X

বিজয় মিছিলে গিয়ে নিখোঁজ, ১৩ দিন পর মর্গে মিলল লাশ

২৯ বছরের তরুণ আল আমীন পরিবারের সাথে সৌদি আরবে থাকতেন। ৪ মাস আগে দেশে ফিরে সাভার বাইপাইল এলাকায় বাবার সঙ্গে মুদিখানার দোকান খুলে ব্যবসা শুরু করেন। ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর মিছিলে যোগ দিয়ে গুলিবিদ্ধ হন। এরপর থেকে কোনো সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না তার। শনিবার (১৮ আগস্ট) শহীদ সোহারাওয়ার্দী হাসপাতালের মর্গে আল আমীনের লাশ খুঁজে পান পরিবারের সদস্যরা।

আল আমীন শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার বিঝারী ইউনিয়নের দক্ষিণ মগর গ্রামের ইসমাইল মীরমালত ও জিয়াসমিন বেগম দম্পতির ছেলে। সন্তানকে হারিয়ে এখন পাগল প্রায় মা-বাবা।

রোববার (১৮ আগস্ট) আল আমীনের লাশ ‘যৌক্তিক আহবান’ নামের একটি সংগঠন শরীয়তপুরের জেলা শহরে নিয়ে আসে। তারা জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের সঙ্গে দেখা করে আল আমীনকে শহীদের মর্যাদাদেওয়া ও পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি জানান।
জানা যায়, ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর মিছিলে যোগ দেওয়ার জন্য বিকাল ৪টার দিকে বাসা থেকে বের হন আল আমীন। এরপর আর বাসায় ফিরে আসেননি। পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন স্থানে খুঁজে তার কোন সন্ধান না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়েন। তারা পুলিশ, সেনাবাহিনী ও র‍্যাবের কাছে গিয়ে খোঁজ করেন। কিন্তু কোথাও তার সন্ধান মেলেনি।
পরে জানতে পারেন সেদিন মিছিলে গুলিবিদ্ধ হন আল আমীন। সেখানকার স্থানীয়রা উদ্ধার করে তাকে শহীদ সোহওয়ার্দী হাসপাতালে নিয়ে যায়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরদিন তিনি মারা যান। কিন্তু পরিবারের সদস্যদের খুঁজে না পাওয়ায় অজ্ঞাত পরিচয়ের লাশ হিসেবে শহীদ সোহওয়ার্দী হাসপাতালের মর্গে রাখা হয় তাকে।

গত শুক্রবার একটি সংবাদ মাধ্যমের সংবাদ দেখে আল আমীনের ছোট বোন আফলান সিনথিয়া ছুটে যান শহীদ সোহওয়ার্দী হাসপাতালে। শনিবার দুপুরে হাসপাতালের মর্গে আল আমীনকে সনাক্ত করা হয়। এরপর রাতে তার লাশ নিয়ে বাড়ি পৌঁছান। রাতে গ্রামের বাড়িতে জানাজা দেওয়া হয়।

আল আমীনের বোন আফলান সিনথিয়া বলেন, আমরা ছোটবেলা থেকে সৌদি আরবে থাকি। দেশের রাজনীতি আমরা বুঝি না। আমার ভাই সেই নোংরা রাজনীতিতে পরে জীবন হারালো। বাবা-মায়ের ইচ্ছে ছিল ডিসেম্বরে ওকে বিয়ে দেয়ার। সেই আশা আর পূরণ হলো না।

আল আমীনের বাবা ইসমাইল মীরমালত বলেন, আমরা পরিশ্রম করে জীবনধারণ করছিলাম। কেন আমাদের ওপর এমন বিপর্যয় নেমে আসলো? ছেলের লাশটা ১২দিন বেওয়ারিশ হয়ে হাসপাতালের মর্গে পড়েছিল। পিতা হিসেবে এই যন্ত্রনা কী তা আমি কাউকে বুঝাতে পারব না। আমি ছেলে হত্যার বিচার চাইবো কার কাছে?

শরীয়তপুরের পুলিশ সুপার মাহবুবুল আলম বলেন, ছেলেটির মৃত্যুর ঘটনায় আমরাও ব্যথিত। ওর পরিবার ও একটি সংগঠন থেকে কিছু দাবি তুলে ধরা হয়েছে। আইনের মধ্যে থেকে যা করা যায় আমরা সেগুলো বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

 

Main Admin:
X

Headline

You can control the ways in which we improve and personalize your experience. Please choose whether you wish to allow the following:

Privacy Settings