X

নিজেদের রাজাকার বলতে লজ্জাও করে না

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারি চাকরিতে কোটা বিরোধী আন্দোলনকারীদের ‘তুমি কে? আমি কে? রাজাকার, রাজাকার’ স্লোগান দেওয়াকে অত্যান্ত দুঃখজনক আখ্যায়িত করে বলেছেন, নিজেদের রাজাকার বলতে তাদের লজ্জাও লাগে না। তিনি বলেন, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও রাজাকার বাহিনী কীভাবে দেশে অত্যাচার চালিয়েছে তা তারা জানে না। এসব অত্যাচার, রাস্তায় রাস্তায় লাশ পড়ে থাকা এরা দেখেনি। তাই নিজেদের রাজাকার বলতে তাদের লজ্জাবোধ হয়নি। প্রধানমন্ত্রী গতকাল সোমবার সকালে তাঁর কার্যালয়ের (পিএমও) শাপলা হলে মন্ত্রণালয়/বিভাগসমূহের ২০২৪-২৫ অর্থবছরের ‘বার্ষিক কর্ম সম্পাদন চুক্তি (এপিএ) স্বাক্ষর’ এবং ‘বার্ষিক কর্ম সম্পাদন চুক্তি’ ও ‘শুদ্ধাচার পুরস্কার’ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন।

২০১৪-১৫ অর্থবছর থেকে সরকারি কর্মকাণ্ডে স্বচ্ছতা ও দায়বদ্ধতা বৃদ্ধি, সম্পদের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিতকরণ এবং প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা উন্নয়নের লক্ষ্যে সরকারি কর্ম সম্পাদন ব্যবস্থাপনা পদ্ধতির আওতায় বার্ষিক কর্ম সম্পাদন চুক্তি প্রবর্তন করা হয়েছে। শেখ হাসিনা বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাই হচ্ছে আমাদের একমাত্র লক্ষ্য। লাখো শহীদ রক্ত দিয়ে গেছেন, লাখো মা-বোন নির্যাতিতা, তাদের এই অবদান ভুললে চলবে না। এটা মনে রাখতে হবে।

পাকিস্তানি হানাদার ও রাজাকার বাহিনী যেভাবে এদেশে অত্যাচার করেছে সেখানে আমার খুব দুঃখ লাগে গত রোববার যখন শুনি রোকেয়া হলের ছাত্রীরাও বলে তারা রাজাকার। তিনি বলেন, তারা কী জানে ‘৭১ সালের ২৫ মার্চ কি ঘটেছিল সেখানে। সেখানে ৩শ’ মেয়েকে হত্যা করেছিল পাকিস্তানি হানাদার
বাহিনী ও তাদের এই দেশীয় দোসররা। ৪০ জন মেয়েকে পাকিস্তানি ক্যাম্পে ধরে নিয়ে আটকে রেখে পালাক্রমে ধর্ষণ করেছিল। তারা সেখানে কী অবস্থায়

ছিল? অনেক মেয়ে শাড়ি বা ওড়না দিয়ে ফাঁসি দিয়েছিল তাদের কাপড় পড়তে দেওয়া হতো না। একটা পেটিকোট পরিয়ে বসিয়ে রাখতো। দিনের পর দিন তাদের ওপর পাশবিক নির্যাতন চালাতো। সরকার প্রধান বলেন, যখন তাদেরকে উদ্ধার করা হয় মিত্র শক্তির এক ভারতীয় শিখ সৈন্য নিজের মাথার পাগড়ি

খুলে এক মেয়ের গায়ে পরিয়ে তাকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে। এটা কেবল একটা ঘটনা, এ রকম বহু ঘটনা রয়েছে। শেখ হাসিনা মুক্তিযদ্ধে নারীদের অবদান তুলে ধরে বলেন, আমাদের মেয়েরা বসে থাকতো না। তারাও কিন্তু কাজ করতো। পিরোজপুরে এক মেয়ে হানাদার পাকিস্তানি বাহিনীর রান্নার কাজ করতো এবং রাতে নদী সাঁতরে পার হয়ে চিতলমারী গিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্পে গিয়ে হানাদারদের খবর পৌঁছে দিত। ধরা পড়ার পরে দু’টো গাড়ির

সঙ্গে তাঁর দুই পা বেঁধে টেনে হিঁচড়ে খন্ড বিখন্ড করে ফেলা হয়। এসব অত্যাচার, রাস্তায় রাস্তায় লাশ পড়ে থাকা এরা দেখেনি। তাই নিজেদের রাজাকার বলতে তাদের লজ্জা হয়না। তিনি বলেন, হ্যাঁ আমাদের গেরিলা যুদ্ধ হয়েছে। এখানে কেউ শান্তি কমিটিতে ছিল কিন্তু মানুষের ক্ষতি করেনি। কিন্তু যে বাহিনীগুলো তারা (পাকিস্তানী হানাদাররা) তৈরি করেছিল তাদের হাতে অস্ত্র দিয়েছিল এবং তাদেরকে দিয়ে মানুষের ক্ষতি করতো অত্যাচার, লুটপাট এবং গণহত্যা চালাতো। তাদের বিরুদ্ধেই আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি, তাদের বিচার করে অনেকের ফাঁসিও দিয়েছি।এর মাধ্যমে তাদের দ্বারা যারা নির্যাতিত তারা

ন্যায় বিচার পেয়েছে। শেখ হাসিনা বলেন, যে মুক্তিযুদ্ধ আমাদের গর্বের। জাতির পিতার একটি ডাকে এই দেশের মানুষ ঘর-বাড়ি পরিবার-পরিজন সবকিছু ছেড়ে দিয়ে রণক্ষেত্রে চলে গেছে। জীবনের মায়া ত্যাগ করে যুদ্ধ করে বিজয় এনে দিয়েছে। আর যারা ঐ বাহিনীতে ছিল (রাজাকার-আলবদর-আলশামস) এই দেশের মানুষের ওপর অত্যাচার করেছে। সেটাতো ভুলে গেলে চলবে না।

Main Admin:
X

Headline

You can control the ways in which we improve and personalize your experience. Please choose whether you wish to allow the following:

Privacy Settings