণ্ডলের মতো, বর্ণবাদবিরোধী সামাজিক গুরু। এই সূত্রে বাংলাদেশে চব্বিশের ছাত্রনেতাদের কারও কারও যোগেন মণ্ডল প্রীতির সঙ্গে সিমান ও বিজয়ের রাজনীতির কিছু সাদৃশ্য মেলে।তবে বাংলাদেশের ‘চব্বিশ’-পরবর্তী রাজনীতির সঙ্গে থালাপতির চিন্তার ফারাক অনেক। তিনি নারী অধিকার ও প্রাকৃতিক সম্পদের সুরক্ষা, অর্থনৈতিক সমতা ও ধর্মনিরপেক্ষ সমাজনীতির কথা বলছেন। তাঁর বক্তব্য শুনে নিউইয়র্কের মেয়র প্রার্থী মামদানির কথাও মনে পড়ে যায়।থালাপতি নারী অধিকার ও প্রাকৃতিক সম্পদের সুরক্ষা, অর্থনৈতিক সমতা ও ধর্মনিরপেক্ষ সমাজনীতির কথা বলছেন।
তামিলনাড়ুর রাজনীতিতে ওলট–পালট ঘটবে কি
রাজনৈতিক আদর্শবাদের চেয়েও বিজয়কে নিয়ে বড় প্রশ্ন উঠেছে—তিনি তামিল রাজনীতির দ্বিদলীয় ব্যবস্থা ভাঙতে পারবেন কি না?
বহুকাল তামিলভাষীদের বড় অংশ দুটি দলের সমর্থক হিসেবে বিভক্ত। একটি দ্রাবিড় মুনেত্রা কাজাগাম (ডিএমকে) এবং অন্যদিকে নিখিল ভারত আন্না দ্রাবিড় মুনেত্রা কাজাগাম (এআইএডিএমকে)। সমকালীন ভোটের আসরগুলোয় এই দুই দল চার ভাগের তিন ভাগ ভোট পেয়েছে। ৫০ বছর ধরে তামিল সমাজে ও সেখানকার ভোটে এই দ্বিদলীয় মেরুকরণ চলছে।বিজেপি সারা দেশে নিজ আধিপত্যের পরও তাতে চিড় ধরাতে পারেনি। ২০২৪ সালের নির্বাচনেও বিজেপি ও তাদের এনডিএ জোট এখানে আসন পায়নি। আসনের ৩৯টাই পায় কংগ্রেস ও তাদের স্থানীয় মিত্র ডিএমকে ও বাম দলগুলো। শেষোক্ত দলগুলোর এই একচেটিয়া অবস্থা কি বিজয় বদলাতে পারবেন? এ নিয়েই দক্ষিণের রাজনীতির তাবৎ গবেষণা চলছে এখন। এর মধে৵ই বিজয় থালাপতি জানান, আগামী বছর তিনি মাদুরাই থেকে বিধানসভার একটি আসনে নির্বাচনে লড়বেন।তামিলনাড়ুর সাংস্কৃতিক রাজধানী বলা হয় মন্দিরের শহর মাদুরাইকে। এখানে প্রভাব বিস্তারে সক্ষম ও সফল ব্যক্তিরা পুরো তামিলনাড়ুকে প্রভাবিত করতে পারেন। একই সূত্রে মাদুরাই বহু রাজনীতিবিদের জন্য বধ্যভূমির স্মৃতির মতোও বটে। দক্ষিণের রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক কেন্দ্র হিসেবে গুরুত্বের কারণেই গান্ধী তাঁর রাজনৈতিক জীবনে পাঁচবার গিয়েছিলেন এখানে।নির্বাচনী আসন হিসেবে বিজয়ের মাদুরাইকে বেছে নেওয়ার আরেক কারণ, এখানে রয়েছে তাঁর বড় এক ভক্তকুল। বিজয়ের ব্যাপারে বিজেপির উৎসাহের কিছু উত্তর আছে তাঁর মাদুরাইকে যুদ্ধময়দান হিসেবে বেছে নেওয়ার মধে৵। বর্তমানে এখানকার লোকসভার এমপি সাম্যবাদী লেখক সিপিএমের ভেঙ্কটেশন।