X

দেশের মাটিতে বিদেশি আনারস

দেশের মাটিতেই হচ্ছে বিদেশি জাতের আনারস। পরীক্ষামূলক চাষেই ভালো ফলন হয়েছে। এতে দেশের কৃষি অর্থনীতিতে এক নতুন দিগন্তের উন্মোচন হবে বলে মনে করছে কৃষি বিভাগ। সম্প্রতি মৌলভীবাজারে শ্রীমঙ্গলে কৃষি বিভাগের উদ্যোগে ফিলিপাইন থেকে আমদানিকৃত উচ্চফলনশীল এমডি-২ জাতের আনারসের পরীক্ষামূলক চাষ করা হয়। উপজেলার রাধানগর ডলুছড়া ও মহাজিরাবাদ এলাকায় প্রায় পাঁচ হেক্টর জমিতে এই জাতের আনারসের চাষ করা হয়।

স্থানীয় কৃষি অফিস থেকে জানা যায়, এমডি-২ আনারস হেক্টর প্রতি উৎপাদন হয় ১৫ থেকে ১৬ টন। এই জাতের আনারস বিশ্বজুড়ে ‘গোল্ডেন সুইট’ বা ‘এক্সট্রা সুইট পাইনআপেল’ নামে পরিচিতি। ফিলিপাইন, কোস্টারিকা, থাইল্যান্ডের মতো দেশে বাণিজ্যিকভাবে চাষ হয়। এই আনারস শুধু স্বাদে নয়, পুষ্টিতেও সমৃদ্ধ। এটি প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, ব্রোমেলিন নামের হজম সহায়ক এনজাইম এবং স্বল্প ক্যালোরির একটি স্বাস্থ্যকর ফল। মৌলভীবাজার  ছাড়াও  টাঙ্গাইল, চট্টগ্রাম, সিলেট, রাঙামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি জেলায় প্রথমবারের মতো ফিলিপাইনের এমডি-২ জাতের আনারস পরীক্ষামূলক চাষ করা হয়েছে। এসব জেলার ৩৮০ জন চাষীকে ২ হাজার ২৫০টি করে ফিলিপাইনের এমডি-২ জাতের চারা বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়েছিল। সব জেলায় পরীক্ষামূলক চাষ সফল হয়েছে। তবে সাত জেলার উৎপাদিত আনারসের মধ্যে শ্রীমঙ্গলে উৎপাদিত আনারস গুণে, মানে ও স্বাদে অনন্য হয়েছে। শ্রীমঙ্গল ডলুছড়া গ্রামের কৃষক আতর আলী বলেন, তিনি ২২ শতাংশ জমিতে ২ হাজার ২৫০টি চারা রোপণ করেছেন। এখন পর্যন্ত ৪০ হাজার টাকার আনারস বিক্রি করেছেন। সামনের রমজান মাসে আরও ভালো বিক্রি হবে বলে আশা করছেন তিনি। তিনি আরও বলেন, আমাদের দেশি আনারস দ্রুত পচন ধরে যায়। কিন্তু এমডি-২ জাতের আনারস পাকার পর ১০ থেকে ১৫ দিন রাখা যায়। আমাদের জন্য এই জাতটি ভালো হবে।

মহাজিরাবাদ গ্রামের কৃষক শফিক মিয়া বলেন, তিনি ৩০ শতাংশ জমিতে এমডি-২ জাতের ২ হাজার ৫০০ আনারস চাষা লাগিয়েছেন। ফলন ভালো হবে বলে মনে করছেন। শ্রীমঙ্গল কৃষি অধিদপ্তরের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. মাসুকুর রহমান বলেন,  ফিলিপাইন থেকে আনা এমডি-২ জাতের আনারসের চারাগুলো কয়েক মাস আগে এ উপজেলার নির্দিষ্ট কিছু বাগানে পরীক্ষামূলকভাবে রোপণ করা হয়। শুরু থেকেই চারাগুলোর বৃদ্ধি স্বাভাবিক ছিল। গাছে ফল আসে নির্ধারিত সময়েই। ফলের আকৃতি, রং, স্বাদ সবই আন্তর্জাতিকমানের। শ্রীমঙ্গল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দিন বলেন, ‘আমাদের এলাকার মাটি এই জাতের আনারস চাষের জন্য উপযোগী। পরীক্ষামূলক ফলাফল দেখে আমরা ব্যাপকহারে চাষে যাওয়ার কথা ভাবছি। এই জাতটি স্থানীয় জাতের তুলনায় অধিক ফলনশীল ও রসালো। ফলে বাজারমূল্যও ভালো পাওয়া যাচ্ছে।’

মৌলভীবাজার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক নিলুফার ইয়াসমিন মোনালিসা সুইটি বলেন, ‘এমডি-২ আনারসের বড় বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এটি সহজে নষ্ট হয় না, দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করা যায় এবং রপ্তানিযোগ্য মান বজায় থাকে। তাই এমডি-২ আনারস হতে পারে বাংলাদেশের ফল উৎপাদনে এক নতুন দিগন্ত।’

Md Abu Bakar Siddique:
X

Headline

You can control the ways in which we improve and personalize your experience. Please choose whether you wish to allow the following:

Privacy Settings