X

নসরুল হামিদ পরিবারের ৬৪ কোটির সম্পদ, অস্বাভাবিক লেনদেন ৩২২২ কোটি

৬৪ কোটি ২৩ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ ও ৩ হাজার ২২২ কোটি টাকার অস্বাভাবিক লেনদেনের অভিযোগে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, তার স্ত্রী ও ছেলের বিরুদ্ধে তিনটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তিন মামলায়ই নসরুল হামিদকে আসামি করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলা তিনটি দায়ের করা হয়েছে। দুদকের ঊর্ধ্বতন একটি সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

প্রথম মামলায় দুদকের উপ-পরিচালক মো. মোস্তাফিজুর রহমান বাদী হয়ে নসরুল হামিদকে আসামি করে এজাহার দায়ের করেন। ওই মামলার এজাহার সূত্রে জানা জানা যায়, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদের বিরুদ্ধে দায়িত্বশীল পদে থেকে অবৈধ উপায়ে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সহিত অসঙ্গতিপূর্ণ ৩৬ কোটি ৩৬ লাখ ৯৯ হাজার ৬৫৭ টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জন করে ভোগ দখলে রেখেছেন। অন্যদিকে নিজ নামে ৯৮টি ব্যাংক হিসাবে মোট ৩ হাজার ১৮১ কোটি ৫৮ লাখ ৮৩ হাজার ৩১৩ টাকা জমা ও অধিকাংশ টাকাই উত্তোলনের মাধ্যমে অস্বাভাবিক ও সন্দেহজনক লেনদেন করেছেন। যা মানিলন্ডারিংয়ের সম্পৃক্ত অপরাধ হিসাবেই দুদকের অনুসন্ধানে প্রমাণিত হয়েছে।

দ্বিতীয় মামলায় তার স্ত্রী সীমা হামিদকে প্রধান আসামি ও স্বামী নজরুল হামিদকে সহযোগী আসামি করা হয়েছে। এই মামলায় স্ত্রীর সীমার বিরুদ্ধে ৬ কোটি ৯৮ লাখ ৫৪ হাজার ৯৬৪ টাকার অবৈধ সম্পদ ও নিজ নামে ২০টি ব্যাংক হিসাবে মোট ১২ কোটি ৭৭ লাখ ৮৬ হাজার ৬৯৯ টাকা অস্বাভাবিক ও সন্দেহজনক লেনদেনের প্রমাণ মিলেছে। মামলাটি দুদকের উপপরিচালক কমলেশ মণ্ডল বাদী হয়ে দায়ের করেছেন।

তৃতীয় মামলায় ছেলে জারিফ হামিদকে প্রধান ও বাবা নসরুল হামিদকে সহযোগী আসামি করা হয়েছে। মামলায় তাদের বিরুদ্ধে ২০ কোটি ৮৭ লাখ ৬৬ হাজার ২০ টাকা জ্ঞাত আয়ের উৎসের সহিত অসঙ্গতিপূর্ণ সম্পদ থাকার অভিযোগ আনা হয়েছে। এছাড়া জারিফের নিজ নামে ২০টি ব্যাংক হিসাবে সন্দেহজনকভাবে ২৭ কোটি ৭১ লাখ ৭৩ হাজার ৯৩১ টাকা লেনদেনের প্রমাণ পাওয়া গেছে দুদকের অনুসন্ধানে। এই মামলার বাদী হলেন সহকারী পরিচালক মিনহাজ বিন ইসলাম।

সব মিলিয়ে দুর্নীতি ও ঘুষের মাধ্যমে প্রাপ্ত অর্থ বা সম্পত্তির অবৈধ উৎস গোপন করার উদ্দেশ্যে হস্তান্তর, স্থানান্তর ও রূপান্তর করায় দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭(১) ধারা, মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারা এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে মামলায়।

গত ২২ আগস্ট নজরুল হামিদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে নামে দুদক। ওইদিন তার প্রতিষ্ঠান হামিদ গ্রুপে অভিযান চালায় যৌথ বাহিনী। ঢাকা জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে পুলিশ, র‌্যাব ও সেনাবাহিনী এ অভিযান চালায়। এ সময় ‘প্রিয় প্রাঙ্গণ’ নামে ভবনের ভেতর থেকে বেশ কয়েকটি ভল্টে থাকা নগদ অর্থ ও বৈদেশিক মুদ্রা (প্রায় ১০ লাখ টাকা ও ২০০ তুর্কি মুদ্রা) এবং অস্ত্র-গুলিসহ অন্যান্য সামগ্রী জব্দ করা হয়। অন্যদিকে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর আত্মগোপনে আছেন সাবেক বিদ্যুৎ, জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।

Main Admin:
X

Headline

You can control the ways in which we improve and personalize your experience. Please choose whether you wish to allow the following:

Privacy Settings