X

ময়মনসিংহে নারী চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ২ মামলা, বিচার নিয়ে শঙ্কা

ময়মনসিংহে আলোচিত গাইনি ও প্রসূতি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা: রোকসানা করিমের বিরুদ্ধে আদালতে দুইটি মামলা দায়ের হয়েছে। এর মধ্যে একটিতে কর্তব্য অবহেলায় নবজাতক মৃত্য এবং অপরটিতে রোগীর পেটে গজ রেখে সেলাই করে দশ লক্ষ টাকা ক্ষতি সাধনসহ হামলা ও মারপিটের অভিযোগ আনা হয়। তবে ওই নারী চিকিৎসক প্রভাবশালী হওয়ায় মামলা দু’টির বিচার নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন মামলার বাদি ও ভুক্তভোগীরা।

ময়মনসিংহ পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো: মোজাম্মেল হক বলেন, আদালতের নির্দেশে মামলার তদন্ত কার্যক্রম চলছে। তদন্ত শেষ না করে এনিয়ে কিছু বলা যাবে না। তবে আমরা চেষ্টা করছি ঘটনার সঠিক কারণ উদঘাটন করে প্রতিবেদন তৈরী করতে।

সূত্র জানায়, গত ২৪ সেপ্টেম্বর ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার আঠারবাড়ী রেলওয়ের স্টেশন মাষ্টার লাবনী আক্তার আঁখি (৩৩) বাদি হয়ে ময়মনসিংহের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। এই মামলার অন্য আসামিরা হলেন- ইউনিভার্সেল হাসপাতালের চিকিৎসক ডা: নাজমুল ইসলাম পাটোয়ারী (৪০), নার্স ফাল্গুনী ¤্রং(২৫), ওটি ব্যবস্থাপক কামরুজ্জামান খান পাঠান, হাসপাতালের মালিক সুজাউল করিম

মামলার এজাহারে অভিযোগ করেন- গত ২০ আগষ্ট রাতে ময়মনসিংহ নগরীর ইউনিভার্সেল হাসপাতালে ডা: রোকসানা করিমের তত্তা¡বধানে ২৮ হাজার টাকা চুক্তিতে রাত ৭টায় সিজার হওয়ার কথা হয়। কিন্তু ডা: রোকসানা করিম দায়িত্ব ও কর্তব্য কাজে অবহেলা করে রাত ৯টা ৪০মিনিটে দায়সারা অপরাশেন করে। এতে নবজাতক শিশুটি জন্মগ্রহনের আধাঘন্টা পর অসুস্থ হয়ে পড়লে শাস্বকষ্ট শুরু হয়। তখন সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকদের অবগত করা হলেও তারা কোন ধরনের চিকিৎসার উদ্যোগ গ্রহন করেনি। এতে অসুস্থ শিশুটি রাত ১১টা ৫০মিনিটে মৃত্যুবরণ করে।

বাদির আঁখি অভিযোগ করে, চুক্তি অনুযায়ি কথা ছিল সিজারের সময় একজন শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক রাখা হবে। কিন্তু রোকসানা করিম শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক না এনে অজ্ঞানের ডাক্তার দিয়ে নবজাতকের চিকিৎসা করিয়েছেন। ফলে চিকিৎসক এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে আমার নবজাতক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আদালতে মামলা দায়ের করেছি। কিন্তু মামলার তদন্ত কাজে কোন অগ্রগতি দেখছি না। এতে ন্যায় বিচার পাব কী-না তা নিয়ে শঙ্কা রয়েছে।

অপর মামলার বাদী ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার পুলর গ্রামের মৃত মিরাজ আলীর ছেলে মো. জলিল মিয়া। এই মামলাতেও ডা: রোকসানা করিম ও চৌধুরী হাসপাতাল ও ডায়ানোস্টিক সেন্টারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শহীদুল আলম চৌধুরী শহীদের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ৬ থেকে ৭ জনকে আসামি করা হয়।

মামলার বাদী জলিল মিয়া এজাহারে অভিযোগ করেন, চলতি বছরের ৩ জুন ময়মনসিংহ নগরীর চৌধুরী হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনোস্টিক সেন্টারে আমার মেয়ে খাদিজার সিজার অপরাশেন করা হলে একটি পুত্র সন্তানের জন্ম হয়। কিন্তু সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকরা তার পেটে গজ রেখে সেলাই করে দেয়। এতে আমার মেয়ের পেটে প্রচন্ড ব্যাথা ও রক্তক্ষরণ হলে আসামিরা তড়িগড়ি ছাড়পত্র দিয়ে হাসপাতাল থেকে রোগীকে বিদায় করে দেয়। কিন্তু কয়েক দিনের মধ্যে আমার মেয়ের অবস্থা খারাপ হতে থাকলে গত ২৪ জুলাই তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসকরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে অপরাশেন করে তার পেট থেকে গজ বাহির করে। বিষয়টি চৌধুরী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানাতে গেলে তারা আমিসহ আরও দুইজনকে বেধরক মারধর করে আহত করে। এ ঘটনায় আসামিরা আমার দশ লক্ষ টাকার ক্ষতি সাধন করেছে। আমি এ ঘটনার ন্যায় বিচার দাবি করছি।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে মামলার আসামি ও সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক ডা: রোকসানা করিম। তিনি বলেন, মামলা হলে হতে পারে, তবে মামলার বিষয়ে আমার জানা নেই। পরে খোঁজ নিয়ে বিস্তারিত বলা যাবে।

Main Admin:
X

Headline

You can control the ways in which we improve and personalize your experience. Please choose whether you wish to allow the following:

Privacy Settings