X

পেশা হিসেবে কোনটি বেছে নেবেন ব্যবসা নাকি চাকরি…?

লেখকঃ মোঃ সিফাত মাহামুদ

আপনি কি জানেন ২০২৩ সালে দেশে BCS পরীক্ষার্থীর সংখ্যা কত? ৪৫ তম BCS এ সংখ্যাটা ছিলো ৩ লক্ষ ৪৬ হাজারের মত। যা কিনা সংখ্যায় সেন্ট লুসিয়া নামক দেশটির মোট জনসংখ্যার তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ। পরীক্ষার্থীদের এই বিশাল সংখ্যাই প্রমান করে দেশের তরুণ প্রজন্ম সরকারি চাকরির জন্য কতটা মরিয়া।

শুধু সরকারি চাকরিই নয় বেসরকারি খাতের চাকরিতেও রয়েছে ব্যপক প্রতিযোগিতা। আবার এতো বিশাল চাকরি প্রত্যশীদের মাঝেও রয়েছে কিছু স্বপ্নবাজ তরুন যারা নিজেদের চেষ্টায় হয়েছে উদ্যোক্তা, চেষ্টা করছে নিজে কিছু করার। নিজেরা হচ্ছেন সাবলম্বী করছেন অন্য দের জন্যেও কর্মসংস্থান। ২০২৩ সালে দাড়িয়ে নিজেকে একজন শিক্ষিত তরুণ ঠিক কোথায় দেখতে চায় এটি একটি বিশাল প্রশ্ন। অনেকেই নানান দ্বিধা দন্দে ভোগে ক্যারিয়ার নিয়ে। আপনিও কি ভুগছেন এই দ্বিধাদ্বন্দ্বে? আচ্ছা চলুন আজ এটা নিয়ে একটু ভেবে দেখা যাক।

মূলত আমরা যে দেশের নাগরিক সেটি একটি কৃষিপ্রধান দেশ। কৃষিকে কেন্দ্র করেই এদেশের সিংহভাগ মানুষের জীবিকা চলে। তবুও চাকরিজীবি সম্প্রদায়কে বরাবরই সমীহ করে থাকে এদেশের মানুষ। তবে মানুষ যাই ভাবুক না কেন বাস্তবতার কথা ভাবা যাক। এদেশে সফল যারা হয়েছে অথবা জীবনে বড় কিছু করে দেখিয়েছে তারা মোটামুটি সবাই ই ব্যবসায়ী। বড় বলতে বোঝানো হচ্ছে অর্থের মানদণ্ডে বড়। তবে চাকরি করবেন নাকি ব্যবসা সেটি নির্ধারণ করা যেতে একটি বিষয় মাথায় রেখে। ধরুন একজন ভাঙ্গারী পন্যের ব্যবসা করেন। মাসে তার আয় ৫০/৬০ হাজার টাকা আর আরেক জন কলেজে চাকরি করে পায় ২৫/৩০ হাজার। আপনাকে একজন পছন্দ করতে বললে কাকে বেছে নেবেন? আপনি আসলে চাকরি করবেন নাকি উদ্যোক্তা হবেন সেই প্রশ্নের উত্তর মূলত এখানেই।

আসলে বাস্তবতা হলো আপনি উভয় জায়গাতেই সফলতা পেতে পারেন। তবে আপনি কোনটা বেছে নেবেন সেটা মূলত নির্ভর করবে এই প্রশ্নের উপর যে আপনি সফলতাকে কিভাবে দেখেন। আপনার সফলতার সংজ্ঞা যদি হয় এমন যে আপনি চান একটি নিশ্চিন্ত জীবন যেখানে আপনার নির্ধারিত কাজের বিনিময়ে মাস গেলে পাবেন একটা নির্দিষ্ট পরিমান অর্থ। যেটাদিয়ে আপনি সম্মান নিয়ে বাকি জীবন চাইলে সুখী হয়েই কাটাতে পারবেন আর যদি আপনার স্বপ্ন হয় বহুদূর যাবার কষ্ট করে বড় কিছু অর্জন করার তাহলে আপনাকে অবশ্যই হতে হবে উদ্যোক্তা। নিজের জন্য, দেশ ও দশের জন্যও বহু কিছু করতে পারবেন। যেহেতু আমাদের দেশটা কৃষি প্রধান, তাই শিল্পে আমরা অতটাও সমৃদ্ধশালী আমরা হতে পারিনি। দেশকে এগিয়ে নিতে শিল্প খাতকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই। তরুণ প্রজন্মের জন্য উদ্যোক্তা হওয়াই তাদের কর্মজীবনে আনতে পারে সফলতা, যারা শুধু সমাজের চোখে চাকরিজীবি ছেলের তকমা পাওটাকেই বড় মনে করে না বরং হতে চায় সফল, নিজেরা তাদের ক্যারিয়ারে যেমন পায় বড় কিছু করে দেখানোর সম্ভাবনা ঠিক তেমনি মেটাতে পারে লাখ লাখ চাকরি প্রত্যাশীদের মনোবাসনাও।

সবশেষে আপনি চাকরি করবেন নাকি উদ্যোক্তা হবেন এই প্রশ্নের জবাব কেবল মাত্র আপনি দিতে পারবেন। আপনার কাছে কোনটা বড় কোন জিনিসটা আপনাকে বেশি আকর্ষণ করে আর কোন জিনিসে নিজের সম্ভাবনা দেখেন সেটা কেবল আপনিই জানেন। কারন আপনার ভাল থাকার মাধ্যম কেবল মাত্র আপনারই জানা। যদি আপনি ভাবেন নির্ধারিত কাজ, পদবি আর বেতই আপনাকে সন্তুষ্ট রাখবে নিজেকে সুখী মানুষ অনুভব করবেন তাহলে এগিয়ে যান চাকরির দিকে আর যদি ভাবেন রিস্ক নিয়ে হলেও আপনি সফলতার সর্বোচ্চ শিখরে গিয়ে নেতৃত্ব দিতে চান তাহলে দ্রুত কাজ শুরু করুন, উদ্যোক্তা হন। মনে রাখবেন। উত্তর জানেন শুধুই আপনি।

Categories: Uncategorized
Main Admin:
X

Headline

You can control the ways in which we improve and personalize your experience. Please choose whether you wish to allow the following:

Privacy Settings