X

পঞ্চগড়ে রাত যেন বরফ শীতল, তাপমাত্রার পারদ নামল ১০ ডিগ্রির ঘরে

পঞ্চগড়ে অগ্রহায়নের শেষ সপ্তাহেই যেন শীত জেঁকে বসেছে। দুই দিন ধরে ভোরে কুয়াশা না থাকলেও হিমেল বাতাসে অনুভব হচ্ছে বরফের শীত। তাপমাত্রা কমে আসায় কনকনে শীতের প্রকোপে জর্জরিত হয়ে পড়েছে উত্তরের হিমালয়ের জেলা পঞ্চগড়ের মানুষ। গ্রামাঞ্চলের হতদরিদ্র মানুষগুলো খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন।

সোমবার (৯ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ১০ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে ভোর ৬টায় রেকর্ড করা হয় ১০ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল রোববার (৮ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছিল ১১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সকালে তাপমাত্রার রেকর্ডের তথ্যটি জানান জেলার প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার তেঁতুলিয়া অফিস।

ভোরেই দেখা যায় রক্তিম আভা নিয়ে জেগে উঠেছে ভোরের সূর্য। প্রকৃতি জুড়ে জড়িয়ে রয়েছে হালকা কুয়াশা। ঝিরঝির করে বইছে হিমেল বাতাস। প্রয়োজনের বাইরে অনেকেই ঘর থেকে বের না হলেও জীবিকার তাগিদে কাজে বের হতে দেখা গেছে নিম্নআয়ের মানুষদের। পাথর শ্রমিক, চা শ্রমিক, দিনমজুর, সবজি চাষি।

কথা হয় সবজি চাষি আজমিরের সাথে। তিনি জানান, ভাই খুবই ঠান্ডা। রাত-ভোর পর্যন্ত বরফের মতো লাগে। এতো ঠান্ডা, কাজ কাম করা খুবই কঠিন হয়ে উঠে। ভোরে পালং শাক, লাফা শাক ও লাউ শাক তুলতে এসেছি। ধরা যাচ্ছে না, বরফের মতো মনে হচ্ছে। হাত অবশ হয়ে আসে। কিন্তু কি করবো, টাটকা সবজি বাজারে নিতেই কাজ করতে হচ্ছে।

ঘর-গৃহস্থালী ও শিশু ছেলে-মেয়েদের রান্না তৈরি করতে শীতে বেকায়দায় পড়েন গৃহিনীর। তারা বলছেন, সন্ধ্যার পর থেকেই খুবই ঠান্ডা। ঘরের বিছানা,ফ্লোরসহ আসবাবপত্র বরফ হয়ে উঠে। ঘরে আনা পানিও বরফ হয়ে উঠে। ভোরে উঠে রান্নাবান্না করা খুবই কষ্টকর।

এদিতে শীতের কারণে বেড়েছে বিভিন্ন শীতজনিত রোগব্যাধি। জেলার পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতাল ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে বাড়ছে শীতজনিত বিভিন্ন রোগীর ভিড়। শিশু ও বয়স্করা সর্দি,কাশি, নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। চিকিৎসকরা শীতে স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধিতে চিকিৎসকরা চিকিৎসাসেবার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিচ্ছেন।

পঞ্চগড়ের প্রথম প্রেণির তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্র নাথ বলেন, গতকাল রোববারের চেয়ে আরও তাপমাত্রা কমেছে। তাপমাত্রা কমে গত ১০ ডিগ্রির ঘরে এসেছে। আজ সোমবার সকাল ৯টায় ১০ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। গতকাল রোববার সকাল ৯টায় ১১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড হয়েছিল। তার আগে শনিবার রেকর্ড হয়েছিল ১২ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আজ ভোরেই সূর্য দেখা গেছে।

পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক মো.সাবেত আলী বলেন, এখন পর্যন্ত সরকারিভাবে দুই হাজার কম্বলের বরাদ্দ পেয়েছি। তা বিতরণ করা হচ্ছে। পাশাপাশি শিশুস্বর্গ নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন তারা ৭ হাজার কোমলমতি শিশুদের শীতের উপহার দিচ্ছে। এছাড়া বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো শীতবস্ত্র দিতে শুরু করেছে। শীতার্তদের পাশে সমাজের বিত্তশালীদের এগিয়ে আসা উচিত।

Main Admin:
X

Headline

You can control the ways in which we improve and personalize your experience. Please choose whether you wish to allow the following:

Privacy Settings