X

বাফার জোনের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলেন জেলেনস্কি

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি রাশিয়া ও ইউক্রেনীয় বাহিনীর মধ্যে বাফার জোন তৈরি করে শান্তি চুক্তি করার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন।তিনি বলেছেন, এ ধরনের ধারণা আধুনিক যুদ্ধের বাস্তবতাকে প্রতিফলিত করে না।শুক্রবার (২৯ আগস্ট) সাংবাদিকদের সঙ্গে এ কথা বলেন তিনি।জেলেনস্কি বলেন, যারা আজকের যুদ্ধের প্রযুক্তিগত অবস্থা বোঝেন না, কেবল তারাই একটি বাফার জোনের প্রস্তাব করেন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি তাদের এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।প্রতিবেদনে বলা হয়, সম্প্রতি ইউরোপীয় নেতাদের পক্ষ থেকে ৪০ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি বাফার জোন তৈরির প্রস্তাব নিয়ে আলোচনার খবর প্রকাশিত হয়। প্রস্তাবটি যুদ্ধবিরতি বা দীর্ঘমেয়াদি শান্তিচুক্তির অংশ হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছিল।জেলেনস্কি বলেন, ড্রোন হামলার কারণে সামনের সারির দুই পাশে ইতোমধ্যেই এক ধরনের ‘মৃত অঞ্চল’ তৈরি হয়েছে, যেখানে ভারী অস্ত্রশস্ত্র ব্যবহার করা যায় না। “আজ আমাদের ভারী অস্ত্র ১০ কিলোমিটারের বেশি দূরত্বে অবস্থান করছে, কারণ ড্রোন সবকিছুই আঘাত করছে। এই বাফার বা ‘গ্রে জোন’ ইতোমধ্যেই বিদ্যমান,” তিনি জানান।এ ধরনের প্রস্তাব ইউক্রেনকে কিছু এলাকা ছেড়ে দেওয়ার ইঙ্গিত দেয়, যা জেলেনস্কি সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি বলেন, “রাশিয়া যদি আমাদের থেকে দূরে থাকতে চায়, তারা দখল করা এলাকা ছেড়ে গভীরে ফিরে যেতে পারে।”

জেলেনস্কি আরও জানান, রাশিয়া কূটনীতির জন্য প্রস্তুত নয়, বরং যুদ্ধ শেষ করতে বিলম্বের কৌশল নিচ্ছে। রাশিয়ার পূর্ণমাত্রার যুদ্ধের ৪০ মাস অতিক্রান্ত হলেও যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন শান্তি প্রচেষ্টা গতি হারাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে।গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, জেলেনস্কি ও ইউরোপীয় নেতাদের মধ্যে উচ্চপর্যায়ের বৈঠকের পর ইউক্রেন-রাশিয়ার মধ্যে শীর্ষ বৈঠকের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছিল। তবে জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মের্জ জানিয়েছেন, পুতিন এতে অংশ নিতে আগ্রহী নন এবং এমন বৈঠক “স্পষ্টতই” হবে না।এদিকে বৃহস্পতিবার কিয়েভে এক ভয়াবহ বিমান হামলায় রাশিয়া ৬২৯টি ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে ২৩ জনকে হত্যা করেছে। হামলায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের কার্যালয়ের কাছেও ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানে।ফ্রান্সের তুলনে বৈঠক শেষে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ও মের্জ জানিয়েছেন, রাশিয়ার ওপর চাপ বাড়ানো হবে। ম্যাক্রোঁ বলেছেন, সোমবারের মধ্যে আলোচনায় বসতে রাজি না হলে তা আবারও প্রমাণ করবে পুতিন ট্রাম্পকে “খেলাচ্ছেন”। মের্জও সতর্ক করেছেন যে এই যুদ্ধ “আরও অনেক মাস” চলতে পারে।ইইউ’র পররাষ্ট্রনীতির প্রধান কায়া ক্যালাস রাশিয়ার এই হামলাকে “ইচ্ছাকৃত উত্তেজনা” হিসেবে আখ্যা দিয়ে বলেন, এটি শান্তি প্রচেষ্টাকে বাধাগ্রস্ত করছে।

শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ, পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ও ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের সঙ্গে নিউইয়র্কে বৈঠকের পর জেলেনস্কির প্রধান সহকারী আন্দ্রি ইয়েরমাক জানান, ইউক্রেন যুক্তরাষ্ট্রের সব শান্তি উদ্যোগকে স্বাগত জানালেও রাশিয়া সেগুলোতে বাধা দিচ্ছে।ইউরোপীয় নেতারা শান্তি চুক্তি হলে ইউক্রেনকে নিরাপত্তা নিশ্চয়তা দেওয়ার পরিকল্পনা করছেন। কায়া ক্যালাস জানান, ইইউ প্রতিরক্ষামন্ত্রীরা শুক্রবার নিরাপত্তা নিশ্চয়তা “দৃঢ় ও বিশ্বাসযোগ্য” করার বিষয়ে একমত হয়েছেন। জেলেনস্কি বলেন, ইউক্রেনকে ন্যাটোর মতো সুরক্ষা দিতে আগামী সপ্তাহে আলোচনার ধারাবাহিকতা থাকবে।তবে রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা পশ্চিমা প্রস্তাবগুলোকে “একপেশে” আখ্যা দিয়ে বলেন, নিরাপত্তা নিশ্চয়তা রাশিয়ার নিরাপত্তা স্বার্থকেও বিবেচনায় নিতে হবে।

সূত্র: বিবিসি

Md Abu Bakar Siddique:
X

Headline

You can control the ways in which we improve and personalize your experience. Please choose whether you wish to allow the following:

Privacy Settings