X

পদ হারালেন এনসিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান

ঋণখেলাপি হওয়ায় অবশেষে পদ হারিয়েছেন বেসরকারি এনসিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান মো. আবুল বাশার। একই কারণে পরিচালক পদ হারিয়েছেন তাঁর পিতা মো. আব্দুল আউয়াল। তাদের মালিকানাধীন প্রাইম গ্রুপের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে দশ ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে খেলাপি ঋণ থাকা সত্ত্বেও ব্যবস্থা নিচ্ছিল না কেন্দ্রীয় ব্যাংক। গত ১৫ অক্টোবর সমকালে ‘খেলাপি হয়েও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পাহারায় এনসিসির চেয়ারম্যান’ শিরোনামে রিপোর্ট প্রকাশিত হয়। এরপর বৃহস্পতিবার তাদের দুইজনের পরিচালক পদ শূন্য করে চিঠি দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

নিয়ম অনুযায়ী ঋণখেলাপি কেউ ব্যাংকের পরিচালক হতে পারেন না। আবার কেউ একবার পদে যাওয়ার পর খেলাপি চিহ্নিত হলে তাকে অপসারণ করার বিধান রয়েছে। অথচ নানা কৌশলে কালক্ষেপন করায় খেলাপি হয়েও তারা পদে ছিলেন। এনসিসি ব্যাংকের বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) অনুষ্ঠিত হয় গত ১ আগস্ট। সভার কার্যবিবরণী দীর্ঘ এক মাস ২৫ দিন পর গত ২৫ সেপ্টেম্বর কেন্দ্রীয় ব্যাংকে পাঠানো হয়। এ নিয়ে ব্যাংকটিকে প্রশ্ন না করে পরিচালকদের বিষয়ে অনাপত্তি বা আপত্তি কোনোটিই দেয় নি বাংলাদেশ ব্যাংক। ফলে দীর্ঘ সময় ধরে তাদের পর্ষদ সভা হচ্ছে না। বড় ঋণ নবায়ন, নতুন ঋণ অনুমোদনসহ গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন সিদ্ধান্ত আটকে আছে।

সূত্র জানায়, চেয়ারম্যান মো. আবুল বাশার এবং আব্দুল আউয়াল যেন ঋণ পুনঃতপশিল বা অন্য উপায়ে খেলাপিমুক্ত হয়ে আসতে পারেন সে জন্য কালক্ষেপণ করছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। খেলাপি থাকার কারণে তাদেরকে ব্যাংক কোম্পানি আইনের ১৭ ধারার আওতায় নোটিশ দেওয়ার পর অপসারণের সময়সীমা শেষ হয় গত ১২ আগস্ট। এরপরও তাদের পদ শূন্য না করে কালক্ষেপণ করা হচ্ছিল। তবে ১৫ অক্টোবর সমকালে রিপোর্ট প্রকাশের পর নড়েচড়ে বসে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

আবুল বাশার প্রাইম গ্রুপের ডিএমডি। আব্দুল আউয়াল গ্রুপটির চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক। এ গ্রুপের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ৮ ব্যাংক ও দুই আর্থিক প্রতিষ্ঠানে এক হাজার ৭২৫ কোটি টাকার ঋণখেলাপি। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ৬০৩ কোটি টাকার খেলাপি অগ্রণী ব্যাংকে। পর্যায়ক্রমে স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকে ৪১৮ কোটি, জনতা ২০৩ কোটি, পূবালী ১৭৬ কোটি, ব্যাংক এশিয়ায় ১৩৩ কোটি, মার্কেন্টাইল ১০০ কোটি, প্রাইমে ৭১ কোটি এবং সিটি ব্যাংকে খেলাপি ১৭ কোটি টাকা। এছাড়া আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইআইডিএফসিতে সাড়ে তিন কোটি এবং ফার্স্ট ফাইন্যান্সে খেলাপি ঋণ রয়েছে ৮২ লাখ টাকা।

জানা গেছে, একাধিক ব্যাংক পাওনা আদায়ে ব্যাংক কোম্পানি আইনের ১৭ ধারার আওতায় নোটিশ দিয়েছে। সর্বপ্রথম গত ১২ আগস্ট নোটিশ দেয় ব্যাংক এশিয়া। নিয়ম অনুযায়ী– নোটিশ দেওয়ার ৬০ দিনের মধ্যে খেলাপিমুক্ত হয়ে আসতে না পারলে পদ শূণ্য ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংকের দেওয়া চিঠিতে বলা হয়েছে, ব্যাংক এশিয়ার খেলাপি হিসেবে গত ১২ আগস্ট তাদের নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। নোটিশ পাওয়ার ৬০ দিনের মধ্যে তারা ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হয়েছেন। এ প্রেক্ষিতে ১২ অক্টোবর থেকে পরিচালক পদ শূণ্য হয়ে গেছে। এ ধারার আওতায় তাদের শেয়ার বিক্রি করে ঋণ সমন্বয় করতে পারবে ব্যাংক এশিয়া।

Main Admin:
X

Headline

You can control the ways in which we improve and personalize your experience. Please choose whether you wish to allow the following:

Privacy Settings