X

ভালো নেই হাওর পাড়ের কৃষকরা

ভালো নেই হাওর পাড়ের বাসিন্দারা।

তবে এরই মাঝে প্রকৃতি থেকে বিদায় নিয়েছে বিধ্বংসী ‘আফাল’ আর ‘বলন’। স্থানীয় ভাষায় ‘আফাল’ অর্থ বড় ঢেউ আর ‘বলন’ এর অর্থ ঘূর্ণায়মান ঢেউয়ের তাণ্ডব। যা এখন আর চোখে পড়ছে না হাওর এলাকায়। কিন্তু দিন যত যাচ্ছে বানের পানিতে সৃষ্ট জলাবদ্ধতা ততই ভেসে উঠছে। ধীরে ধীরে জেগে উঠছে ডুবন্ত ঘর-বাড়ি, রাস্তা-ঘাট ও কৃষিজমি। দৃশ্যমান হচ্ছে আফাল ও বলনের আঘাতে লণ্ডভণ্ড হয়ে যাওয়া ক্ষতিগ্রস্ত বসতবাড়ি আর রাস্তাঘাট।

এখন দৃশ্যমান এমন ক্ষতচিহ্নে দিশেহারা হাওর তীরের সর্বহারা কৃষিজীবী লোকজন। কিভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ঘর-বাড়ি আর রাস্তা-ঘাট মেরামত করবেন এখন এমন দুশ্চিন্তা তাদের। এবছর মার্চ থেকে শুরু হওয়া কয়েক দফা বন্যায় হাওর ও হাওরের তীরবর্তী এলাকাও ছিল বানের পানিতে টইটুম্বর।

হঠাৎ এমন আকস্মিক বন্যায় বোরো ধান আর সবজির ক্ষেত দখলে নেয় পানি। রাস্তা-ঘাট,ঘর-বাড়ি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মসজিদ, মন্দির আর হাট বাজারেও ছিল বানের পানির রাজত্ব। বন্যা দীর্ঘ হয়ে রুপ নেয় স্থায়ী জলাবদ্ধতায়। আর এতে প্রলয়ের শক্তিতে বলিয়ান হয়ে হাওর তীরের বসতভিটা আর রাস্তা-ঘাটে আঘাত হানে আফাল ও বলন। বন্যা, জলাবদ্ধতা আর আফাল ও বলনে নিঃস্ব হাওর তীরের মানুষ। এবছর ফসল আর বসত ভিটা সবকিছুই কেড়ে নিয়েছে একের পর এক এমন সব প্রাকৃতিক দুর্যোগ।

হাকালুকি হাওর তীরবর্তী এলাকায় বসত বাড়িতে এখন স্পষ্ট হয়েছে আফাল আর বলনের আঘাতের ক্ষতচিহ্ন। দৃশ্যমান এমন ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে অনেকেই চেষ্টা করছেন। অনেকেই নৌকায় করে দূর থেকে মাটি এনে বসতভিটা ভরাট করছেন। আবার কেউ কেউ বসতঘরের বাঁশের বেড়া ও চালা মেরামত করছেন। তবে অধিকাংশ লোকজন আর্থিক অনটনের কারণে ভাঙা ঘরে পরিবার পরিজনকে নিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাস করছেন। তারা রাত পোহালে নিজ গ্রাম ছেড়ে অন্য এলাকায় গিয়ে দিনমজুরের কাজ করছেন কিংবা মাছ ধরছেন।

হাওর পাড়ের কৃষক জমির মিয়া বাংলানিউজকে জানান, তার বাড়ির উঠানজুড়ে পানি আর পানি। বর্তমানে দিনমজুরের কাজ করে যা পাচ্ছেন তাই দিয়ে কোনোভাবে সংসার চালাচ্ছেন তিনি। ওই আয় থেকে ঘর-বাড়ি, রাস্তা-ঘাট, নলকূপ ও স্যানেটারি ল্যাটট্রিন মেরামতের সাধ্য নেই তার। তার মতো হাওর পাড়ের কৃষকরা আজ কর্মহীন।

তিনি বলেন, বোরো ধানের সময় ঘনিয়ে আসছে কিন্তু এখনো কমছে না জলাবদ্ধতা। সবজি আর বোরো চাষের অধিকাংশ জমিতে এখনো কোমর সমান পানি। তাই অনেকটা অলস সময় পার করতে হচ্ছে। যদি হাতে টাকা থাকতো তাহলে ক্ষতিগ্রস্ত ঘরের মেরামত করে এই সময়টাও কাজে লাগাতে পারতাম।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আফাল আর বলনের ক্ষতচিহ্ন অপরদিকে দীর্ঘস্থায়ী জলাবদ্ধতায় এবছরের মতো আগামীতেও বোরো ধান হারানোর দুশ্চিন্তা। সবমিলিয়ে চরম হতাশায় দিন কাটাচ্ছেন হাওর পাড়ের কৃষকরা। রাস্তা-ঘাট আর ঘরবাড়ি জেগে উঠায় আশ্রয়কেন্দ্র ছাড়তে হয়েছে অনেক আগেই। কিন্তু মাথাগোঁজার ঠাঁই এখনো নিরাপদ নয়। কারণ, দীর্ঘ জলাবদ্ধতায় আর আফাল ও বলনে ব্যাপক ক্ষতিতে পড়েছে তাদের বসতভিটা আর রাস্তা-ঘাট। যেগুলোর মেরামতের সাধ্য নেই তাদের। কিন্তু তারপরও উপায়ান্তু না থাকায় বাধ্য হয়ে নিজেদের ঘর বাড়িতে অনেকটা ঝুঁকি নিয়েই বসবাস করছেন।

Main Admin:
X

Headline

You can control the ways in which we improve and personalize your experience. Please choose whether you wish to allow the following:

Privacy Settings