X

নামছে বন্যার পানি, ভেসে উঠছে সড়ক জনপদের ক্ষতচিহ্ন

“ঘরে একটু চাল নাই, চাল যে পাকাবো ওই হাড়ি চুলা কিছুই নাই। ল্যাট্রিন ভেসে গেছে। এই ভিজা কাপড় নিয়ে আছি আজকে সাতদিন। আমার ঘরের সব ভাসায় নিয়ে গেছে।”নিষ্পৃহ কণ্ঠে কথাগুলো বলছিলেন কুমিল্লার দাগনভুঞা উপজেলার মোমারিজপুর গ্রামের বাসিন্দা তাহেরা বেগম।

সত্তরোর্ধ্ব এই নারী পরিবারের আরও চার সদস্য নিয়ে থাকতেন ছনের ছাদ দেয়া মাটির বাড়িতে।ফেনীতে যখন বন্যা হানা দেয় প্রথম ধাক্কাতেই তার গ্রাম ভেসে বিলীন হয়ে যায়। তাহেরা বেগম আর তার পরিবার কোনও রকমে স্থানীয়দের সহায়তায় পাশের একটি মাদ্রাসায় আশ্রয় নেন।

এখন পানি কমার পর তিনি বাড়ি ফিরেছেন ঠিকই, কিন্তু ওই বাড়িতে থাকার মতো অবস্থা নেই। ঘরের মাটির মেঝে নরম হয়ে পা ডুবে যাচ্ছে। ছাদ আর দেওয়াল ছাড়া কিছুই নেই। ঘরে ফিরেও ঘর পাওয়া হয়নি তার।অবস্থাপন্ন অনেক পরিবারও বন্যার কারণে হয়েছেন ঘরছাড়া।ফেনী সদর উপজেলার বাসিন্দা নাহিদা আঞ্জুমান পাঁচ তলা ভবনের নিচতলায় থাকতেন তার পাঁচ সদস্যের পরিবার নিয়ে।

কিন্তু বন্যার পর থেকে তাদের সবার ঠাঁই হয়েছে দোতলায় প্রতিবেশীর বাসায়। এবারের বন্যায় ২৪ ঘণ্টার মাথায় তাদের একতলার বাসা প্রায় ছাদ অবধি ডুবে যায়। এখন বন্যার পানি ধীরে ধীরে নামতে শুরু করলেও ঘরে ফেরার কোনও অবস্থা নেই।বন্যার পানি বৃদ্ধি এত আকস্মিক ছিল যে অধিকাংশ পরিবার ঘরের প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি সরানোর সুযোগও পায়নি।

“পানি এতো দ্রুত বেড়েছে এক কাপড়ে বের হয়ে আসছি। আমার সব ফার্নিচার নষ্ট হয়ে গিয়েছে। টিভি আর জরুরি কিছু কাগজ কোনওভাবে উপরে এনেছি। ফ্রিজটা আনতে পারি নাই। আলমারির কাপড়-চোপড়, বিছানা-বালিশ, বই খাতা সব ভেসে গিয়েছে।”

“এখন বাসা ভর্তি শুধু কাদা, ময়লা-আবর্জনা। আমরা জাস্ট জিরো হয়ে গিয়েছি,” বলতে বলতে কণ্ঠরোধ হয়ে আসছিল তার।

Categories: জাতীয়
Main Admin:
X

Headline

You can control the ways in which we improve and personalize your experience. Please choose whether you wish to allow the following:

Privacy Settings