X

প্যারাবন কেটে চিংড়িঘের, আ.লীগের ২২ নেতা-কর্মীসহ ২৬ জনের নামে মামলা

কক্সবাজারের মহেশখালীর সোনাদিয়া দ্বীপের প্যারাবন (ম্যানগ্রোভ) নিধন করে চিংড়িঘের নির্মাণের অভিযোগে ২৬ জনের নামে মামলা করেছে পরিবেশ অধিদপ্তর। এর মধ্যে ২২ জন স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী, বাকি চারজন দলের সমর্থক। মামলায় এ ছাড়া অজ্ঞাতপরিচয় ১০-১৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। গত সোমবার মহেশখালী থানায় মামলাটি করেন পরিবেশ অধিদপ্তরের কক্সবাজার কার্যালয়ের পরিদর্শক ফাইজুল কবির।

মহেশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুকান্ত চক্রবর্তী মামলার সত্যতা প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, পরিবেশ আদালত আইন ২০১০ অনুসারে মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পরিবেশ অধিদপ্তরের। মামলা তদন্ত করার জন্য পরিবেশ অধিদপ্তরে পাঠানো হয়েছে।

গত চার মাসে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা প্রতিবেশ সংকটাপন্ন সোনাদিয়ার অন্তত ৩ হাজার একর প্যারাবনের ২৩ লাখ গাছ কেটে ৪৫টির বেশি চিংড়িঘের, লবণ মাঠ তৈরি করেছেন। বিষয়টি নিয়ে গত ১৩ জুন প্রথম আলোতে ‘সংকটাপন্ন সোনাদিয়ায় গাছ কেটে আওয়ামী লীগ নেতাদের মাছ চাষ’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। তবু প্যারাবন নিধন বন্ধ হয়নি। এরপর প্রায় ১ হাজার ১০ একর প্যারাবন ধ্বংস করে ১০টির বেশি চিংড়িঘের নির্মাণ করেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাসহ প্রভাবশালী ব্যক্তিরা। বিষয়টি নিয়ে ৫ জুলাই প্রথম আলোতে ‘মহেশখালীর সোনাদিয়ায় প্যারাবন কেটে আরও চিংড়িঘের তৈরি’ শীর্ষক আরেকটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

  মহেশখালী উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সভাপতি মহশিন আনোয়ার, উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুল করিম, উপজেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি জসিম উদ্দিন, কুতুবজোম ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রবিউল আলম, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য আমিরুজ্জামান, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল আমিন, কুতুবজোম ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আমির হোসেন, সাধারণ সম্পাদক আজিজুল হক, কুতুবজোম ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ তারেকের নাম রয়েছে। বাকি আসামিরা হলেন মোহাম্মদ ছিদ্দিক, নুরুল আমিন, সাবের আহমদ, ওসমান আলী, মোহাম্মদ ফারুক, জাহাঙ্গীর আলম, জাফর আলম, শাহাদাত কবির, সোনা মিয়া, শহিদুল্লাহ সিকদার, মোহাম্মদ নেজাম, নাসির উদ্দিন, শফি আলম, মোহাম্মদ আলম শরীফ, জয়নাল আহমদ, সাজ্জাদুল করিম ও আমির হোসেন।

মামলার এজাহারে বলা বলা হয়, গত ১৩ জুন ও ৫ জুলাই প্রথম আলো পত্রিকায় মহেশখালী উপজেলার কুতুবজোম ইউনিয়নের ঘটিভাঙায় ইসিএ এলাকায় সংকটাপন্ন সোনাদিয়া গাছ কেটে মাছ চাষ এবং মহেশখালীর সোনাদিয়ায় প্যারাবন কেটে আরও চিংড়িঘের তৈরি শিরোনামে পৃথক সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর ৭ জুলাই সকালে ঘটনাস্থলে পরিদর্শনে যান পরিবেশ অধিদপ্তরের কক্সবাজার কার্যালয়ের পরিদর্শক ফাইজুল কবির। পরিদর্শনে সোনাদিয়া দ্বীপে ইসিএ এলাকার মধ্যে ৭টি জায়গায় পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতি ব্যতীত অবৈধভাবে প্রাকৃতিক বন কেটে বাঁধ নির্মাণ, চিংড়িঘের ও লবণ মাঠ তৈরি এবং প্রাণীর আবাসস্থল ধ্বংস করতে দেখা গেছে। সেখানে ৭টি পয়েন্টে ৫৬২ একর জায়গায় পরিবেশ ও প্রতিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হয় এমন কার্যক্রম পরিচালনা করতে দেখা যায়। তবে ঘটনাস্থলে অভিযুক্তদের পাওয়া যায়নি।

মামলার বাদী ফাইজুল কবির প্রথম আলোকে বলেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে ঘটনার তদন্ত সম্পন্ন করে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হবে।

Categories: জাতীয়
Main Admin:
X

Headline

You can control the ways in which we improve and personalize your experience. Please choose whether you wish to allow the following:

Privacy Settings