X

ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় হাওরাঞ্চলে পাট চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন চাষিরা

নেত্রকোনার হাওরাঞ্চলে এক সময় পাটের জন্য বিখ্যাত থাকলেও এখন সেই পাটই বিলুপ্তির পথে। নদী দিয়ে বড় বড় লঞ্চ-স্টিমারে দেশের বিভিন্ন স্থানে রপ্তানি হতো পাট। সেই পাটের আবাদ থেকে দীর্ঘকাল ধরে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন এ অঞ্চলের চাষিরা। একসময় ধানের সাথে পাল্লা দিয়ে পাটের উৎপাদন হতো।

পরিবেশবিদরা মনে করেন রপ্তানিমুখী এই ফসলের আবাদ বাড়ানোর মাধ্যমে আবারও গড়ে উঠতে পারে পরিবেশবান্ধব কল-কারখানা। লাভজনক এই ফসলে এ অঞ্চলের অর্থনৈতিক চাকা ঘুরতে পারে। তবে এর জন্য প্রয়োজন কৃষকদের উদ্বুদ্ধকরণ কর্মসূচি গ্রহণসহ পাটের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা।

জানা গেছে, এক সময় নেত্রকোনা অঞ্চলের প্রসারই ঘটেছিল এই পাটের জন্য। নদীপথে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে হতো পাট রপ্তানি। পাটের ফলন এমনই ছিল যে শত বছর পূর্বে একটি নদীর নামই ছিল পাটেশ্বরী। যে নদী দিয়ে নারায়ণগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে নৌকায় যেত পাট এবং ধান। সবই এখন প্রায় বিলুপ্তির পথে।

প্লাস্টিকজাত পণ্য এসে দেশের এমন অর্থকড়ি ফসলের ক্ষতি করেছে। ক্ষতি করেছে পরিবেশের। ক্ষতি করেছে মানবসম্পদের। অথচ এই অর্থকড়ি ফসলের দিকে নজর নেই দেশের সরকারসহ বিভিন্ন গবেষকদের। এমনটা দাবি পরিবেশকর্মীদের। তবে সরকার পরিবেশবান্ধব ফসল পাটের ব্যবহার এবং উৎপাদনে নজর দিলে অর্থনৈতিক উন্নতির পাশাপাশি সবদিক থেকে আবারও এ অঞ্চল ঘুরে দাঁড়াবে বলে মনে করেন গবেষক বারসিকের আঞ্চলিক সমন্বয়কারী মো. অহিদুর রহমান।

মদন উপজেলার হাঁসকুড়ি গ্রামের কৃষক পাটচাষি মো. শরীফ জানান, বাপ-দাদার সাথে সাথে তিনি কৃষি কাজ করে বেড়ে উঠেছেন। তিনিই এক সময় ৩০ থেকে ৪০ কাঠা জমিতে গেল কয়েক বছর আগেই চাষ করতেন পাট। কিন্তু কমতে কমতে এবার মাত্র ১০ কাঠা জমিতে এই পাটের আবাদ করেছেন। লাভ নেই। জমিটা পড়ে থাকবে তাই নিজেদের কাজের জন্য কিছু পরিমাণ চাষ করেন। কিন্তু প্রক্রিয়াজাত করে বাজারে নিলে দাম আর পাওয়া যায় না।

নেত্রকোনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (খামারবাড়ি) উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মোহাম্মদ নুরুজ্জামান জানান, কৃষকরা ধানের পাশাপাশি সবজি জাতীয় এবং সরিষাসহ অন্যান্য লাভজনক ফসল করায় পাটের আবাদ কমে যাচ্ছে। এ বছর ৪ হাজার ৫৯০ হেক্টর পাট আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হলেও অর্জিত হয়েছে ৪ হাজার ৪১০ হেক্টর। কোনো এক সময় এ অঞ্চলে পাট বেশি হলেও দিনে দিনে এখন কমছে। কারণ খরচ এবং কষ্ট দুটোই বেশি হয়। কিন্তু দাম পায় না। পাটজাত পণ্য তৈরি হলে বাজারমূল্য বাড়বে বলে মনে করেন তিনি। তখন যদি আবারও কৃষক ভাইয়েরা আগ্রহী হন। এছাড়া তেমন সম্ভাবনা নেই।

Md Abu Bakar Siddique:
X

Headline

You can control the ways in which we improve and personalize your experience. Please choose whether you wish to allow the following:

Privacy Settings