মাদুরাইয়ের মন্দিরগুলো, বিশেষ করে মুরুগান মন্দিরকে কেন্দ্র করে বিজেপি ও সংঘ-পরিবার তামিলনাড়ুতে হিন্দুত্ববাদী একটি উত্তেজনা ছড়াতে চেষ্টা করছে অনেক দিন। একই পাহাড়ের ওপর অবস্থিত মুরুগান মন্দিরের পাশেই রয়েছে সিকন্দার দরগা। এই দরগায় আগে রজব মাসের ওরসের সময় মুরিদদের দেওয়া ছাগল জবাইয়ের রেওয়াজ ছিল। বিজেপির বাধায় সেটি এখন বন্ধ। এ নিয়ে বেশ উত্তেজনাও আছে, যদিও মন্দির ও দরগার পাশাপাশি উপস্থিতি এখানকার ধর্মীয় শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের কথাও জানায়।
বিজয় কি বিজেপির প্রক্সি
তামিলভাষীদের মধে৵ বিজয়ের সাম্প্রতিক অতিসক্রিয়তা দেখে অনেকে এ-ও বলছেন, ২০২৬ সালের রাজ্য নির্বাচনে বিজেপির প্রক্সি হিসেবে নেমেছেন তিনি। এই বক্তব্যের পক্ষে যুক্তি বেশি নেই। তবে কিছু কারণে এই অনুমান উড়িয়ে দেওয়ার মতোও নয়। আবার বিজয় হঠাৎ রাজনীতিতে নেমেছেন, সেটিও বলা যায় না।২০০৯ থেকে বিজয় ভক্তদের দিয়ে রাজনৈতিক কাজে লিপ্ত আছেন। দল গঠনের আগে ‘বিজয়-ইয়াক্কাম’ (বিজয়ের অভিযান) নামে তাঁর একটি তরুণ কাফেলা ছিল। সেটাকেই এখন তিনি ‘তামিলাগা ভেট্টরি কাজাগাম’(টিভিকে) হিসেবে সাজিয়েছেন।বিজয়-ইয়াক্কাম প্রথম দিকে বিজেপির জাতীয়ভিত্তিক এনডিএ জোটের তামিল শরিক এআইএডিএমকে দলকে স্থানীয় নির্বাচনে সহযোগিতা করত। এআইএডিএমকে দল দিয়ে এনডিএ তামিলনাড়ুতে কংগ্রেস জোটকে সামলাতে পারছে না। সে কারণে বিজয়কে দিয়ে বিজেপি দক্ষিণে নতুনভাবে ভাগ্য পরীক্ষা করতে চাইতে পারে।তবে থালাপতি বলছেন, বিজেপি তাঁর ‘ভাবাদর্শিক শত্রু’। আর ‘রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী’ হলো ডিএমকে দল, যারা এখন তামিলনাড়ুতে ক্ষমতায় আছে। যেহেতু তামিলনাড়ুতে ডিএমকে হলো কংগ্রেসের মিত্র এবং এখানে ভোটের রাজনীতিতে বিজেপি বড় কোনো ফ্যাক্টর নয়, ফলে খুব সহজে বোঝা যায়, বিজয়ের জয়রথ মূলত জাতীয় ও আঞ্চলিকভাবে কংগ্রেস ও তার মিত্রদের টার্গেট করে এগোচ্ছে। তাতে লোকসভা ও বিধানসভায় ফায়দা হবে বিজেপি ও এনডিএ জোটের।অন্যদিকে বিজেপি পরিবারের অভ্যন্তরীণ হিসাব হলো, তারা তামিল রাজনীতিতে জায়গা করে নিতে অনেক দিন ধরে পরোক্ষে বিভিন্ন পেশার তারকাদের দিয়ে চেষ্টা করে বারবার ব্যর্থ হয়েছে। এর মধে৵ একবার তারা চেষ্টা করে কর্ণাটকের সাবেক রাষ্ট্রীয় কর্মকর্তা আন্নামালাইকে দিয়ে। আন্নামালাইকে তামিলনাড়ু বিজেপির প্রধান করা হয়। অভিনেতা সিমান ও রজনীকান্তকেও বিজেপি পরোক্ষ মদদ দিয়েছে, কিন্তু তাতে সফলতা আসেনি এই রাজ্যে।
