ঢাকা, ২ মার্চ: পুঁজিবাজারে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ তদন্তে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) আজ (২ মার্চ) বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) কার্যালয়ে অভিযান চালিয়েছে। এই অভিযানে দুদকের এনফোর্সমেন্ট টিম বিভিন্ন নথিপত্র যাচাই-বাছাই করে এবং শেয়ার বাজার সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করে।
দুদক জানায়, বিএসইসি অনুমোদিত প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) সংক্রান্ত নথিপত্র পর্যালোচনায় গুরুতর অনিয়মের প্রমাণ পাওয়া গেছে। কোম্পানিগুলো বানোয়াট উপার্জন ও সম্পদের তথ্য দেখিয়ে অনুমোদন নিয়েছে, যেখানে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সুপারিশ ও পর্যবেক্ষণ উপেক্ষা করা হয়েছে।
অভিযানকালে দুদক টিম বিশেষভাবে বেক্সিমকো সুকুক ও আইএফআইসি আমার বন্ড সংক্রান্ত নথিপত্র সংগ্রহ করে। অভিযোগ রয়েছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এসব বন্ড ইস্যুর মাধ্যমে পুঁজিবাজার থেকে কয়েক হাজার কোটি টাকা উত্তোলন করেছেন।প্রাথমিক তদন্তে আরও উঠে এসেছে, প্রাইভেট প্লেসমেন্ট জালিয়াতি, অধিকমূল্যে শেয়ার ইস্যু, বাজারে প্রবেশের পর দ্রুত মূল্য পতন, এবং বিনিয়োগকারীদের প্রতারিত করার ঘটনা। এছাড়া দুর্বল মৌলভিত্তির কোম্পানিগুলোকে অবৈধভাবে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, যার ফলে স্বল্প সময়ের মধ্যেই তারা ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে নেমে এসেছে।
দুদক জানায়, অভিযানের সময় পাওয়া নথি ও অন্যান্য তথ্য পর্যালোচনা করে বিস্তারিত প্রতিবেদন তৈরি করা হবে এবং কমিশনের কাছে দাখিল করা হবে।উল্লেখ্য, সাবেক সরকারের ১৫ বছরে পুঁজিবাজারে ব্যাপক দুর্নীতি ও লুটপাটের অভিযোগ রয়েছে। এই সময়ে দুর্বল মৌলভিত্তির কোম্পানিকে আইপিওর অনুমোদন দেওয়া হয় এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাজার হাজার কোটি টাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বিএসইসির ভূমিকা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই বিতর্ক রয়েছে, যা দুদকের এই অভিযানে আরও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। তদন্ত চলমান রয়েছে এবং সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে দুদক।