X

মানিকগঞ্জে সরিষা ও মধুতে লাভবান চাষিরা

মানিকগঞ্জের মাঠজুড়ে এখন সরিষা ফুলের হলুদ সমারোহ। সরিষা ফুলে ঘুরে ঘুরে মধু সংগ্রহ করছে মৌমাছির ঝাঁক। সংগৃহীত মধু নিয়ে জমা করছে পাশে স্থাপিত মৌ-বাক্সে। এতে সরিষা ফুলের পরাগায়নে সহায়তা হচ্ছে। ফলে একদিকে যেমন সরিষার উৎপাদন বাড়ছে; তেমনই বাড়ছে মধুর উৎপাদন। সরিষা ও মধুর সমন্বিত চাষে লাভবান হচ্ছেন কৃষক ও মৌ-চাষিরা।

সরিষা ফুল থেকে মৌমাছির মাধ্যমে মধু সংগ্রহ করায় যেমন আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন মধু সংগ্রহকারীরা; তেমনই বাড়ছে সরিষার উৎপাদনও। ৩-৪ দিন পরপর আগুনের ধোঁয়া দিয়ে এসব বাক্স থেকে মৌমাছি সরিয়ে দেওয়া হয়। প্রতিটি বাক্সের ভেতরে ৭-৮টি ফ্রেমে মৌচাক থাকে। এই মৌচাক একটি স্টিলের ড্রামের ভেতরে নিয়ে ঘূর্ণায়মান যন্ত্রের মাধ্যমে মধু বের করা হয়। এসব মধু সংগ্রহ করে প্লাস্টিকের ড্রাম ভর্তি করে বাজারজাত করা হয়।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, মানিকগঞ্জের সাতটি উপজেলায়ই সরিষা চাষ হয়। এ বছর জেলায় ৬৩ হাজার ২ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ করা হয়েছে। জেলার সাতটি উপজেলায় এ বছর ১২০ জন মৌ-চাষি প্রায় ১২ হাজার মৌ-বাক্স বসিয়েছেন। এসব মৌ-বাক্স থেকে ১ লাখ ৮০ হাজার কেজি মধু সংগ্রহ করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রতি কেজি মধু ২৫০-৩০০ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে।

দেড় মাস আগে সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ থেকে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার দিঘী গ্রামে আসেন মৌ-চাষি (মধু সংগ্রাহক) সেলিম রেজা। তিনি সরিষা ক্ষেতের একপাশে ১০০টি মৌ-বাক্স বসিয়েছেন মধু সংগ্রহের জন্য। এরই মধ্যে মধু সংগ্রহ করে বাজারজাত করেছেন। ভালো মূল্যও পেয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘২০০৮ সাল থেকে মানিকগঞ্জে মৌ-চাষ ও মধু সংগ্রহ করছি। গত বছর চার মাসে প্রায় ৬০ মণ মধু সংগ্রহ করেছি। প্রতি কেজি মধু ৩০০ টাকা দরে বিক্রি করেছি। এসব মধু ডাবর, এপি ও এসিআই কোম্পানির কাছে বিক্রি করেছি। প্রতি সপ্তাহে প্রতিটি মৌ-বাক্স থেকে দেড় থেকে ২ কেজি করে মধু পাওয়া যায়। মধুর স্বাদ ও মান অনেক ভালো।’

মধু কিনতে আসা মোসলেম উদ্দিন বলেন, ‘প্রতি বছর এভাবে মাঠ থেকেই ৭-৮ কেজি মধু কিনি। সময় ও প্রকারভেদে কেজি ৩০০-৪০০ টাকা নিয়ে থাকে। এই মধুর মান ভালো। সারাবছর ঘরে সংরক্ষণ করে নিজে খাই ও আত্মীয়দের দিই।’

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. রবীআহ নূর আহমেদ বলেন, ‘মৌ-চাষের কারণে পরাগায়নের মাধ্যমে ফসলের উৎপাদন ২৫-৩০ শতাংশ বাড়ে। পাশাপাশি বিপুল পরিমাণ মধু পাওয়া যায়। এসব মধুর বাজারজাত সহজ করতে এবং ন্যায্যমূল্য পেতে পাইকারি ব্যবসায়ী বা কোম্পানিগুলোর সঙ্গে মৌ-চাষিদের যোগসূত্র তৈরিতে কাজ করে যাচ্ছি।’

Main Admin:
X

Headline

You can control the ways in which we improve and personalize your experience. Please choose whether you wish to allow the following:

Privacy Settings