X

বোটক্স করতে গিয়ে হচ্ছে চেহারা বিকৃতি, হতে পারে অন্ধত্বও!

‘আমার মুখের এক পাশ পুরোপুরি প্যারালাইজড হয়ে গেছে। আমার বাম পাশে কোনো এক্সপ্রেশন নাই,’ এভাবেই নিজের কষ্টের কথা জানাচ্ছিলেন এক নারী।

এক সময় ক্যামেরার সামনে কথা বলাই ছিল তার পেশা; কিন্তু বোটক্স চিকিৎসা পদ্ধতি নিজের মুখমণ্ডলে প্রয়োগের পর, নিজের চেহারা লুকিয়ে রাখতে বাধ্য হচ্ছেন ওই নারী। অথচ সৌন্দর্য বাড়াতেই তিনি গিয়েছিলেন বিউটি পার্লারে।

চেহারা বিকৃতির পাশাপাশি ওই মডেল ও অভিনেত্রীর কাছ থেকে হাতিয়ে নেয়া হয় এক লাখ ৬০ হাজার টাকা।

তিনি বলেন, ‘বোটক্স করার পর আমার একটা ফেস উপরের দিকে চলে গেছে এবং আরেকটা ফেস একটু বেঁকে গেছে। এজন্য আমি কাজে যেতে পারছি না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি যেই চিকিৎসকের কাছে গিয়েছিলাম, তার ফেসবুক পেজে গিয়েও দেখি তিনি একটি এস্থেটিক সেন্টারের চিকিৎসক। একটা পর্যায়ে জানতে পারি, তিনি ওই হাসপাতালে কাজ করেন, তিনি আসলে সেখানকার ডাক্তার না।’

আরও পড়ুন: সত্যি কি সৌন্দর্য ধরে রাখতে ‘বোটক্স’ করেছেন মাধুরী?

চেহারায় তারুণ্য ধরে রাখার জন্য রাজধানীতে বর্তমানে বোটক্স নামে জনপ্রিয় এ পদ্ধতির ফাঁদে পড়েছেন অনেকে।

ভুক্তভোগীরা অভিযোগ নিয়ে রাজধানীর মিরপুর-২ নম্বরের অর্পাস এস্থেটিক বিউটি জোনে সরেজমিনে গিয়ে কথা হয় এক নারীর সঙ্গে।

সেখানে অভিযুক্তের বিষয়ে জানতে চাইলে অর্পাসে কর্মরত এক নারী বলেন, তিনি এখন সুইজারল্যান্ডে আছেন। সেখানে তার স্যালুন আছে। সেখানেও তিনি একই কাজ করছেন।

নিয়মানুযায়ী ত্বকের চিকিৎসায় বিশেষ পারদর্শী চিকিৎসকরাই বোটক্স করার কথা। কিন্তু এ বিউটি জোনের কর্ণধার নিজেই স্বীকার করেন, তাদের কোনো চিকিৎসক নেই।

তিনি বলেন, ‘আপু নিজেই করাচ্ছেন। আপু এস্থেটিক বিষয়গুলোতে…।’

শুধু মিরপুর নয়, রাজধানীর অলিগলিতো বটেই, মধ্যবিত্ত থেকে শুরু করে অভিজাত এলাকাতেও বিউটি পার্লারের ভেতরে ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে ওঠেছে, শত শত বোটক্স সেবা নামের ব্যবসাকেন্দ্র। যদিও বেশিরভাগেরই নেই যথাযথ অনুমোদন।

চিকিৎসকরা বলছেন, বোটক্স দিনদিন জনপ্রিয়তা পেলেও অনুমোদনহীন বিউটি পার্লারে ক্লিনিক্যাল এ ট্রিটমেন্টে হতে পারে অন্ধত্ব, মুখের ত্বক পুড়ে যাওয়া, এমনকি ক্যান্সারের মতো ব্যাধিও। সৌন্দর্য বাড়াতে গিয়ে যেন জীবনটাই হারাতে না হয়। তাই এ বিষয়ে আগ্রহীদের সতর্ক থাকতে হবে।

ভেল্লা লেজার কেয়ারের এস্থেটিক ফিজিশিয়ান ডা. দিলরুবা সুলতানা সুমাইয়া বলেন, একটা বয়স পরে ফেসে রিংকেল আসা শুরু করে। সেটাকে রিমুভ করার জন্য আমরা বোটক্সটা করি। এটা তিন থেকে ছয় মাস পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে।

শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের সহকারী অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ তারিকুজ্জামান মিয়া বলেন, বিভিন্ন বিউটি পার্লারে এ কাজের জন্য গেলে সুন্দরের চাইতে অসুন্দর হওয়ার শঙ্কাই বেশি থেকে যায়; কারণ সেখানে কোনো চিকিৎসক নেই।

তবে এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন।

তিনি বলেন, ‘বোটক্সটা শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটে হয়। এটা শুধু আমাদেরই করার অনুমোদন রয়েছে; এর বাইরে কারও নেই। অনিয়ম করে যারা এ কাজ করছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

এ মুহূর্তে বোটক্স ট্রিটমেন্টের বিধিনিষেধ নিয়ে দেশে সুনির্দিষ্ট কোনো আইন নেই। এ সুযোগে অনলাইন এবং অফলাইনে বিজ্ঞাপন দিয়ে অবাধে চলছে চিকিৎসার নামে অপচিকিৎসা।

Main Admin:
X

Headline

You can control the ways in which we improve and personalize your experience. Please choose whether you wish to allow the following:

Privacy Settings