দুর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে প্লট বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হকের বিরুদ্ধে শিগগিরই অনুসন্ধান শুরু হচ্ছে। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) ও গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অসাধু কর্মকর্তাদের যোগসাজশে প্লট বরাদ্দ নেওয়ার ঘটনায় তার বিরুদ্ধে আসা অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।অভিযোগের ভিত্তিতে গত ২৯ জুন দুদকের প্রধান কার্যালয়ের এনফোর্সমেন্ট টিম রাজউক কার্যালয়ে অভিযান চালায়। অভিযানে সংশ্লিষ্ট প্লট সম্পর্কে প্রয়োজনীয় নথি সংগ্রহ করা হয়। এতে প্রাথমিকভাবে অভিযোগের সত্যতা পেয়ে সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হকসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করার সুপারিশ জানিয়ে কমিশনে প্রতিবেদন পেশ করা হয়েছে। কমিশনের অনুমোদন পেলেই প্রকাশ্যে অনুসন্ধান শুরু হবে বলে দুদক সূত্রে জানা গেছে।
অভিযান শেষে কমিশনে দেওয়া পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজউকের পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পের ১ নম্বর সেক্টরের ১০২ নম্বর সড়কের ৪৪ নম্বর প্লটটি সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হকের নামে লিজ দলিলে রেজিস্ট্রি করা হয়েছে, যা তিনি ২০০১ সালে বিচারপতি কোটায় আবেদন সাপেক্ষে পেয়েছিলেন।
২০০৪ সালে ওই প্লটটি তার নামে সাময়িক বরাদ্দের ভিত্তিতে প্রথম কিস্তির টাকা পরিশোধের তাগিদ দিয়ে নোটিশ পাঠানো হলেও তিনি কোনো কিস্তি পরিশোধ করেননি। ফলে তার নামে বরাদ্দ করা প্লটটি বিধিমোতাবেক বাতিল করার কথা। কিন্তু তা করা হয়নি। উপরন্তু ২০০৯ সালে তিনি প্লটটি তার নামে স্থায়ী বরাদ্দ চেয়ে পুনরায় আবেদন করেন।
পরে ২০০৫ সাল থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত পুঞ্জীভূত সুদসহ সমুদয় টাকা জমা করলে প্লটটি তার নামে বরাদ্দের সিদ্ধান্ত দেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। অথচ গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এবং রাজউকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের যোগসাজশে সুদবিহীন কেবল প্রথম কিস্তির টাকা পরিশোধ ও বকেয়া টাকা অবসর গ্রহণের পর পরিশোধ করার শর্তে খায়রুল হক প্লটটির স্থায়ী বরাদ্দ নেন।
এনফোর্স টিমের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদনে সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক ও সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ জানানো হয়। বিষয়টি এখন কমিশনের বিবেচনায় রয়েছে। সুপারিশের ভিত্তিতে অনুমোদন দেওয়া হলেই অনুসন্ধান শুরু হবে।