X

যাত্রা শুরু করলো প্রবীণদের নিরাপদ আবাসন জাপান বাংলাদেশ রিটায়ারমেন্ট হোমস

দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর যাত্রা শুরু করলো প্রবীণদের নিরাপদ আবাসন, চিকিৎসা ও বিনোদন নিয়ে পূর্ণাঙ্গ একটি প্রতিষ্ঠান জাপান বাংলাদেশ রিটায়ারমেন্ট হোমস এন্ড হসপিটাল। ঢাকার পূর্বাচলের পাশে রুপগঞ্জে বাংলাদেশ ও জাপানের যৌথ উদ্দ্যগে সম্পূর্ণ আন্তর্জাতিক মানের একটি রিটায়ামেন্ট হোমস এন্ড হসপিটাল এটি।

শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) অধ্যাপক ডা. সরদার নাঈম এর মাতা রাজিয়া কাদের ও শশুর অধ্যাপক আশা ইসলাম নাঈমের বাবা অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম এবং প্রতিষ্ঠানটির অন্যান্য পরিচালকদের পিতা-মাতা উদ্ভোধন করেন প্রবীণদের জন্য বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ও অত্যাধুনিক এ প্রতিষ্ঠানটির। এসময় উপস্থিত ছিলেন দেশের গণ্যমান্য ব্যক্তিরা, জাপান থেকে আগত অতিথিরা ও জাপান বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশীপ রিটারমেন্ট হোমস এন্ড হসপিটাল।

প্রতিষ্ঠানটির উদ্যোক্তা অধ্যাপক ডা. সরদার এ. নাঈম বলেন, জাপান বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ রিটায়ারমেন্ট হোম আসলে আমাদের ড্রিম প্রজেক্ট। আমরা যখন জাপানে পড়ালেখা করি তখন আমরা দেখেছি জাপান তাদের বয়োজ্যেষ্ঠদের জন্য ব্যতিক্রম চিন্তা ভাবনা করে। যার কারণে জেরিয়াট্রিক কেয়ার (geriatric care) বা বয়োজ্যেষ্ঠদের সেবার জাপান পৃথিবীতে অনেক এগিয়ে গিয়েছে। আমাদের দেশে এখনো কোন জেরিয়াট্রেশিয়ান নেই। জেরিয়াট্রিক মেডিসিন বা জেরিয়াট্রিক কেয়ার আমরা ডেভেলপ করার চেষ্টা করছি। আমরা জাপানে দেখেছি কতো সুন্দরভাবে তারা বয়োজ্যেষ্ঠদের যাদের দৈনন্দিন জীবনে প্রতিদিনই স্বাস্থ্যসেবার প্রয়োজন হয় তাদের যত্ম নেয়ার জন্য আলাদাভাবে ডেডিকেটেড সুবিধার প্রয়োজন হয়। এরই ধারাবাহিকতায় আজ যাত্রা শুরু করলো জাপান বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ রিটায়ারমেন্ট হোম।

তিনি বলেন, এটি বয়োজ্যেষ্ঠদের জন্য এমন একটি প্রজেক্ট যেখানে তাদের বসবাসের উপযোগী একটি যায়গা থাকবে, যেখানে বিরতিহীন স্বাথ্যসেবা থাকবে এবং ফুড, ফিজিওথেরাপি, স্যুইমিং এর ব্যবস্থা থাকবে। বয়োজ্যেষ্ঠরা এখানে নিজের বয়সের মানুষদের মাঝে ভালো সময় কাটাতে পারবেন।

বাংলাদেশে বাড়ছে প্রবীণ জনগোষ্ঠী, গবেষণা বলছে ২০৪০-৫০ সালে বাংলাদেশের জনসংখ্যায় ২০ থেকে ২৫ শতাংশ প্রবীণ জনগোষ্ঠী থাকবে। বর্তমানে বাংলাদেশে প্রবীণের সংখ্যা প্রায় দুই কোটি। এই বিশাল সংখ্যক প্রবীণ জনগোষ্ঠীর জন্য বাংলাদেশে সেবাভিত্তিক তেমন কোনো প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেনি। উল্টোদিকে বর্তমানে সারাবিশ্বে জাপানে অতি প্রবীণের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। জাপান প্রবীণদের জন্য নানা ধরনের আধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্বলিত নানা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছে এবং পুরো বিশ্বে রোল মডেল স্থাপন করেছে। বাংলাদেশে এই প্রথম জাপানের সর্বাধুনিক ওল্ড কেয়ার হোমের আদলে গড়ে তোলা হয়েছে জাপান বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশীপ রিটায়ারমেন্ট হোমস এন্ড হসপিটাল।

প্রতিষ্ঠানটিতে রয়েছে প্রবীণবান্ধব ২৩২ টি স্টুডিও এপার্টমেন্ট, বিছানা কেন্দ্রিক অসুস্থ প্রবীণ বা হুইল চেয়ার কেন্দ্রিক প্রবীণদের জন্য ১৫০ শয্যার কেয়ার সেন্টার, মৃত্যুপথযাত্রী প্রবীণদের জন্য ৮০ শয্যার পেলিয়েটিভ কেয়ার, টার্মিনাল কেয়ার ও হসপিস কেয়ারের ব্যবস্থা, রয়েছে সকল সুবিধা সম্বলিত বিশ্ব মানের প্রবীণ হাসপাতাল, ফিজিওথেরাপি সেন্টার, ডে-কেয়ার সেন্টার, মানসিক ও আত্নিক সুস্থতা নিশ্চিত করবার জন্য প্রার্থনা, যোগব্যয়াম, ধ্যান ইত্যাদি সুবিধাসহ স্পিরিচুয়াল ওয়েলনেস সেন্টার। এছাড়াও রয়েছে সুইমিং পুল, জ্যাকুজি, স্টিম বাথের ব্যবস্থা। প্রবীণদের বিনোদনের জন্য রয়েছে লাইব্রেরি, মুভি থিয়েটার, রিভার ক্রুজ ও নানাধরনের ইনডোর গেমসের ব্যবস্থা।

এককথায় বলতে গেলে সব বয়েসি প্রবীণ ব্যক্তির চাহিদা মাথায় রেখে অত্যাধুনিক এ প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তোলা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান দেশের স্বনামধন্য ল্যাপরোস্কোপিক সার্জন অধ্যাপক ডাঃ সরদার নাঈম।

তিনি বলেন, তিনি আজ থেকে ৩২ বছর আগে পড়াশোনা শেষ করে জাপান থেকে দেশে ফিরে তিনি তৈরি করেন জাপান বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশীপ হাসপাতাল। তখন থেকেই প্রবীণদের নিয়ে দেশে একটা কিছু করার পরিকল্পনা ছিলো, আজ সে পরিকল্পনা বাস্তবে রুপ নিলো, তিনি আশা করেন প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশের প্রবীণদের জীবনমান উন্নয়নে ও স্বাস্থ্যসেবায় উল্লেখযোগ্য ভুমিকা রাখবে।

শুক্রবার (২০ডিসেম্বর) দিনব্যাপি পিঠা উৎসব ও অনুষ্ঠানের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত এ অনুষ্ঠানে একইসাথে ডাঃ নাঈম মোড়ক উম্মোচন করেন প্রবীণের স্বাস্থ্যকথা নামের ম্যাগাজিনের প্রথম সংখ্যা, প্রতি তিনমাস পরপর ম্যাগাজিনটি প্রবীণদের জন্য প্রকাশিত হবে বলে তিনি জানান।

Main Admin:
X

Headline

You can control the ways in which we improve and personalize your experience. Please choose whether you wish to allow the following:

Privacy Settings