রজনীকান্ত রাজনৈতিক ভাগ্য পরীক্ষায় নেমেছিলেন ২০০২ থেকে এবং অনেক কৌশলের পাশাপাশি বিজেপির রাজনীতির অন্ধ অনুসারী হয়েও মাঠপর্যায়ে শুভসূচনায় ব্যর্থ হন। একসময় বিজেপির যোগী আদিত্যনাথকে পা ছুঁয়ে সম্মান জানাতেও দেখা গিয়েছিল রজনীকান্তকে। নিজ দলের প্রতীক হিসেবে প্রথমে নিয়েছিলেন পদ্ম এবং পরে নেন গোখরা সাপ। দুটিই আরএসএস পরিবারের ধর্মীয় প্রতীক। শেষমেশ তিনি শারীরিক অসুস্থতার কথা বলে সক্রিয় রাজনীতির বদলে জনকল্যাণে সীমিত থাকার কথা জানান।অনেকের অনুমান, দক্ষিণের মেগা স্টার হলেও পারিবারিক মারাঠি পরিচয় তামিল রাজনীতিতে তাঁর জন্য বাধা হয়ে দাঁড়াত। এটি বুঝেই রজনীকান্ত মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার ইচ্ছাকে দমন করেছেন। তাতে করে তাঁকে নিয়ে বিজেপির স্বপ্নও দমিত হয়ে গেছে।এ রকম পরীক্ষা-নিরীক্ষার পটভূমিতেই বিজয়ের উত্থানকে বিজেপির আরেক ছদ্ম প্রকল্প হিসেবে সন্দেহ করেন কেউ কেউ। এই সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ একজন হলেন তামিলনাড়ুর স্পিকার এম আপ্পাভুও। যিনি গত চার বিধানসভায় এমপি হিসেবে আছেন। প্রকাশ্যেই তিনি তাঁর সন্দেহের কথা বলে থাকেন।
বিজয় নিজে খ্রিষ্টান হওয়ায় তামিল খ্রিষ্টানদের বড় অংশ নির্বাচনে তাঁর প্রতীক পছন্দ করতে পারে। এটা কংগ্রেস, ডিএমকে ও বামপন্থী জোটের জন্য সুবিধাজনক নয়।এই রাজ্যের খ্রিষ্টানরা বহুকাল ধরে কংগ্রেস ও বামদের সমর্থক। গণিতের হিসাবে খ্রিষ্টান-তামিল ভোট ছয় ভাগ হলেও জয়-পরাজয়ে তারা বেশ নির্ধারক ভূমিকা রাখে। বিজয়ের ধর্মনিরপেক্ষতার আওয়াজ স্থানীয় মুসলমানদের জন্যও স্বস্তিকর। তাদেরও ছয় ভাগ ভোট আছে এই রাজ্যে। এ রকম ভোটব্যাংকগুলোকে কাছে টানতে চাইছেন বিজয়।কেউ কেউ আবার মনে করছেন, বিজয় যেহেতু ডিএমকে-কংগ্রেস জোটের প্রধান প্রতিপক্ষ হতে চাইছেন, সে কারণে ওই জোটের এত দিনের প্রতিপক্ষ এআইএডিএমকে-বিজেপির ভোটই তিনি কাটবেন। এ রকম বিতর্কে তৃতীয় মত হলো আঞ্চলিক বা জাতীয় কোনো দলের সঙ্গে জোট পাকানো ছাড়া বিজয়ের পক্ষে রাজনীতির ‘থালাপতি’ বা কমান্ডার হওয়া দুরূহ।
জনপ্রিয়তার পাশাপাশি বড় শক্তি যখন বিত্ত
বিজয়ের রাজনীতি করতে চাওয়ার পেছনে তাঁর শক্তিশালী আর্থিক ভিত্তিও টনিকের মতো কাজ করছে। দক্ষিণের সুপারস্টারদের মধ্যে পেশাগত ও রাজনৈতিক প্রতিযোগিতার বাইরে অর্থবিত্তের একটি নীরব প্রতিযোগিতাও চলমান। সেই যুদ্ধে বিজয়ের অবস্থান এখন ষষ্ঠ। ২০২১ সালের হিসাবেই তাঁর সম্পদ সাড়ে ৪০০ কোটি রুপির বেশি ছিল বলে অনুমান করা হয়, যা কমল হাসানের চেয়েও বেশি, তবে রজনীকান্তের চেয়ে সামান্য কম।