X

বাড়তি দাম, পেঁয়াজ কেনা কমিয়েছেন ক্রেতারা

আগে যে ক্রেতা ১ কেজি পেঁয়াজ কিনতো সেই ক্রেতাই এখন কিনছেন আধা কেজি পেঁয়াজ। দাম বাড়ার পর থেকে পেঁয়াজ বিক্রি কমে গেছে। এখন পরিমাণে কম করে পেঁয়াজ কেনার ক্রেতার সংখ্যাই বেশি।

কথাগুলো বলছিলেন রাজধানীর মালিবাগের একজন মুদিদোকানি সুমন শেখ।

বাজারে বেশ কিছুদিন ধরে বেশি দামে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে। এখন বাজারে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা কেজিতে। আর ভারত থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১২০ টাকায়। এত বেশি দামে পেঁয়াজ কেনায় ক্ষুব্ধ যেমন ক্রেতারা, তেমনি খুচরা বিক্রেতারও অসন্তুষ্ট। কারণ দাম বাড়ার কারণে তাদের বিক্রি কমে গেছে। সাধারণ ক্রেতারা আর বেশি পরিমাণে পেঁয়াজ কিনছে না। আগে যে ক্রেতা এক কেজি করে পেঁয়াজ নিতেন সেই ক্রেতাই এখন আধা কেজি পেঁয়াজ কিনছেন।

মকবুল হোসেন তেমনই একজন ক্রেতা। রামপুরা বাজার থেকে পেঁয়াজ কিনেছেন তিনি। দামের বিষয়ে জানতে চাইলে বিরক্তি প্রকাশ করে বলেন, আজ দীর্ঘদিন যাবত পেঁয়াজের এত বাড়তি দাম, তবুও বাজার মনিটরিংয়ের কোনো উদ্যোগ চোখে পড়ল না। ক্রেতারা যে এত দাম দিয়ে বাধ্য হয়ে পেঁয়াজ কিনছে, সেখানে সংশ্লিষ্টদের কোনো পদক্ষেপ নেই। অথচ দীর্ঘদিন ধরে পেঁয়াজের বাজার বাড়তি যাচ্ছে। এত বেশি দাম হওয়ার কারণে আজ তো আধা কেজি পেঁয়াজ কিনলাম। আমি তো তাও আধা কেজি পেঁয়াজ কিনতে পেরেছি, কিন্তু এত বেশি দাম হওয়ার কারণে নিম্ন আয়ের মানুষরা তাও কিনতে পারছে না।

একই রকম অভিযোগ জানিয়ে মগবাজারের মুদির দোকান থেকে পেঁয়াজ কেনা আরেক ক্রেতা কামাল উদ্দিন বলেন, এত দামে পেঁয়াজ কেনা আসলেই খুব খারাপ লাগার মতো বিষয়। কেউই সাধারণ ক্রেতাদের কথা ভাবে না, তাদের জন্য কোনো পদক্ষেপ নেয় না। আগে তাও একসাথে দুই তিন কেজি করে পেঁয়াজ কিনেছি, এখন এক কেজি পেঁয়াজ কেনাই কষ্টকর। দাম বাড়ার পর থেকে নিয়মিত আধা কেজি করে পেঁয়াজ কিনছি। সরকারের উচিত বাজার সিন্ডিকেটের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া।

দাম বেশি হওয়ার কারণে পেঁয়াজ বিক্রির পরিমাণ আগের চেয়ে কমে গেছে জানিয়ে রাজধানীর শান্তিনগর এলাকার মুদির দোকানদার ফরিদুল ইসলাম বলেন, আমার দোকানে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ আজ ১৪০ টাকায় বিক্রি করছি, আর ভারতীয় পেঁয়াজ প্রতি কেজি বিক্রি করছি ১২০ টাকায়। আমাদের ছোট দোকানে আগে প্রতিদিন ৮/১০ কেজি পেঁয়াজ করেছি। এখন সেই বিক্রি কমে গেছে। দাম বেশি হওয়ার কারণে মানুষ এখন তুলনামূলক কম পেঁয়াজ কিনছে। আগে যেই ক্রেতা এক কেজি পেঁয়াজ কিনতো, সেই ক্রেতাই এখন আধা কেজি করে পেঁয়াজ কেনে।

বাড্ডা এলাকার আরেক পেঁয়াজ বিক্রেতা লিপন আহমেদ বলেন, পাইকারি বাজার থেকে কেনার সময় আমাদের দাম বেশি পড়ছে, তাই খুচরা বাজারে এর প্রভাব পড়েছে। আমাদের বিক্রিও আগের চেয়ে কমে গেছে। কারওয়ান বাজার বা অন্য যে কোনো পাইকারি বাজার থেকে বাধ্য হয়ে বেশি দামে কিনে আনতে হয়, এরপর আছে পরিবহন খরচ, লেবার খরচ। তারপর আবার পেঁয়াজ শুকিয়ে ওজন কমে যায়। সব মিলিয়ে এই দামে বিক্রি না করলে লস হয়ে যায়।

পেঁয়াজের দামের বিষয়ে কারওয়ান বাজারের পেঁয়াজ বিক্রেতা আলমগীর হোসেন বলেন, বাজারে দেশি পেঁয়াজ সরবরাহ একেবারে নেই বললেই চলে। মৌসুম শেষে কৃষকদের মজুত করা পেঁয়াজও শেষের দিকে। এ ছাড়া ভারতের আমদানি করা পেঁয়াজের পরিমাণও কম। সব মিলিয়ে বাজারে পেঁয়াজের দাম বেশি যাচ্ছে। এই দাম এমন বাড়তিই থাকবে কৃষকের নতুন পেঁয়াজ ওঠার আগ পর্যন্ত। শীতের শুরুতেই কিছু কিছু নতুন পেঁয়াজ উঠতে শুরু করবে, তখন থেকে পেঁয়াজের দাম আবার কমে আসবে। বর্তমানে বাজারে চাহিদার তুলনায় পেঁয়াজের সরবরাহ কম হচ্ছে।

Main Admin:
X

Headline

You can control the ways in which we improve and personalize your experience. Please choose whether you wish to allow the following:

Privacy Settings