X

নরসিংদীতে লটকনের ফলন কম, দ্বিগুণ দাম

ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্যের স্বীকৃতি পাওয়া নরসিংদীর লটকনের চাষ এ বছর বেড়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় গাছে লটকন ধরলেও ঝরে পড়েছে প্রচুর। এতে প্রায় ৭০ শতাংশ ফলন কমেছে। ফলন কম হলেও বাজারে দাম দ্বিগুণ। প্রতি কেজি লটকন বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ২৫০ টাকা দরে। এ কারণে চাষিরা কিছুটা ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারছেন।নরসিংদী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের জেলা প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা মুহাম্মদ আব্দুল হাই বলেন, ‘এ বছর জেলায় প্রায় ১ হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে লটকনের আবাদ হয়েছে। যেটা গত বছরের তুলনায় বেশি।’

তিনি জানান, গত ৬০ বছরে মাত্র তিনবার লটকনের ফলন উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। এবার ওই বিরল ঘটনাই ঘটেছে। বিষয়টি সরকারি কৃষি গবেষণা কেন্দ্রে জানানো হয়েছে। স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তারা জানান, নরসিংদীর লটকনের স্বাদ, গন্ধ ও গুণগত মান অনন্য। এখানকার লটকন দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে।

বেলাব উপজেলার আমলাব ইউনিয়নের লাখপুর, ওয়ারী, বটেশ্বর ও দক্ষিণ বটেশ্বর, শিবপুর উপজেলার জয়নগর, যোশর ও বাঘাব, আর রায়পুরার মরজাল এলাকায় লটকনের ভালো ফলন হয়। তবে এবার আবহাওয়ার কারণে এসব এলাকার গাছগুলোতেও ফল কমেছে। লাখপুর গ্রামের লটকন চাষি বাছেদ মাস্টার বলেন, ‘পুরোনো গাছে লটকন কম হয়েছে। তবে নতুন চারাগুলোতে ফলন ভালো হয়েছে। আর বাজারে দাম ভালো পাওয়ায় লোকসান হচ্ছে না।’

লটকন মৌসুমে প্রতিদিন ভোরে মরজাল বাসস্ট্যান্ডে বসছে লটকনের হাট। হাট ঘুরে দেখা গেছে, বাজার ও বাগানের দামে তেমন পার্থক্য নেই। ঢাকা থেকে সিলেটগামী রিবউল ইসলাম বলেন, ‘বাগানে গিয়েছিলাম, কিন্তু দাম একই। তাই হাট থেকেই বড় লটকন কিনছি ২২০ টাকা কেজি দরে।’ চাষি ও বাজার সংশ্লিষ্টরা জানান, চলতি মৌসুমে লটকনের দাম গত বছরের তুলনায় দ্বিগুণ। ফলে ফলন কম হলেও লাভের মুখ দেখছেন অনেকে ।

 

নরসিংদীর বিভিন্ন গ্রামে এখন বাড়ির আঙিনা থেকে শুরু করে বিস্তীর্ণ জমিতেও লটকনের চারা রোপণ করছেন স্থানীয়রা। আবাদ বাড়ছে, চাষের আগ্রহও বাড়ছে। লটকন দেখতে অনেকেই ছুটে আসছেন এসব বাগানে। বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা থেকে নারী-পুরুষ এসে ফল কিনে নিচ্ছেন বাগান থেকেই।

একই সঙ্গে কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, এ ফল স্থানীয় কৃষি অর্থনীতিতে বড় ভূমিকা রাখছে। ক্রমেই এটি লাভজনক বাণিজ্যিক ফসলে রূপ নিচ্ছে।
নরসিংদীর লটকন এখন শুধু এলাকার গর্ব নয়, দেশের অর্থনীতিতেও একটি গুরুত্বপূর্ণ নাম। ফলন বাড়াতে এবং আবহাওয়াজনিত ক্ষতি ঠেকাতে গবেষণাভিত্তিক পদক্ষেপ নেওয়ার তাগিদ দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

Md Abu Bakar Siddique:
X

Headline

You can control the ways in which we improve and personalize your experience. Please choose whether you wish to allow the following:

Privacy Settings