২০২৩-২৪ সালে বিজয় ৮০ কোটি রুপি কর দিয়ে করদাতা তারকাদের তালিকায় সবচেয়ে ওপরে ছিলেন। দ্য গ্রেটেস্ট অব অলটাইম মুভির ব্যাপক ব্যবসা বিজয়ের কোষাগারকে বিশেষভাবে সমৃদ্ধ করে। তামিলনাড়ুতে প্রথম সপ্তাহে এই ছবি ১৭৮ কোটি রুপি ব্যবসা করে। লিও ছবি থেকে তিনি ১৩০ কোটি রুপি সম্মানী নেন বলে খবর বের হয়েছিল। আর জন নায়ক থেকে ২৭৫ কোটি সম্মানী নিয়ে এই জগতে রেকর্ড গড়েছেন। এটা ছিল তাঁর ৬৯তম মুভি। এগুলোর আয় যোগ হয়ে তাঁর সম্পদের পরিমাণ আরও অনেক বেড়েছে বলে ধারণা করা যায়। এ রকম বিত্তশালী কেউ যখন তামিলনাড়ুতে নির্বাচনী যুদ্ধে নামবেন, তখন স্বাভাবিকভাবে সাধারণ পেশা থেকে আসা অন্যান্য দলের রাজনীতিবিদদের জন্য সেটি অসম এক লড়াই হয়ে উঠবে। মাদুরাইয়ের স্বল্পবিত্তের বামপন্থীদের জন্য বিজয়কে রুখে দাঁড়ানো কঠিনই বটে।
সংগত কারণেই কংগ্রেস ও বিজেপি সবাই এখন বিজয়কে জোটে ডাকছে! কংগ্রেস ইতিমধ্যে বিজয়কে জাতীয় জোট এনডিএতে শরিক হতে আহ্বান জানিয়েছে। কংগ্রেস নেতারা বলছেন, বিজয় যদি প্রকৃতই বিজেপিকে ‘আদর্শিক শত্রু’ মনে করে, তাহলে কংগ্রেসই তাঁর স্বাভাবিক মিত্র হওয়ার কথা!
আবার অমিত শাহ এরই মধ্যে বলে রেখেছেন, বিজয় আগ্রহী হলে বিজেপি টিভিকের সঙ্গে জোট করতে প্রস্তুত। তবে বিজয় এনডিএ এবং বিজেপি উভয়েরই কিছু কিছু সমালোচনা করে এখনো কৌশলগতভাবে স্বতন্ত্র একটি ভাবমূর্তি ধরে রেখেছেন!
সিনেমাস্টার রাজনীতিবিদদের অতীত অভিজ্ঞতা কী রকম
তামিলনাড়ুতে অভিনেতা কাম রাজনীতিবিদদের তালিকা দীর্ঘ। এর মধে৵ রামচন্দ্র কিংবা জয়ললিতা সফল হলেও ব্যর্থদের তালিকাও ছোট নয়। সম্প্রতি ব্যর্থতার বড় নজির কমল হাসান ও তাঁর দল ‘মাক্কাল নিদি মাইয়াম’ (জনন্যায় কেন্দ্র)। তার আগে শিবাজি গণেশন ও রজনীকান্তও মুখ্যমন্ত্রী হতে গিয়ে পারেননি।তবে পর্দার লোকেরা অনেকে আবার এখানে সফলও হয়েছেন এবং রীতিমতো পরিবারতন্ত্রও কায়েম করেছেন। অভিনেতা আন্নাদুরাইয়ের মাধ্যমে ১৯৬৭ সালে এই ধারার সূচনা। তখন তিনি ক্ষমতাচ্যুত করেন শক্তিধর কংগ্রেসকে। তারপর নায়ক রামচন্দ্র ১৯৭৭ সালে আন্নাদুরাইয়ের ডিএমকে দলকে হারান। রামচন্দ্রের পর তাঁর দল চলেছে নায়িকা-বান্ধবী জয়ললিতার হাত ধরে।বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী স্ট্যালিন হলেন সাবেক মুখ্যমন্ত্রী করুণানিধির ছেলে। করুণানিধি ছিলেন তামিল সিনেমাজগতের নামকরা স্ক্রিপ্টরাইটার। তিনি পাঁচবার মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। জয়ললিতা ছিলেন ২৫ বছর। রামচন্দ্র ছিলেন ১০ বছর। এ রকম হিসাব থেকেই স্পষ্ট, তামিলনাড়ুর নির্বাচনী রাজনীতি কীভাবে সেখানকার সিনেমা তারকাদের দখলে। থালাপতি পুরোনো সেই ঐতিহ্যে কেবল নিজেকে যুক্ত করতে চাইছেন। সেই সুযোগে বিজেপি চাইছে তাদের জাতীয় ও আঞ্চলিক প্রতিপক্ষের ধরাশায়ী।