X

ব্যাংক একীভূতকরণ প্রক্রিয়া শুরু

ব্যাংক একীভূতকরণ প্রক্রিয়া শুরুছে স্থানান্তর করা হবে।’

ব্যাংক একীভূতকরণ প্রক্রিয়া শুরু

বাংলাদেশ ব্যাংক দেশের পাঁচটি শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকের আর্থিক অবস্থার অবনতি বিবেচনায় তাদের একীভূতকরণের উদ্যোগ নিয়েছে। এ লক্ষ্যে আজ প্রতিষ্ঠানগুলোকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হবে বলে জানা গেছে।

ব্যাংক পাঁচটি হলো ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক ও এক্সিম ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানান, এ পাঁচ ব্যাংকের মধ্যে কিছু ব্যাংক দাবি করেছে তারা আর্থিকভাবে টিকে থাকার সক্ষমতা রাখে এবং তাদের একীভূতকরণ প্রয়োজন নেই। তাই তাদের নোটিশ দিয়ে জানানো হবে, কেন তাদের একীভূতকরণ করা হবে না তা তারা ব্যাখ্যা দিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে জানাবে।

কারণ দর্শাও নোটিশ দেওয়ার পর প্রতিটি ব্যাংকের দেওয়া জবাব পর্যালোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে বাংলাদেশ ব্যাংক। যদি কোনো ব্যাংক দাবি করে যে তারা স্বতন্ত্রভাবে টিকে থাকতে সক্ষম, তবে তাদের কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে নেওয়া ঋণ পরিশোধ, নগদ জমা অনুপাত (সিআরআর), বাধ্যতামূলক তরল সম্পদ অনুপাত (এসএলআর) এবং মূলধন পর্যাপ্ততার ঘাটতি মেটাতে হবে। এ ছাড়া তাদের পরিচালনা পর্ষদ বা উদ্যোক্তাদের নতুন করে মূলধন বিনিয়োগ করতে হবে। ব্যাংকগুলোর আর্থিক পরিকল্পনা ও নিয়ন্ত্রক সংস্থার শর্তপূরণের ভিত্তিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সিদ্ধান্ত নেবে প্রস্তাবিত একীভূতকরণ প্রক্রিয়া থেকে কোনো ব্যাংককে অব্যাহতি দেওয়া হবে কি না।

৯ মে জারিকৃত ব্যাংক রেজুলেশন অধ্যাদেশ, ২০২৫ অনুযায়ী বাংলাদেশ ব্যাংক এখন দুর্বল ব্যাংকগুলো অধিগ্রহণ, সম্পদ স্থানান্তর এবং নতুন ব্রিজ ব্যাংক গঠনের মাধ্যমে ব্যাংকিং কার্যক্রম অব্যাহত রাখার ক্ষমতা পেয়েছে। এ অধ্যাদেশ অনুযায়ী বাংলাদেশ ব্যাংক নিলামের মাধ্যমে দুর্বল ব্যাংকগুলোর সম্পদের মূল্য নির্ধারণ করতে পারবে এবং একীভূতকরণ প্রক্রিয়া শুরু হলে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের শেয়ারহোল্ডাররা শেয়ার বিক্রি করতে পারবেন না। এ উদ্যোগ দেশের ব্যাংকিং খাত স্থিতিশীল ও নিরাপদ রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংকের বৃহত্তর কৌশলের অংশ বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদেরা।

গত বছরের আগস্টে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর দেশের বেশ কয়েকটি ব্যাংক থেকে টাকা তুলে নেন আমানতকারীরা। সময়মতো গ্রাহকের টাকা ফেরত দিয়ে এসব ব্যাংক প্রায় সাড়ে ৫২ হাজার কোটি টাকা ধার নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছ থেকে। গ্রাহকের আমানত পরিশোধের সুবিধার্থে ১০টি ব্যাংককে ‘ডিমান্ড লোন’ হিসেবে ৩৩ হাজার কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি নয়টি ব্যাংকের চলতি হিসাবের ঘাটতিতে থাকা ১৯ হাজার কোটি টাকাও রূপান্তর করা হয়েছে ডিমান্ড লোনে। সহায়তা পাওয়া ব্যাংকগুলোর মধ্যে রয়েছে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক (এসআইবিএল), ন্যাশনাল ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ, এবি ব্যাংক, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক লিমিটেড (বিসিবিএল), ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি), বেসিক ব্যাংক এবং পদ্মা ব্যাংক। উল্লেখযোগ্যভাবে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক সবচেয়ে বেশি সহায়তা পেয়েছে, যার পরিমাণ ১৪ হাজার ২০০ কোটি টাকা।

সামনে জাতীয় নির্বাচন। এর মধ্যে পাঁচটি বেসরকারি ইসলামি ব্যাংকের খুব শিগগিরই একীভূত হওয়ার কথা জানিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া এবং আমরা আশা করি পরবর্তী সরকার এটি অব্যাহত রাখবে।’ তিনি জানান, এ ব্যাংকগুলোতে ইতোমধ্যে তারল্যসহায়তা দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন অনিয়ম এবং ঋণ জালিয়াতির কারণে দুর্বল হিসেবে চিহ্নিত ছয়টি প্রতিষ্ঠান জুলাইয়ের মধ্যে একীভূত হওয়ার কথা রয়েছে।

‘এ ব্যাংকগুলো সরকারের সাময়িক নিয়ন্ত্রণে থাকবে’ উল্লেখ করে ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘পুনর্গঠনের পর তাদের শেয়ার সরকারি এবং আন্তর্জাতিক কৌশলগত বিনিয়োগকারীদের কাছে স্থানান্তর করা হবে।’

Md Abu Bakar Siddique:
X

Headline

You can control the ways in which we improve and personalize your experience. Please choose whether you wish to allow the following:

Privacy Settings