X

পাঠ্যবইয়ে আবু সাঈদের শহীদের তারিখ সংশোধন, ভুলে জড়িতদের শোকজ

চলতি শিক্ষাবর্ষের নবম-দশম শ্রেণির ইংরেজি বইয়ে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে প্রথম শহীদ আবু সাঈদের শাহাদতবরণের ভুল তারিখ সংশোধন করা হয়েছে। একই সঙ্গে ভুল করায় জড়িতদের কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দেওয়া হয়েছে।

তবে জড়িত এবং যাদের নোটিশ দেওয়া হয়েছে, তাদের নাম-পরিচয় জানাননি এনসিটিবি।

বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) রাতে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

পাঠ্যপুস্তক বোর্ড চেয়ারম্যান বলেন, গণঅভ্যুত্থান নিয়ে যেসব তথ্য পাঠ্যবইয়ে স্থান পেয়েছে, তার মধ্যে দুটি জায়গায় আমরা ভুল করেছিলাম। একটা হলো- শহীদ আবু সাঈদের শহীদের তারিখটা ১৭ জুলাই লেখা হয়েছিল। সঠিক হবে ১৬ জুলাই। পরে সেটা ঠিক করা হয়েছে। এখন অনলাইন ভার্সন এবং ভুল ধরা পড়ার পর যেসব বই ছাপা হয়েছে, সেখানে সংশ্লিষ্ট ফর্মাটি পরিবর্তন করে দেওয়া হয়েছে।

অধ্যাপক রিয়াজুল হাসান বলেন, দ্বিতীয় ভুলটি হয়েছিল পঞ্চম শ্রেণির বাংলা বইয়ে। সেখানে ‘আমরা তোমাদের ভুলবো না’ গল্পে শহীদ নাফিসার জায়গায় ভুল করে নাহিয়ান লেখা হয়েছিল। সেটিও আমরা একইভাবে সংশোধন করে দিয়েছি। দুটি ভুলের সংশোধনীও স্কুলগুলোতে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।

জানা যায়, গত ১৬ জুলাই কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদ পুলিশের গুলিতে নিহত হন। গুলি লাগার মুহূর্তে রাজপথে দুই হাত প্রসারিত করে দাঁড়িয়ে থাকা আবু সাঈদের ছবি গণমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশজুড়ে মানুষ শেখ হাসিনার স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে আসেন। সেই আন্দোলনই রূপ নেয় ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে।

নিহত শিক্ষার্থী নাফিসা

জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) প্রণীত চলতি শিক্ষাবর্ষের নবম-দশম শ্রেণির ইংরেজি বইয়ে ‘গ্রাফিতি’ শিরোনামে একটি অধ্যায়ে বলা হয়, ‘২০২৪ সালের ১৭ জুলাই রংপুরে পুলিশের গুলিতে আবু সাঈদ শহীদ হন।’

তবে একই শ্রেণির বাংলা সাহিত্য বইয়ে ‘আমাদের নতুন গৌরবগাথা’ শিরোনামে যে অধ্যায় যুক্ত করা হয়েছে সেখানে সঠিক তারিখ অর্থাৎ ১৬ জুলাই লেখা হয়েছে।

অন্যদিকে পঞ্চম শ্রেণির বইয়ে বলা হয়েছে, ‘পুলিশের অত্যাচারের বিরুদ্ধে রংপুরে ছাত্রনেতা আবু সাঈদ দুই হাত প্রসারিত করে দাঁড়ান। পুলিশ তাকে খুব কাছ থেকে গুলি করে হত্যা করে। এতে আন্দোলন সবার মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। সারাদেশের মানুষ রাস্তায় নেমে আসে। বিশাল এক গণঅভ্যুত্থানের সৃষ্টি হয়।’

‘ঢাকার উত্তরায় শিক্ষার্থী মীর মুগ্ধ আন্দোলনরত সবাইকে পানি বিতরণ করতে করতে নিহত হন। নিহত হন (গোলাম) নাফিজ, নাহিয়ান, আনাসসহ অগণিত প্রাণ। মায়ের কোলের শিশু, বাবার সাথে খেলতে থাকা শিশু, রিকশাওয়ালা, শ্রমিক, কৃষক, ফেরিওয়ালা, চাকরিজীবী, মা, পথচারী কেউ বাদ যায় না। সারা দেশে হত্যা করা হয় হাজারো মানুষকে।’

উল্লিখিত তিন শহীদ- নাফিজ, নাহিয়ান ও আনাসের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানতে চাইলে পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের সূত্র জানায়, তারা শহীদদের মধ্যে একজন নারীর নাম যুক্ত করতে চেয়েছিলেন। এক্ষেত্রে তারা টঙ্গীর সাহাজউদ্দিন সরকার উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলের এইচএসসি পরীক্ষার্থী নাফিসার নাম অন্তর্ভুক্তির সিদ্ধান্তে উপনীত হন। সাভারে বিক্ষোভ চলাকালীন আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের গুলিতে নিহত হন নাফিসা।

তবে ভুলক্রমে নাফিসার স্থলে নাহিয়ান নামটি দেওয়া হয়েছে। এটি সংশোধন করা হবে বলেও তাৎক্ষণিক জানিয়েছিল জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড।

Categories: শিক্ষা
Main Admin:
X

Headline

You can control the ways in which we improve and personalize your experience. Please choose whether you wish to allow the following:

Privacy Settings