মিনায় হজযাত্রীদের অবস্থানের মাধ্যমে পবিত্র হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে গতকাল বুধবার। আজ বৃহস্পতিবার ৯ জিলহজ (৫ জুন) পবিত্র হজের দিন। এদিন ফজরের নামাজ আদায় করে তারা রওনা দেবেন আরাফাতের ময়দানের উদ্দেশে। এ সময় তাদের কণ্ঠে উচ্চারিত হবে ‘লাব্বাইক, আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হাম্দা ওয়ান্নি’মাতা লাকা ওয়ালমুলক লা শারিকা লাক।’ অর্থাৎ ‘আমি হাজির, হে আল্লাহ আমি হাজির, তোমার কোনো শরিক নেই, সব প্রশংসা ও নিয়ামত শুধু তোমারই, সব সাম্রাজ্যও তোমার।’
আজ সূর্যাস্ত পর্যন্ত আরাফাতের ময়দানে থেকে তারা এবাদত-বন্দেগি করবেন।এদিকে আগামী শনিবার বাংলাদেশে পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপিত হবে। পবিত্র হজের আনুষ্ঠানিকতা চলে পাঁচ দিন। গতকাল ৮ জিলহজ মিনায় অবস্থানের মাধ্যমে শুরু হয়েছে এ আনুষ্ঠানিকতা। এর আগে গত মঙ্গলবার রাতে মক্কা থেকে হজযাত্রীরা তাঁবুর শহর মিনার উদ্দেশে রওনা হন। তারা মক্কায় নিজ নিজ রুম থেকে ইহরাম বেঁধে মিনায় পৌঁছান। মিনায় অবস্থান করা সুন্নত। গতকাল জোহর থেকে আজ ফজর পর্যন্ত (সারা দিন-সারা রাত) মিনায় অবস্থান করে মোট পাঁচ ওয়াক্ত আদায় করবেন তারা। এ ছাড়া এখানে তাকবির, তাসবিহ, দোয়া এবং কোরআন তিলাওয়াতে সময় কাটান তারা। এরপর ফজরের নামাজ পড়ে রওনা হন আরাফাতের ময়দানের উদ্দেশে।মূলত আরাফাতের দিবসকে (৯ জিলহজ) ধরা হয় মূল হজ হিসেবে। আজ ভোর থেকেই হজযাত্রীরা আরাফাতের ময়দানে সমবেত হবেন। তাদের সমস্বরে উচ্চারিত ‘লাব্বাইক আল্লাহুমা লাব্বাইক’ ধ্বনিতে মুখরিত হবে আরাফাতের আকাশ-বাতাস। দুপুরে হজের খুতবা শুনবেন তারা। তারপর এক আজানে হবে জোহর ও আসরের নামাজ। এই ময়দানেই আরাফাত পাহাড়ে দাঁড়িয়ে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) তার বিদায় হজের ভাষণ দিয়েছিলেন। সেই স্মৃতি ও রীতিকে লালন করেন বিশ্বের সব মুসলিম। এদিন বিশ্বজুড়ে অসংখ্য মুসলিম রোজা পালন করেন।
সূর্যাস্তের পর তারা আরাফাতের ময়দান ত্যাগ করে যাত্রা করবেন মুজদালিফার পথে। সেখানে আবার তারা এক আজানে আদায় করবেন মাগরিব ও এশার নামাজ। আজ রাতে মুজদালিফায় তারা খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করবেন। এ সময় তারা মুজদালিফা থেকে পাথর সংগ্রহ করবেন জামারায় প্রতীকী শয়তানকে নিক্ষেপের জন্য। এরপর আগামীকাল শুক্রবার সকালে সূর্যোদয়ের পর জামারায় প্রতীকী বড় শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ করবেন। পরে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য পশু কোরবানি করবেন। কোরবানি করে মাথা মুণ্ডন করবেন। এহরাম খুলে পরবেন সাধারণ পোশাক। আবার কাবাঘর তাওয়াফ করবেন। সাফা-মারওয়ায় সাতবার সাঈ (চক্কর) করবেন। এরপর আবার ফিরে যাবেন মিনায়। এর পরদিন এবং তার পরদিন অর্থাৎ টানা দুই দিন দ্বিতীয় ও ছোট শয়তানকে পাথর মারার মধ্য দিয়ে শেষ হবে হজের আনুষ্ঠানিকতা।মিনা থেকে আরাফাতের ময়দানে যাবেন বাংলাদেশের হজযাত্রীরা বাংলাদেশি হজযাত্রীদের হজ ব্যবস্থাপনা মনিটরিং দলের নেতা ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন এবং ধর্মসচিব এ কে এম আফতাব হোসেন প্রামাণিকও গতকাল মিনায় অবস্থান করেছেন। গতকাল বাংলাদেশের ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়েছে।এ বছর সারা বিশ্ব থেকে প্রায় ১৪ লাখ ৭০ হাজার হজযাত্রী হজ পালনের জন্য সৌদি আরবে পৌঁছেছেন। স্থানীয় হজযাত্রী মিলে এই সংখ্যা প্রায় ২০ লাখ হতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে। এর মধ্যে বাংলাদেশি হজযাত্রীর সংখ্যা ৮৬ হাজার ৯৫৮ জন। সূত্র: বাসস, সৌদি গেজেট