নওগাঁয় হত্যা মামলার দুই আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। একই মামলার অন্য দুই আসামিকে ১০ বছরের আটকাদেশ দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) নওগাঁ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক মেহেদী হাসান তালুকদার এ রায় দেন।
অপর একটি রায়ে ধর্ষণ ও পর্নোগ্রাফি মামলায় দুই আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তাদের ১ লাখ টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
রায় ঘোষণার সময় মৃত্যুদণ্ড ও যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) নওগাঁ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল-২-এর বিশেষ কৌঁসুলি অ্যাডভোকেট রেজাউল করিম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন মিশু এবং পিংকি। ১০ বছরের আটকাদেশপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন হুজাইফা এবং সাজু আহমেদ। ধর্ষণ ও পর্নোগ্রাফি মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন মোরশেদ ও রবিউল। এ ছাড়া এ মামলায় সুলতানা পারভিন নামে এক নারীকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, পিংকি ছদ্মনাম ব্যবহার করে ভুক্তভোগী নাজমুলকে প্রেমের ফাঁদে ফেলেন। ২০২০ সালের ৬ নভেম্বর বিকেল সাড়ে ৫টায় পিংকি নাজমুলকে দেখা করার কথা বলে নারিকেলবাড়ি রোডে ডেকে নিয়ে যান। সেখান থেকে আবার জয়পুরহাটের আক্কেলপুর থানার কেসের মোড় রেললাইনে ডেকে নেন। পরদিন ৭ নভেম্বর সকাল ১০টায় আসামিরা নাজমুলের বাবার কাছে ফোন করে ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। মুক্তিপণের টাকা না পেয়ে সেখানেই নাজমুলকে খুন করেন। আসামিরা রেলগেটের উত্তর পাশে ডোবার মধ্যে লাশটি ফেলে দেন। এ ঘটনায় নাজমুলের বাবা বদলগাছী থানায় একই গ্রামের মিশু, পিংকি, হুজাইফা ও সাজু আহম্মেদের নামে অভিযোগ করেন। তদন্ত শেষে অভিযুক্তদের সম্পৃক্ততা থাকায় তা মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হয়।
অন্যদিকে, ধর্ষণ ও পর্নোগ্রাফি মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি মোরশেদ ও রবিউল ২০১০ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ভুক্তভোগীকে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে ধর্ষণ এবং ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করেন। কিন্তু রবিউল ভুক্তভোগীকে বিয়ে না করায় পরিবার তাকে অন্যত্র বিয়ে দেন। বিয়ের পরে রবিউল ওই মেয়ের স্বামীর কাছে ধর্ষণের ভিডিও এবং অশ্লীল ছবি পাঠান, যা দেখে ভুক্তভোগীর স্বামী তাকে তালাক দেন। পরে মেয়ের পরিবার রবিউলকে বিয়ে করতে বললে রবিউল বিয়েতে অস্বীকৃতি জানান। কিছুদিন পরে ভুক্তভোগীর দ্বিতীয় বিয়ে হলে রবিউল তার দ্বিতীয় স্বামীর কাছেও ধর্ষণের ভিডিও এবং অশ্লীল ছবি পাঠান। তখন ভুক্তভোগী অভিযুক্তদের নামে নওগাঁ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালে মামলা করেন।