আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক, নড়াইল-২ আসনের সংসদ সদস্য ও হুইপ মাশরাফী বিন মোর্ত্তজাকে ভালবেসে যে বিএনপি নেতা যোগ দিয়েছিলেন আওয়ামী লীগে আজ তিনি বিদায় নিলেন দুনিয়া থেকে। বলছি গাজী ইমানের কথা।
গাজী ইমান লোহাগড়া উপজেলার কোটাকোল ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্যের দায়িত্ব পালনকালে শুক্রবার রাত সাড়ে ৮ টার দিকে বার্ধক্যজনিত কারণে মৃত্যু বরণ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬৫ বছর। গত বছরের ১৩ ডিসেম্বর মাশরাফীর ভালোবাসায় উদ্বুদ্ধ হয়ে কট্টর পন্থি বিএনপি নেতা আওয়ামী লীগে যোগদান করেন।
শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) দিনভর নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে জনগণের খবরা-খবর নিতে ক্লান্তিহীন ছুটেছেন হুইপ মাশরাফী। রাত সাড়ে ১০ টায় খবর এলো কোটাকোল ইউনিয়নের সদস্য (মেম্বার) গাজী ইমান মারা গেছেন। নড়াইল থেকে রওনা করলেন গাজী ইমানের বাড়ির উদ্দেশ্যে।
বাড়িতে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। মাশরাফীকে পেয়ে শোক যেন দ্বিগুণ হলো। কেঁদে হুইপকে বলছেন, বাবা (মাশরাফী) অসুস্থ শরীর নিয়েও ভোট কেন্দ্রে ভোট দিতে গিয়েছে, তুমি জিতেছ কিন্তু তোমার কাকা তো চলে গেল!
হুইপ মাশরাফী বাড়িতে বেশ খানিকটা সময় রইলেন, পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানালেন এবং মৃত ইমান গাজীর পরিবারের সকল সুযোগ সুবিধা ও দেখাশোনার আশ্বাস দেন।
ইমান গাজীর বড় ছেলে গাজী হাফিজুর বলেন, আব্বা বিএনপি করতেন, পরে মাশরাফী ভাইয়ের ভালোবাসায় তিনি নির্বাচনের আগে বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে যোগদান করেন। তখন বলেছিলেন যতদিন বাঁচবেন মাশরাফী ভাইয়ের পেছনে থেকেই রাজনীতি করবেন। নির্বাচনের আগে থেকেই তিনি অসুস্থ, অসুস্থ শরীর নিয়ে ও ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিয়েছেন মাশরাফী ভাইকে। মাশরাফি ভাই ইটের সোলিংয়ের রাস্তা করে দিয়েছেন, মসজিদে ঢোকার রাস্তাটা ও প্রক্রিয়াধীন। আব্বা সবসময় বলতেন সারাজীবন বিএনপি করে কি পাইছি, কিন্তু মাশরাফীর সাথে এসে যে সম্মান ও মানুষের ভালোবাসা পাইছি তাতে আর কোন আক্ষেপ নাই!
এ সময়ে তিনি আরও বলেন, মাশরাফী ভাই নিজে ফোন করে আব্বার খোঁজখবর নিতেন। মারা গেছেন আজ, এই রাতে লাশ গোসল করানোর আগেই আমাদের বাড়িতে মাশরাফী ভাই হাজির। সত্যি বলতে আমরা কখনো ভাবিনি মাশরাফী ভাইয়ের মত এত ব্যস্ত মানুষ আব্বার খবরে ছুটে আসবেন! যে নেতা তার একজন সামান্য কর্মীকে ও এতটা সম্মান করেন, এমন নেতার জন্য নিজের জীবনটা দিতে ও আক্ষেপ থাকে না।