X

ময়রা যেমন মিঠাই তেমন

উনপঞ্চাশ পবন পেরিয়ে জীবনের মাঝপথে দাঁড়িয়ে একটু পিছন ফিরে তাকাই। মনে হয় দাঁড়িয়েছি হেমন্তের প্রথম প্রহরে- মেঘগুলো সারি ভেঙ্গে বিদ্রোহী বকের মতো এলোমেলো কন্ডলী পাকিয়ে ছেয়ে ফেলছে ু রবির কর। নীল আকাশে সাদা মেঘের ভেলায় রোদ মেঘের লকোচ ু রি যেন ু চলছে রোমাঞ্চকর। ভোরের হালকা কয়াশার চাদর ভেদ করে ঘাসের ডগায় ু সোনালি রোদ্দুরের প্রিয়তম পরশে চোখে পড়ে মুক্তোর মতো শিশিরকণা।

নীলাভ আকাশে অসীমের পানে তাকিয়ে নিজেকে হারিয়ে তাই খঁজে ফিরি ু বারে বার। আর কত কাল!
নাম না জানা কোন এক কালে বায়মন্ডলে ছড়িয়ে ছিলেম অদ ু শ্য অন ৃ কণা ু হয়ে। প্রকতির নিয়মেই ক্ষ ৃ দ্র ক্ষু দ্র ত ু ণলতা থেকে স ৃ ুশোভিত শস্যকণা। উন্মক্তু উদার পথে সবিশাল আকাশের নিচে বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ পেরিয়ে এক সময় ু ঠাই মেলে গ ঁ ৃহপালিতের উদরে। নানান প্রμিয়ায় কোন এক মহেন্দ্র ক্ষণে
নির্যাস মেলে পরিশুদ্ধ দগ্ধরূপে। ু μমেই সদীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে সীমাহীন ঘাত- ু প্রতিঘাত আর প্রতিকলতার নিষ্ঠ ু রতা পেছনে ফেলে পাহাড়সম অটল আর ু অবিচল থেকে অ¤ø মধর পরিণয়ে পরিণতি ঘটে বহু প্রত্যাশার জাতক ু ‘ছানারূপে’।
এরপর শুরু হয় ময়রার
সন্ধান। নিজেকে প্রমাণের
আপ্রাণ প্রচেষ্টা। আশির
দশকে কন্যা দায়গ্র¯’ পিতা
যেভাবে তার অতি আদরের
হৃদয়ের সবটকু ভালোবাসার ু ডিবা মেয়েটিকে উপ¯’াপন
করেন- পাত্র পক্ষের সামনে
একটু অনুগ্রহ লাভের আশায়
ঠিক তেমনি, হয়ত কখনো
বা তার চেয়েও বেশি! তিনতিনবার বিসিএস ভাইভাসহ
পিএসসির বিভিন্ন
সাক্ষাৎকারের হাত বদলিয়ে
পাড়ি জমায় দেশের প্রায়
সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের পবিত্র
অঙ্গনে অশেষ আগ্রহভরে।
সদীর্ঘ দ ু ই য ু গে অর্ধশতেরও ু বেশি নিজেকে প্রমাণের
প্রাণান্ত চেষ্টা চালিয়েও
অবশেষে ‘উনপাঁজুরে’
উপাধিতেই পরিতৃপ্ত! আজব
পৃথিবীর রহস্যময় বন্ধুর
চলার পথে সবাইকেই কিছু নিয়ম মেনে নিতে হয়;
কিš‘ নিয়মের বাইরেও যে অনেক নিয়ম থাকে সে নিয়ম ভাঙ্গার সাধ্য কার!
এ যেন নিজেকেই নিজের পথ তৈরি করে নিজের আলোয় নিজেকে জ্বলতে
আমৃত্যু প্রচেষ্টা বৈকি!
বাস্তবতার নির্মমতায় ‘ছানা’ এখন তাই ছানা সাহেব! নিজেকে আরও সমদ্ধৃ ও শানিত করতে দেশের শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযক্তিু বিশ্ববিদ্যালয় হতে রসায়নশাস্ত্রে এমফিল ও পিএইচডি অ্যাওয়ার্ডটাও যুক্ত
