পত্রিকার পাতা
ঢাকাবুধবার , ২৫শে জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
  1. অর্থনীতি
  2. আইন-আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. উদ্যোক্তা
  5. কর্পোরেট
  6. কৃষি ও প্রকৃতি
  7. ক্যাম্পাস-ক্যারিয়ার
  8. খেলাধুলা
  9. চাকরির খবর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. তারুণ্য
  13. ধর্ম
  14. পর্যটন
  15. প্রবাস
আজকের সর্বশেষ সব খবর

বড়দিনে মুসলিমদের অংশগ্রহণ: সংস্কৃতির অংশ নাকি ধর্মীয় বিশ্বাসের লঙ্ঘন?

মোফাজ্জল হোসেন, হেড অফ আইটি
ডিসেম্বর ২৫, ২০২৪ ২:২০ অপরাহ্ণ
Link Copied!

বড়দিন বা ক্রিসমাস একটি খ্রিস্টান ধর্মীয় উৎসব, যা প্রতিবার ২৫ ডিসেম্বর সারা বিশ্বে উদযাপিত হয়। এই দিনটি যিশু খ্রিষ্টের জন্মদিন হিসেবে খ্রিস্টানদের মধ্যে বিশেষ ধর্মীয় তাৎপর্য বহন করে। তবে, মুসলিম-majority দেশ বাংলাদেশসহ অনেক দেশে বড়দিনের উৎসব নিয়ে এক ধরনের মিশ্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যায়। বিশেষত মুসলমানদের মধ্যে বড়দিনের উদযাপনে অংশগ্রহণের প্রবণতা দিন দিন বাড়ছে, যা প্রশ্ন তুলছে—এটি সংস্কৃতির প্রতি শ্রদ্ধা, নাকি ধর্মীয় বিশ্বাসের প্রতি অবহেলা?

ইসলাম ধর্মের দৃষ্টিকোণ
ইসলাম ধর্মে বড়দিনের উৎসব পালন করা বা এতে অংশগ্রহণ করা স্পষ্টভাবে নিষিদ্ধ নয়, তবে এর অন্তর্নিহিত ধর্মীয় তাৎপর্য মুসলিমদের বিশ্বাসের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। ইসলামে ঈসা (আ.) আল্লাহর প্রেরিত এক নবী, কিন্তু তাকে ঈশ্বরের পুত্র হিসেবে মানা হয় না। খ্রিস্টান ধর্মের বিশ্বাস অনুযায়ী, বড়দিন যিশু খ্রিষ্টের জন্মদিন হিসেবে উদযাপিত হয়, যা ইসলামের তাফসির অনুযায়ী অযৌক্তিক। তাই ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে, একজন মুসলিমের জন্য অন্য ধর্মের ধর্মীয় উৎসবে অংশগ্রহণ করা উচিত নয়, কারণ এটি তাদের নিজের ধর্মীয় বিশ্বাসের প্রতি অবমাননা হতে পারে।

তবে ইসলাম মানবিকতা ও সুশৃঙ্খল সমাজ গঠনে উৎসাহ দেয় এবং মুসলমানদের জন্য অন্য ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে সবার মধ্যে শান্তিপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ। তাই মুসলিমরা বড়দিনে ধর্মীয় অংশগ্রহণ না করলেও, সামাজিক ও মানবিক দিক থেকে শুভেচ্ছা জানানো বা সমাজের ভালো কাজগুলোতে অংশগ্রহণ করতে পারে। তবে, মুসলিমদের জন্য কোনো ধর্মীয় আচার পালন করা বা মিথ্যা ধর্মীয় সম্মান প্রদর্শন করা যাবে না।

সংস্কৃতি ও সামাজিক সম্প্রীতি
বাংলাদেশের মতো একটি বহুজাতিক ও বহু ধর্মীয় দেশে, বড়দিনের উৎসব এখন আর শুধুমাত্র খ্রিস্টানদের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। ক্রমবর্ধমানভাবে, অনেক মুসলিম পরিবারও বড়দিনের সময় একে সামাজিক উৎসবে পরিণত করে, যেখানে তারা পরিবার বা বন্ধুদের সাথে মিলিত হয়ে উপহার প্রদান, খাবারের আয়োজন, বা শীতবস্ত্র বিতরণসহ মানবিক কাজের অংশ হিসেবে উদযাপন করে। এটি অবশ্যই সংস্কৃতির প্রতি শ্রদ্ধা, কিন্তু ধর্মীয় আচার পালন বা উৎসবের আধ্যাত্মিক অংশগ্রহণের সঙ্গে সম্পর্কিত নয়।

বড়দিনে মুসলিমদের অংশগ্রহণে প্রধানত সামাজিক সম্প্রীতির প্রচেষ্টা কাজ করে থাকে। বর্তমান সমাজে বিভিন্ন ধর্মের মানুষ একে অপরের উৎসবে অংশগ্রহণ করতে পারে, তবে ধর্মীয় আচার পালন করা উচিত নয়। সংস্কৃতির প্রতি শ্রদ্ধা রক্ষা করে, অন্য ধর্মাবলম্বীদের খুশি করার উদ্যোগ গ্রহণ করা যেতে পারে, কিন্তু ধর্মীয় বিশ্বাসের প্রতি অবহেলা করা উচিত নয়।

মুসলিমদের করণীয়
মুসলিমরা বড়দিন উদযাপনে অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে একটি ভারসাম্যপূর্ণ দৃষ্টিকোণ গ্রহণ করতে পারে। তারা খ্রিস্টানদের উৎসবে শুভেচ্ছা জানাতে পারে, সামাজিক কাজে অংশ নিতে পারে, কিন্তু বড়দিনের ধর্মীয় আচার পালন করা উচিত নয়। সমাজে একে অপরের ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধা রাখা এবং ধর্মীয় সীমারেখা মেনে চলা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

এছাড়া, মুসলমানরা এই সময়টাতে তাদের নিজের ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান যেমন ঈদ, ত্যাগের মহিমা ইত্যাদি স্মরণ করে, সেই সঙ্গে সমাজে শান্তি ও সহিষ্ণুতা বজায় রাখতে পারে। এই ধরনের প্রক্রিয়ায়, তারা অন্য ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধা এবং তাদের নিজস্ব ধর্মের প্রতি প্রেম বজায় রাখতে পারে।

বড়দিনে মুসলিমদের অংশগ্রহণের প্রশ্নটি একদিকে সামাজিক সম্প্রীতির প্রতিফলন হতে পারে, কিন্তু অন্যদিকে এটি ধর্মীয় বিশ্বাসের প্রতি অবহেলা হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। এর মধ্যে যে মূল সমস্যা রয়েছে, তা হলো ধর্মীয় শ্রদ্ধা ও সংস্কৃতির মিশ্রণ। মুসলমানদের উচিত, তারা বড়দিনের আচার-অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ না করলেও সামাজিক ঐক্য ও মানবিক দিক থেকে অংশগ্রহণ করতে পারে, তবে ধর্মীয় আচার পালনে তাদের সতর্ক থাকা উচিত।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।