X

নৌবাহিনীর জাহাজে তুলে রোহিঙ্গাদের সমুদ্রে ফেলে দিচ্ছে ভারত: বিবিসি

ভারতের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন নিপীড়িত রোহিঙ্গা শরণার্থীরা। তাঁদের দাবি, দিল্লি থেকে আটক করে নৌবাহিনীর জাহাজে তুলে নিয়ে গিয়ে আন্দামান সাগরে ফেলে দিয়েছে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ। প্রায় ৪০ জন রোহিঙ্গা এই অভিযোগ করেছেন।জাতিসংঘ জানিয়েছে, এ ঘটনায় রোহিঙ্গাদের জীবনকে “চরম ঝুঁকির মুখে” ঠেলে দিয়েছে ভারত। শুক্রবার (২৯ আগস্ট) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে বিষয়টি প্রকাশ করেছে।গত ৯ মে দিল্লি থেকে নিখোঁজ হওয়ার আগে ভাইয়ের সঙ্গে শেষ কথা বলেন নুরুল আমিন। পরে তিনি জানতে পারেন, তার ভাই খাইরুলসহ পরিবারের চারজনকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে মিয়ানমার ভয়াবহ গৃহযুদ্ধের মধ্যে থাকায় তাদের ফেরার পথ কার্যত বন্ধ।২৪ বছর বয়সী নুরুল আমিন বলেন, “আমার বাবা-মা ও স্বজনেরা কী যন্ত্রণার মধ্যে আছেন, সেটা কল্পনাও করতে পারিনি।”

তিন মাস পর বিবিসি ওই রোহিঙ্গাদের খুঁজে পায় মিয়ানমারে। অনেকে আশ্রয় নিয়েছেন প্রতিরোধ গোষ্ঠী বাহটু আর্মি (বিএইচএ)-এর কাছে। ভিডিও কলে রোহিঙ্গা সৈয়দ নূর বলেন, “আমরা এখানে নিরাপদ নই। পুরো এলাকা যেন যুদ্ধক্ষেত্র।”

রোহিঙ্গাদের বর্ণনা অনুযায়ী, দিল্লি থেকে তাদের বিমানে করে আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে নেওয়া হয়। সেখান থেকে বাসে করে নিয়ে গিয়ে নৌবাহিনীর জাহাজে তোলা হয়। পরে চোখ-মুখ বেঁধে, হাত প্লাস্টিক দিয়ে বেঁধে, একে একে ছোট নৌকায় নামিয়ে সমুদ্রে ফেলে দেওয়া হয়। যদিও তাঁদের লাইফ জ্যাকেট দেওয়া হয়েছিল। পরে সাঁতরে তীরে উঠে স্থানীয় জেলেদের সহায়তায় বেঁচে যান তারা।জন, আরেক রোহিঙ্গা বলেন, “আমাদের হাত বেঁধে, চোখ-মুখ ঢেকে বন্দির মতো জাহাজে তোলা হলো। তারপর সমুদ্রে ফেলে দিলো।”অনেককে মারধর ও অপমান করা হয়েছিল বলেও অভিযোগ রয়েছে। ফয়াজ উল্লাহ ভিডিও কলে তার হাতে আঘাতের দাগ দেখিয়ে জানান, তাকে ঘুষি, চড় ও বাঁশ দিয়ে আঘাত করা হয়েছিল।জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিবেদক টমাস অ্যান্ড্রুজ বলেছেন, তার হাতে এই ঘটনার “গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ” রয়েছে এবং তিনি ভারতের মিশন প্রধানের কাছেও তা জমা দিয়েছেন। কিন্তু কোনো জবাব পাননি।বর্তমানে ভারতে জাতিসংঘের হিসেবে প্রায় ২৩ হাজার ৮০০ রোহিঙ্গা নিবন্ধিত থাকলেও হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলছে প্রকৃত সংখ্যা ৪০ হাজারেরও বেশি। দেশটি রোহিঙ্গাদের শরণার্থী হিসেবে নয়, বরং “অবৈধ অভিবাসী” হিসেবে চিহ্নিত করে।এরই মধ্যে নুরুল আমিন ও তার এক আত্মীয় ভারতের সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছেন। তাঁরা রোহিঙ্গাদের নির্বাসনে পাঠানো বন্ধ ও ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়েছেন। তবে আদালতের এক বিচারপতি অভিযোগগুলোকে “অবাস্তব কল্পনা” বলে মন্তব্য করেন। মামলার শুনানি আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর নির্ধারিত হয়েছে।

নুরুল আমিন বলেন, “আমার মনে শুধু ভয় কাজ করে, ভারত সরকার যে কোনো সময় আমাদেরও ধরে নিয়ে সমুদ্রে ফেলে দেবে। এখন আমরা ঘর থেকে বের হতেও ভয় পাচ্ছি।”

সূত্র: বিবিসি

Md Abu Bakar Siddique:
X

Headline

You can control the ways in which we improve and personalize your experience. Please choose whether you wish to allow the following:

Privacy Settings