হয়েছে তার রণাঙ্গনের সারথি হয়ে। লক্ষ্য একজন হৃদগ্রাহী সনিপু ণ ময়রার ু সাহচর্য এবং জাতির প্রয়োজনে ছানা সাহেব হতে ছানা বাহাদরে অন ু রণন। ু যে দোকানে ছানার বর্তমান অব¯’ান, সেটি মোটেও পরিপাটি ও পরি”ছন্ন
নয়; মাঝেমধ্যেই দুর্গন্ধ ছড়ায়, বাসি ও ভেজাল খাবার, ডানা ভাঙ্গা মাছির
উৎপাত আর বিভিন্ন অনিয়ম ও দর্নীতিতে আ”ছন্ন সবার থেকে তাই নিজেকে ু পরিশুদ্ধ রাখতে চলছে সে স্বতন্ত্র পথে। নীতি ও নৈতিকতার মোহে আবিষ্ট
হয়ে- অসীম ত্যাগ, দঢ়তা, ধৈর্য ও সংকল্পকে অ ৃ াকড়ে ধরে সর্বপ্রকার কাম- ঁ μোধ-লোভ-মোহ-মদ-মাৎসর্যকে প্রশ্রয় না দিয়ে স্রোতের বিপরীতে একান্ত
সন্তর্পনে অনাদিকাল।
পরিবেশের সাথে বেমানান এই ‘ছানা’ নিয়ে দোকানদারও অনেকটাই
অনাসক্ত ও চিন্তিত; এর চেয়ে বরং দগ্ধই ভালো- চা, কফি থেকে শুরু করে ু সকলের সাথে মেশানো যেত, লাভও মন্দ হতো না! তবে খদ্দের হিসেবে
সেবা গ্রহীতারা বেজায় খশি এমন ছানার সান্নিধ্য পেয়ে। অনেকে আবার ু সহৃদয়তার আফসোস ফেলে বলেন- এ দোকানের চেয়ে বরং অন্য কোন
মিস্টান্ন ভান্ডারই আপনার জন্য মানানসই। উপজেলা, জেলা ও জাতীয়
পর্যায়ের অনেক সেবা গ্রহীতার মখেও এমন কথা শুনেছে সে বহুবার। ু অনেকের মন্তব্যের সাথে একট দ্বিমত তার চিরকালের; কারণ হরপ্রসাদ ু শাস্ত্রীর ‘তৈল’ এবং জাতীয় কবি নজরুল ইসলামের ‘সাহেব ও মোসাহেব’
কবিতাটির যথাযথ ব্যবহারের অপরিপক্কতা রয়েছে এই ‘ছানার’।
বাস্তবিক-ই ছানা তো ছানাই! ময়রার সান্নিধ্য না মেললে এর মল্য কোথায়! ূ এ দেশের পরতে পরতে প্র”ছন্নভাবে লকিয়ে রয়েছে নাম না জানা অজস্র ু ছানা, যারা ময়রার যথাযথ প্রμিয়াজাতের অভাবে প্রস্ফটিত হতে পারছে না ু সস্বাদ ু ও ম ু ল্যবান মিঠাই রূপে। ‘ময়রা যেমন মিঠাই তেমন’- এ যেন ূ আবহমানকালের চিরসত্য কথন। জাতীয় উন্নয়নে সৎ ও যোগ্য ময়রার
প্রয়োজনীয়তা তাই অনস্বীকার্য। জাতিকে মানসম্মত মিঠাই উপহার দিতে
সনিপু ণ ময়রার বিষয়টি স ু নিশ্চিত করতে হবে সর্বাগ্রে। সময়ের প্রয়োজনে এ ু বোধদোয় জাতির বিবেককে কিভাবে আলোড়িত করবে সেদিকেই অধীরচিত্তে
অপেক্ষায় থাকবে উনপাজঁ রে এই জনগোষ্ঠী

Categories: জাতীয়
Main Admin:
X

Headline

You can control the ways in which we improve and personalize your experience. Please choose whether you wish to allow the following:

Privacy Settings