জামালপুরের ইসলামপুরে ব্রহ্মপুত্র শাখার দশআনি নদের পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে নদীভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। গত ৪-৫ দিন থেকে বন্যার পানি কমতে শুরু করেছে। উপজেলার চর গোয়ালিনী ইউনিয়নের পূর্ব হরিণধরা ও পশ্চিম হরিণধরা এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
সকালে সরজমিনে গিয়ে জানা যায়, উপজেলার চর গোয়ালিনী ইউনিয়নের পূর্ব হরিণধরা এলাকায় ও পশ্চিম হরিণধরা গ্রামে নদের পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। গত ১ মাসে ব্রহ্মপুত্র দশআনি নদের ভাঙনে বিলীন হয়েছে ২০টি বাড়ি ও ৫-৬ একর ফসলি জমি। হুমকির মুখে রয়েছে ১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১টি মাদ্রাসা, ৩টি মসজিদ ও দুটি হাটবাজার। এ ভাঙনের কবলে পড়ে দিশাহারা হরিণধরা এলাকায় মানুষ।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, গত বছর ভাঙনরোধে জিওব্যাগ ফেলার প্রকল্প কাজ ব্রিজের উত্তর পাশে করেছে। আমাদের এপাশে কোনো কাজ করেনি।
পূর্ব হরিণধরা গ্রামের মো. হাসেম আলী কালবেলাকে বলেন, ব্রহ্মপুত্র নদের পানি কমতে থাকায় তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। হঠাৎ করে মাটি নিচের দিকে দেবে যাচ্ছে। গ্রামের মানুষজন রাতে অনেক আতংকে থাকে কখন কার বাড়ি নদীতে চলে যায়। এতে করে দিশাহারা হয়ে পড়েছেন তারা। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমাদের দাবি তিনি যেন জামালপুর ইসলামপুরের ব্রহ্মপুত্র শাখার দশআনি নদের বাম তীরে স্থায়ীভাবে ভাঙন রোধের ব্যবস্থা নেন।
পূর্বহরিণধরা গ্রামের হান্নান মিয়া বুকভরা বেদনা নিয়ে বলেন, ‘আমরা ত্রাণ চাই না, আমরা নদী শাসন চাই। কত লোকজন এলো ভাঙন দেইখা আশা দিয়া গেল, যে নদী আর ভাঙবো না। কিন্তু তারা যাওয়ার কিছুদিন যেতে না যেতেই নদীতে সর্বনাশা ভাঙন দেখা দেয়। আমাগরে দুঃখ-কষ্ট কেউ বুঝল না। আমরাও একসময় ধনী ছিলাম, নদীতে ভেঙে আমরা এখন পথের ফকির হয়ে গেছি।’
চর গোয়ালিনী ইউনিয়ন পরিষদের পশ্চিম হরিণধরা গ্রামের ৩নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. সাখাওয়াত হোসেন কালবেলাকে বলেন, ব্রহ্মপুত্র নদের শাখা দশআনির পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে পূর্ব হরিনধরা ও পশ্চিম হরিণধরা গ্রামে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। ১ মাসে ২০টি বাড়ি নদীতে বিলীন হয়েছে। যেভাবে নদীতে ভাঙন দেখা দিয়েছে, নদের ভাঙন দেখে এলাকার মানুষ দিশাহারা হয়ে পড়েছেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘বন্যার পানি কমার সঙ্গে সঙ্গেই স্থায়ী ব্যবস্থা করা হবে, আশা করছি দ্রুতই পরিস্থিতির উন্নতি হবে।