৫ আস্টের পর নওগাঁ পুলিশের দায়িত্বহীনতা, ধীরগতিতা, রাজনৈতিক লিয়াজুয়তা, মামলা গ্রহণ ও ব্যবস্থাপনায় অনীহা, নিষিদ্ধ সংগঠনের কার্যক্রম পরিচালনা হওয়ার পরেও ব্যবস্থা গ্রহণ না করা, আওয়ামী লীগের দোসর ও নেতাদের গ্রেফতার না করাসহ ৯ দফা দাবিতে এসপি অফিস ঘেরাও করেন নওগাঁর বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা।
আজ রোববার (২২ ডিসেম্বর) দুপুর ১২ টায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা নওগাঁ পুলিশ সুপার কার্যালয়ের প্রধান ফটকে ঘেরাও করে।
এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা অভিযোগ করে বলেন, নওগাঁয় দিন দিন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি ও সন্ত্রাসীদের অবাধ তৎপরতা চলছে। কিশোর গ্যাং, চাঁদাবাজি, ছিনতাই রোধে ও সন্ত্রাসী গ্রেফতারে পুলিশ নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করছে। অবিলম্বে পুলিশের সক্রিয় ভূমিকা পালনসহ নওগাঁয় অবস্থানরত সকল আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ এবং অঙ্গসংগঠনের সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারের দাবি করে ৯ দফা দাবি তুলে ধরেন তারা। এ সময় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক আরমান, ফজলে রাব্বি ও সাদমান সাকিব বক্তব্য রাখেন।
দুপুর সাড়ে ১২ টায় আন্দোলন স্থলে নওগাঁর পুলিশ সুপার কুতুব উদ্দীন উপস্থিত হয়ে দাবি সমূহ পূরনে আশ্বাস দিলে আন্দোলনকারীরা কর্মসূচি সাময়িকভাবে স্থগিত করেন। এবং আগমানী ৭ দিনের মধ্যে উক্ত ২ থেকে ৯ দফা দাবি বাস্তবায়ন না হলে নওগাঁ জেলার সকল থানা ঘেরাও সহ কঠোর কর্মসূচি পালনের হুশিয়ারী দেন তারা।
ছাত্রদের ৯ দফা দাবি
১. আগমাতী ৪৮ ঘন্টার মধ্যে নওগাঁয় অবস্থানরত সকল আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও অঙ্গসংগঠনের সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করতে হবে।
২. জুলাই বিপ্লবে নওগাঁয় প্রকাশ্যে ছাত্র-জনতার উপর হামলাকারী আমানুজ্জামান শিউল ও ভার লাঠিয়াল বাহিনী, অর্থ ও মদত প্রদানকারী নিজাম উদ্দিন জলিল জন (নওগাঁ ৫ আসনের এমপি, সাবেক), সাব্বির রহমান রিজভী (নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সভাপতি), নূর মোহাম্মদ লাল, ইকবাল শাহরিয়াল রাসেল, বিমান কুমার রয় সহ অন্যান্যদের গ্রেপ্তার করতে হবে।
৩. বিশেষ ভদন্ত কমিটি গঠন করতে হবে। গোয়েন্দা সংস্থার মধ্যমে তাদের অতীত ইতিহাসের কুকর্ম সকলের সামনে নিয়ে এসে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
৪. সাধারণ মানুষের অভিযোগ (মামলা বা জিডি) রাজনৈতিক প্রভাব মুক্ত রাখতে হবে। কোনো রাজনৈতিক দল বা গোষ্ঠীকে সুবিধা দেওয়া যাবেনা। সকল সাধারণ মানুষের জন্য পুলিশকে সমানভাবে কাজ করতে হবে।
৫. দক্ষ, সৎ, নির্ভীক ও মাঠ পর্যায়ে অভিজ্ঞ ওসি সকল থানায় নিয়োগ দিতে হবে।
৬. বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোনলে অংশগ্রহণকারী ও সাধারণ জনগণ সহ সকলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন এবং নজরদারি বাড়ানোর ব্যবস্থা করতে হবে। নওগাঁ কিশোর গ্যাং, চাঁদাবাজ, ছিনতাই রোধে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
৭. জুলাই বিপ্লবের সময় নওগাঁয় কর্মরত যেসকল এসপি, ওসি, এসআই সহ পুলিশের কর্মকর্তা ছিলো তাদের কার্যক্রমের প্রেক্ষিতে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। একই সাথে নতুন যেসকল পুলিশ কর্মকর্তা নওগাঁতে বদলি হয়ে এসেছে তাদের পূর্ব কর্মস্থল বিশেষ করে জুলাই বিপ্লবে তাদের কার্যক্রম রিপোর্ট আকারে পেশ করতে হবে।
৮. আইন শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা রক্ষার্থে যে সুধি সমাবেশ হয়েছিল সেটি রাজনৈতিক বক্তা থাকায় সম্পূর্ণ অনুষ্ঠান রাজনৈতিক রূপ নেয় যে কারণে সাধারণ মানুষ তাদের কথা তুলে ধরতে পারেনি। সেজন্য একটি সমাবেশ আযোজন করতে হবে যেখানে রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজিকে উপস্থিত করতে হবে এবং জনসভার আযোজন করতে হবে। নওগাঁ জেলার সকল খানার ওসি কে উপস্থিত রাখতে হবে এবং জনগণ তাদের কথা তুলে ধরবে সেখানে কোন রাজনৈতিক ব্যানারে কেউ থাকতে পারবে না এবং মুক্ত আলোচনার ব্যবস্থা করতে হবে।
৯. তদন্ত কমিটি ও গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্টের ভিত্তিতে পুলিশবাদী মামলা করতে হবে।