X

বাহারি ফুল-ফলের নার্সারিতে খুঁজে নিয়েছেন নিজের ভবিষ্যৎ

নিজের জমি না থাকায় অন্যের জমি বর্গা নিয়ে বড় ভাইয়ের সঙ্গে প্রথমে যৌথভাবে নার্সারি দেন। পরবর্তীতে আলাদাভাবে ৫ লাখ টাকা পুঁজি নিয়ে নিজের নামে গড়ে তোলেন ‘মজুমদার নার্সারি’। বর্তমানে তার এই নার্সারিতে রয়েছে ৯ লাখ টাকার পুঁজি। প্রায় ২৫ বছর ধরে হাতে-কলমে আর কঠোর পরিশ্রমে গড়ে তুলেছেন নার্সারিটি। এখানে দুইজন সহকারী সবসময় কাজ করেন। স্বপ্ন দেখেন, একদিন জমি কিনে আরও বড় পরিসরে গড়ে তুলবেন।

নার্সারিটির মালিক মো. সোহাগ মজুমদার চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার ৮নং কাদলা ইউনিয়নের মনপুরা গ্রামের বাসিন্দা দেলোয়ার হোসেনের ছেলে। তিনি একজন সফল উদ্যোক্তা। কচুয়া-গুলবাহার সড়কের ইউনিয়ন পরিষদের পশ্চিম পাশে মনপুরা গ্রামে গড়ে তুলেছেন তার এই নার্সারি।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কচুয়া উপজেলায় সোহাগের নার্সারিতে রয়েছে ফলের মধ্যে থাই পেয়ারা, বারি ফোর মাল্টা, নাশপাতি, আপেল কুল, বাউ কুল, পেয়ারা, আমের কলমি, লিচুর কলমি, আমলকী, বহরা, হরতকি, জামের কলমিসহ প্রায় ৫০-৬০ রকমের কলমি চারা। এ ছাড়া ফুলের মাঝে বিশেষ করে রয়েছে, গোলাপ, ড্রাগন ফুল, নাইট কুইন, ক্যাকটাস, গাদা ফুল, রজনিগন্ধা, সূর্যমুখীসহ প্রায় ২০০ থেকে ৩০০ রকমের ফুল। বাহারী এই ফুল-ফলের সমারোহে গড়ে উঠা নার্সারিতে সোহাগ মজুমদার খুঁজে নিয়েছেন নিজের ভবিষ্যৎ। বর্তমানে তার নার্সারিতে রয়েছেন ৯ লাখ টাকার পুঁজি। প্রাকৃতিক দুর্যোগ বন্যার কারণে তার নার্সারিতে তেমন একটা বিক্রি নেই। তবে প্রতিকূলতা কাটিয়ে পুনরায় বিক্রির ধুম পড়বেন বলে জানান তিনি। তা ছাড়া এ নার্সারি থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে কুরিয়ারের মাধ্যমে বিভিন্ন ফলজ, বনজ ও ফুলের চারা সরবরাহ করা হয়।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সোহাগের দক্ষ হাতের ছোঁয়ায়, আমগাছে লিচু, লিচু গাছে জাম-এর কলমি ডাল গজিয়েছে। গুলবাহার-মনপুরা সড়কের পাশেই গড়ে ওঠায় সারা দেশের আনাচে-কানাচে মানুষ পাইকারি ও খুচরা দামে ওখান থেকে গাছ কিনে নিয়ে যায়। বর্তমানে তিনি ওই নার্সারিতে ৪০ শতাংশ চারা উৎপাদন করছেন। আশা করছেন ভবিষ্যতে তিনি ৬০ শতাংশ চারা এ নার্সারিতে উৎপাদন করতে পারবেন।

সোহাগ মজুমদার বলেন, তার নার্সারি থেকে কলমি চারা কিনে নিয়ে অনেকেই লাভবান। কেউ কেউ তার চারা কিনে নিয়ে আজ প্রতিষ্ঠিত ফলের ব্যবসায়ী হয়েছেন। প্রায় ২৫ বছর ধরে হাতে কলমে আর কঠোর পরিশ্রমে গড়ে উঠেছে এই মজুমদার নার্সারি। নার্সারিতে দুইজন লোক সবসময় কাজ করেন।

সোহাগ মজুমদারের স্বপ্ন নিজে জমি কিনে আরও বড় পরিসরে গড়ে তুলবেন নার্সারি। সারা দেশে তার কলমি গাছ রপ্তানি হবে, সেজন্য দরকার সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার। দীর্ঘদিনের নার্সারির কাজের অভিজ্ঞতায় সোহাগ মজুমদার আজ অনেকের কাছেই একটি অনুপ্রেরণার নাম।

নার্সারি শ্রমিক মহিন উদ্দিন মিয়াজী বলেন, আমি এ নার্সারিতে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছি। প্রতি মাসে যে বেতন পাই, তা দিয়ে আমার পরিবারের জীবিকা নির্বাহ হয়। এ নার্সারিতে বিভিন্ন ফলজ ও বনজ গাছের চারা রয়েছে। স্বল্পমূল্যে গাছের চারা বিক্রি করা হয়।

কচুয়া উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা মো. মেজবাহ উদ্দিন বলেন, মজুমদার নার্সারির নাম শুনেছি, নার্সারি একটি আয়বর্ধক কার্যক্রম। এটি এমন পেশা, যেখানে প্রাকৃতিকভাবে অকৃত্রিম আনন্দ পাওয়া যায় আবার আয়-উপার্জনেরও ব্যবস্থা হয়। সোহাগ মজুমদারের মতো কেউ যদি নার্সারি ও আয়বর্ধক উপার্জন করতে চায় তাহলে কৃষি বিভাগ তাদের সার্বিক সহযোগিতা করবে বলেও জানান তিনি।

Main Admin:
X

Headline

You can control the ways in which we improve and personalize your experience. Please choose whether you wish to allow the following:

Privacy Settings